শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায়
অতিরিক্ত কাজ করার ফলে সামান্য একটু বিশ্রাম নিলেই শরীরে ক্লান্তি চলে আসে। আমরা চোখে-মুখে-ঘাড়ে পানি দিই বা হাঁটা চলা করে ক্লান্তি ভাবটি দূর করতে চাই। কিন্তু শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায় তা হলো-
বিভিন্ন অনিয়ম, পরিশ্রম, দীর্ঘক্ষণ ধরে একই ধরনের কাজ, দুর্বলতা, অনিদ্রা, মানসিক চাপ বা অশান্তি ইত্যাদি নানা কারণে শরীরে ক্লান্তি এসেই যায়। সুতরাং শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায় সে বিষয়ে বেশকিছু টিপস বর্ণিত হয়েছে, যা পড়া দরকার।
পোস্ট সূচিপত্র: শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায়
দ্রুত দুর্বলতা কাটাতে সুষম, আয়রণ ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ
ঔষুধের প্রভাব/প্রতিক্রিয়া
সঠিক সময় খাদ্য গ্রহণ
শরীর চর্চার অভ্যাস করা
শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায়-শেষ কথা
দ্রুত দুর্বলতা কাটাতে সুষম, আয়রণ ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ
পুষ্টিবিদরা বলছেন, হঠাৎ দুর্বলতা ও ক্লান্তিবোধ অনুভব হলে রোগীকে এমন খাবার বেছে নিতে হবে যা পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং শরীর দ্রুত শোষণ করতে পারে। শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায়, তা হলো-
দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার: গবেষকরা বলছেন, দুধ হলো হাই প্রোটিনযুক্ত একটি খাবার। এতে খাদ্যের ছয়টি উপাদানই বিদ্যমান রয়েছে। তাই হঠাৎ দুর্বলতা ও ক্লান্তিবোধ অনুভব করলে প্রথমেই কুসুম গরম এক গ্লাস গরম দুধ খেয়ে ফেলুন।
আরও পড়ুন: সারা বছর কোন কোন ফুল ফোটে - বারোমাসি ফুলের নামের তালিকা - কিভাবে টবে ফুল গাছ লাগানো যায়
দুধ হজম না হলে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় লো ফ্যাট ডেইরি ফুড অর্থাৎ কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করুন। দুগ্ধজাত খাবারে রয়েছে উচ্চ গুণাগুণ সম্পন্ন প্রোটিন, কার্ব, এসেনসিয়াল প্রোটিন, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি। যা গ্রহণে শরীর ভেতর থেকে সুস্থ হয়।
ডিম: ডিম শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি প্রোটিনের ভালো উৎস। শুধু তা-ই নয়, দেহ এই প্রোটিন অত্যন্ত সহজে গ্রহণ করে নেয়। তবে অনেকেই ডিমের সাদা অংশ খেয়ে কুসুম ফেলে দেন। এটা ঠিক না। কারণ কুসুমে রয়েছে লিউটিন, যা চোখের জন্য ভালো।
তাই কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস না থাকলে অনায়াসে ডিমের কুসুম খেতে পারেন। দ্রুত দুর্বলতা ও ক্লান্তিবোধ কাটাতে দুধ খাওয়ার ৫ ঘন্টা পর সামান্য লবণ দিয়ে একটি সিদ্ধ ডিম খেয়ে পেলুন। নিমিষেই ভালোবোধ করবেন।
কলা, বাদাম ও আযরন সমৃদ্ধ খাবার: ডোপামিন ও সেরোটোনিন সমৃদ্ধ কলা পুষ্টিগুণে ভরপুর। স্নায়ুর কার্যকারিতা বাড়ানোর পাশাপাশি চাপ ও দুর্বলতা দ্রুত কমাতে পারে এটি। কলার পাশাপাশি বাদামও শরীরে দ্রুত পুষ্টি জোগাতে পারে। তাই নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
শরীরের ক্লান্তি ভাব কাটাতে সুষম খাবারে রাখতে পারেন আয়রণ সমৃদ্ধ খাবার। সবুজ শাকসবজি, মটর, ডাল, টফু, শুকনো ফল ও ডার্ক চকলেটে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। সকাল, দুপুর ও রাতের ডায়েটে সুষম খাবারের সাথে কলা ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার প্রাধান্য দিন।
ঔষুধের প্রভাব/প্রতিক্রিয়া:
বিভিন্ন ঔষুধের প্রতিক্রিয়ার ফলে শরীরে ক্লান্তি ভাব আসে। অনেক ওষুধ আছে, যেগুলা সেবন করলে সাময়িকভাবে ক্লান্তি আসে। যেমন-স্নায়ুরোগ ব্যবহৃত কিছু রোগ, ডাইউরেটিক, অ্যান্টি হিস্টাসিন জাতীয় ওষুধসমূহ ইত্যাদি।
সঠিক সময় খাদ্য গ্রহণ:
অবশ্যই শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায় বা এড়াতে চাইলে নিয়মিত বা সময়ানুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। অনেক সময় খাদ্য গ্রহণের দীর্ঘ বিরতিতে শরীরে ক্লান্তি বা বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে একবারে বেশী খাবার না খেয়ে ৩-৪ ঘন্টা পর পর খাদ্য গ্রহণই হবে যুক্তিযুক্ত।
শরীরচর্চার অভ্যাস করা:
নিয়মিত শরীরচর্চায় দীর্ঘমেয়াদী উপকার ঘটে থাকে। যেমন-রক্ত সঞ্চালন এবং পেশী শক্তি বৃদ্ধি পায়, হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করে, ওজন নিয়ন্ত্রণ ঘটে, হ্রাস উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা দূর হয় ইত্যাদি।
শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায়-শেষ কথা:
আমাদের আর্টিকেলে শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায় সে সম্পর্কে আপনার যাবতীয় প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকলে সেটি আপনি অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে লিখে জানিয়ে দেন, আমরা সবসময় পাঠকের মূল্যবান মন্তব্য গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে থাকি। আশা করি উপরোক্ত আলোচনাগুলি আপনার ক্লান্তি ভাব দূর করতে সহায়ক হবে। বিজ্ঞান বলে ৩০ বছরের পর ব্রোন ডেনসিটি নাকি কমে যায়। তাই বয়সের কারণেও মানুষের ক্লান্তিভাব আসতেই পারে। যেমন-বয়সের একটা পর্যায়ে গিয়ে খুব জোরে হাটা বা দীর্ঘক্ষণ ধরে কোন কাজ করতে গেলে শরীর হাাঁপিয়ে ওঠে অথবা এনার্জি থাকেনা বা ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে। এক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিগুলো শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায় বা কিভাবে ক্লান্তি এড়াতে পারেন। যাইহোক, আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে বা পরামর্শ হিসেবে কাজে লাগবে।
আরও পড়ুন: জাঙ্ক ফুড কি - জাঙ্ক ফুডের ক্ষতিকর দিকসমূহ
পরিশেষে আর্টিকেলগুলোর মান উন্নয়নে আপনার যাবতীয় মন্তব্য, তথ্য এবং পরামর্শ আমাদেরকে অবশ্যই দিতে পারেন, এবং সেইসাথে শরীরের ক্লান্তি ভাব যেভাবে এড়ানো যায় বিষয়ক আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই তা অন্যদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। সবশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url