কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি

সময়টা গ্রীষ্মকাল, আর বাজারে তো কাঁচা আম সরবরাহও যথেষ্ট। এই কাঁচা আম দিয়ে কি কি করা যায়-আজকে আমরা কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি বিষয় থেকে তা জেনে নিবো।

কাঁচা আম দিয়ে কিন্তু তৈরী করা যায় নানা পদের ব্যঞ্জন। আবার গরমের সময় কাঁচা আম খাওয়া কিন্তু শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। সুতরাং বিভিন্ন বিষয়ে জানার জন্য কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি আর্টিকেলটি আমাদের পড়তে হবে।

পোষ্ট সূচিপত্র: কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি (Various recipes for Raw Mango)
ভূমিকা
আম দিয়ে ডাল/আমের ডাল
আমের টক/কাঁচা আমের টক
কাঁচা আমের জুস
কাঁচা আমের সালাদ
কাঁচা আম থেতলে
কাঁচা আমের ভর্তা
আমের আচার
আমের আমচুর
আম ও মুরগীর মাংসের ঝোল/আম দিয়ে মাছের ঝোল
কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি-শেষ কথা

ভূমিকা:

সত্যি বলতে কি আম ভালোবাসেনা এমন ধরণের ব্যক্তি খুব কমই আছে। তবে অনেকেই পাকা আম খেতে পছন্দ করে, আবার অনেকেই আছেন যারা কাঁচা আম বিভিন্ন প্রক্রিয়া করে খেতে ভালবাসেন। আজকে কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি বিষয়ক আর্টিকেল থেকে আমরা কাঁচা আম দিয়ে তৈরী করা যায় এমন কিছু বিষয়ের ব্যাপারে জানবো।

আম দিয়ে ডাল/আমের ডাল:

কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি বিষয়ে বলা যায়, আমরা সবাই কম-বেশী ভাতের সাথে বিভিন্ন ধরণের ডাল খেয়ে থাকি। যেমন-মুগের ডাল, বুটের ডাল, মাসকালাইয়ের ডাল বা মুসুরির ডাল ইত্যাদি। কিন্তু এই ডালগুলোর মধ্যে মুসুরির ডালের সাথে কাঁচা আম খাওয়ার মজাটাই আলাদা। অর্থাৎ ডাল রাঁধতে যা যা প্রয়োজন, যেমন-হলুদের গুড়া, পরিমাণ মতো লবণ, দানা সরিষা, তেজপাতা, মরিচ, তেল ইত্যাদির সাথে কাঁচা আম এবং পরিমাণ মতো মুসুরির ডাল। পাতলা বা গাঢ়ো যেভাবে খুশি খেতে পারেন, তবে পাতলা ডাল সবাই পছন্দ করে।

আমের টক/কাঁচা আমের টক:

কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি বলতে আমের টক। অর্থাৎ গরমের দিনে বা আমের সময় বেশীর ভাগ লোকই বেশ তৃপ্তি করে আমের টক খেয়ে থাকেন। আমাদের দাদু-দিদারা বলতেন, টক খেতে, কারণ টক খেলে নাকি রোদ লাগবে না।

আরও পড়ুন: পেয়ারা পাতার কি কোন গুণাবলী আছে? জেনে নিন

যাইহোক, কড়াইয়ে পরিমাণ মতো তেল, কালো সরিষা দানা, তেজপাতা দিয়ে ফোড়ন করতে হবে, অর্থাৎ সবগুলো কড়াইয়ে ছেঁচকি দিয়ে নাড়িয়ে নাড়িয়ে ভাজতে হবে। এরপর কড়াইয়ে কাঁটা আমগুলো কড়াইয়ে ঢেলে দিন। নাড়তে নাড়তে এক চিমটি লবণ দিন। কিছুক্ষণ পর গরম পানি ঢেলে দিন এবং ভালো করে ফুটিয়ে নিন। আম সিদ্ধ হয়ে গেলে তাতে পরিমাণ মতো চিনি মেশাতে পারেন, আবার লবণও মেশাতে পারেন।

কাঁচা আমের জুস:

কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি এর মধ্যে গরমের দিনে কাঁচা আমের জুস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমের চোকা ছিলিয়ে নিয়ে ছোট ছোট আকারে কেটে তা বেল্ডার মেশিনে দিয়ে জুস করে খেতে পারেন। এর সাথে পরিমাণ মতো লবণ/বিট লবণ, গোল মরিচের গুড়া ইত্যাদি মিশাতে পারলে স্বাদ আরও ভালো হয়।

কাঁচা আমের সালাদ:

কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি এর মধ্যে সালাদ তৈরী। সাধারণত আমরা বিভিন্ন সবজির সালাদ খাবারের সাথে খেয়ে থাকি। কিন্তু কাঁচা আমের সালাদ একটু ব্যতিক্রমই বটে। তবে বর্তমানে অনেক ফাস্টফুড হোটেলগুলোতে গেলে পাবেন কাঁচা আমের সালাদ। যারা গাজরের সালাদ, শশার সালাদ ইত্যাদি তৈরী করতে পারেন তারা অনায়াসেই আমেরও সালাদ তৈরী করতে পারেবন। যেমন-আম ছিলে তা ঝিরি ঝিরি করে কেটে নিতে পারেন।

