গরমকালে কি খাওয়া যাবে - কি খাওয়া যাবেনা
তীব্র তাপদাহে শরীরকে সুস্থ্য রাখা একটি চ্যালেঞ্জই বটে। কথায় বলে খাদ্যের গুণে শরীর চলে, তাই শরীরকে সুস্থ্য রাখার জন্য গরমকালে কি খাওয়া যাবে - কি খাওয়া যাবেনা, তা জানাটা আবশ্যক।
আসলে গরমের সময়ে খাদ্য খাবারের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়াটা অত্যন্ত জরুরী। আজকে আমরা শরীরকে সুস্থ্য রাখার জন্য গরমকালে কি খাওয়া যাবে - কি খাওয়া যাবেনা এমন বিষয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি, চলুন শুরু করা যাক:
পোস্ট সূচিপত্র: গরমকালে কি খাওয়া যাবে - কি খাওয়া যাবেনা (What to eat and what not to eat in summer)
ভূমিকা
নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পানি পান করুন
ফলমূল জাতীয় খাদ্য
গরমে খেতে পারেন আখের রস
বাজারে প্রচলিত শাক-সবজি
গরমে টক দই খেতে পারেন
গরমের সময় যে সমস্ত খাবার খাবেন না
গরমকালে কি খাওয়া যাবে - কি খাওয়া যাবেনা-শেষ কথা
ভূমিকা:
আমাদের কাজের প্রয়োজনে অনেককেই বাইরে যেতে হয়। এক্ষেত্রে গরমের কারণে শরীরের ঘাম বের হয়ে যাওয়ার ফলে ঘন ঘন পানি পিপাসা, ডায়রিয়াসহ নানাবিধ অসুখ-বিসুখ দেখা দিয়ে থাকে। এজন্য গরমের সময় খাদ্য খাবারের প্রতি বিশেষভাবে সচেতনতা থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। একটা বিষয় ভেবে দেখুন, শীতের সময়কালে যে খাদ্য খাবারগুলো খাওয়া হয়ে থাকে, আসলে গরমের সময় একই খাবার কি শরীরের জন্য উপযোগী হতে পারে। যেমন-শীতের সময় আমরা তৈলাক্ত জিনিস, মাংস, পোলাও, বিরিয়ানী ইত্যাদি বেশী করে খেয়ে বা খাই। কিন্তু একই খাবার কি গরমের সময় খাওয়া যাবে বা উচিত কিনা? একটু ভেবে দেখবেন। যাইহোক আজকের আর্টিকেলে শরীরকে সুস্থ্য রাখার জন্য গরমকালে কি খাওয়া যাবে - কি খাওয়া যাবেনা সে বিষয়ে জানার জন্য নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলো পড়তে পারেন।
নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পানি পান করুন:
আমরা জানি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের দৈনিক ৩ থেকে ৩.৫ লিটার পানির প্রয়োজন হয়, ঠিক একই ভাবে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর দরকার হয় ২.৫ থেকে ৩ লিটার পানি। সুতরাং এক্ষেত্রে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে সারাদিনে কতটুকু পানি পান করছেন। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, কিডনীজনিত রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: আইসক্রিম এর উৎপত্তি ব্যবহার - বিভিন্ন নামকরণ
এ ছাড়াও গরমের সময় আপনি যদি লেবু পানি বা শরবত খেতে পারেন, তাহলে তা শরীরের ক্লান্তি দূর করবে অনেকটাই। খেয়াল করবেন, গরমের সময় নানা জাতীয় ফলের আবির্ভাব ঘটে বাজোরে, সেক্ষেত্রে আপনি বেলের শরবত বানিয়ে খেতে পারেন,শরীর ঠান্ডা থাকবে। যদি সম্ভব হয়, তাহলে ডাবের পানিও পান করতে পারেন।ফলমূল জাতীয় খাদ্য:
গরমকালে কি খাওয়া যাবে বলতে বিভিন্ন ফলমূলে শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে থাকে। আর বলাই বাহুল্য, গরমের সময় নানারকম মৌসুমী ফল বাজারে পাওয়া যায়। যেমন-স্ট্রবেরি, শশা, জাম, জামরুল, তরমুজ, কমলা লেবু, মাল্টা, হরিফল, করমচা, বাঙ্গী, পুদিনার শরবত, পাকা পেঁপে, কাঁচা আমের শরবত ইত্যাদি।
গরমে খেতে পারেন আখের রস:
গরমকালে কি খাওয়া যাবে হিসেবে আখের রস কিন্তু শরীরকে ঠান্ডা রাখতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সেক্ষেত্রে আপনি আখের রসের সাথে বিট লবণ, পুদিনাপাতা এবং লেবুর রস মিশিয়ে যদি খেতে পারেন তাহলে এর স্বাদও পরিবর্তন ঘটে এবং শরীরে পুষ্টিগুণের চাহিদাও অনেকাংশে মিটে যায়।
বাজারে প্রচলিত শাক-সবজি:
গরমকালে কি খাওয়া যাবে বলতে আপনি যদি লাউ, চালকুমড়া, সজনেডাটা, ঝিঙ্গা, শাকের ডাটা, কাঁচা পেঁপে, পটল, শশা, গাজর