কাঁচা আম থেতলে:

গাছ থেকে কাঁচা আম পেরে তা চোকা ছিলে/না ছিলে থেতলে এর সাতে সরিষা বাটা, পরিমাণ মতো লবন, মরিচ দিয়ে খেতে পারেন। এখনও গ্রাম বাংলার শিশু-নারীরা এই পদ্ধতিতে কাঁচা আম খেয়ে থাকেন।

কাঁচা আমের ভর্তা:

ভাত রান্না করার সময় ১/২ টি আম আপনি ভাতের পাত্রের মধ্যে দিয়ে সিদ্ধ করে তার সাথে পরিমাণমতো মরিচ, লবণ, সরিষার তেল দিয়ে সিদ্ধ সানার মতো আমের ভর্তা করেও তা খেতে পারেন।

আমের আচার:

কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি এর মধ্যে অত্যন্ত পরিচিত একটি বিষয় হলো আচার তৈরী। আমের সময় অনেকেই বিশেষ করে পরিবারের নারী সদস্যরা এই কাজটি করে থাকেন। তারা কাঁচা আম কেটে তাতে হলুদ-লবন লাগিয়ে রৌদে দীর্ঘদিন দেন এবং সময় হলে তার সাথে মেথি, সরিষার তেল ইত্যাদি মিশিয়ে খুব অনায়াসেই আচার তৈরী করে ফেলেন।

আমের আমচুর:

আরেকটি কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি হিসেবে আমচুর তৈরী। অর্থাৎ কাঁচা আম একটি নির্দিষ্ট সাইজে কেটে তাতে হলুদ ও লবন মিশিয়ে কোন পাত্রে বা ঝাকায় করে রৌদ্রে শুকাতে দেন। এভাবে দীর্ঘদিন রাখার পর আমগুলি শুকিয়ে গেলে তা বয়ামে রেখে দেন, পরবর্তীতে তা ডালের মধ্যে দিয়ে সারা বছর খেতে থাকেন।

আম ও মুরগীর মাংসের ঝোল/আম দিয়ে মাছের ঝোল:

কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি এর মধ্যে আবার মুরগীর মাংসের সাথে কাঁচা আম দিয়ে ঝোল তৈরী করতে পারেন। এক্ষেত্রে মুরগির মাংস, পেঁয়াজ বাটা, রসুন বাটা, আদা বাটা, তেল, লবণ,সাদা জিরা, তেজপাতা,হলুদগুড়া, জিরা গুড়া, কাঁচা মরিচ, ধনে পাতা ইত্যাদি মিক্সড করে অনায়াসেই তৈরী করতে পারেন কাঁচা আম ও মুরগী মাংসের ঝোল। রান্নার রেসিপি জানতে প্রয়োজনে আপনি ইউটিউব সার্চ দিয়ে দেখে নিতে পারেন।

আরও পড়ুন: গরমকালে কোন কোন খাবার খেতে হবে- কোনগুলো খাওয়া যাবে না

কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি এর মধ্যে আম দিয়ে মাছের ঝোল অর্থাৎ কাঁচা আম ও কাতলা মাছ দিয়ে ঝোল তৈরী করতে পারেন। এক্ষেত্রে কাঁচা আম, কাঁচা মরিচ,কালোজিরা, হলুদ, সরষে বাটা, লবণ ও চিনি পরিমাণ মতো এবং সরিষার তেল।

কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি-শেষ কথা:

প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বর্তমানে আমরা অনেক কিছুই খুব সহজে পেয়ে যাচ্ছি। যেমন ধরুন, রাত বারোটার দিকে আপনার ইচ্ছে হয়েছে কালাইয়ের রুটি খাবেন। ব্যস, অর্ডার দিয়ে দিন এবং কিছুক্ষণের মধ্যে খাবার সরবরাহকারী ব্যক্তি আপনার দরজা নাড়ছে। যাইহোক, আজকে আমরা কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি সম্পর্কে আপনাদের জানাতে চেষ্টা করেছি, আসলে কাঁচা আম দিয়ে আপনারা আরও অনেক পদ বা রেসিপি তৈরী করতো পারেন, যা এই কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি বিষয়ক আটিকেলে হয়ত উল্লেখ করা হয়নি।

আরও পড়ুন: গরমকালে শিশুদের জন্য যে বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত

পরিশেষে আজকের কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি বর্ণনায় যদি কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকে, তাহলে আমাদের কমেন্টস বক্সে তা জানাতে পারেন। আসলে আপনারদের মূল্যবান মন্তব্য ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেলে আর্টিকেলের মান আরও উন্নত করার প্রয়াস ঘটবে। সবশেষে এতোক্ষণ কাঁচা আমের বিভিন্ন রেসিপি বিষয়ক কনটেন্টে যুক্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url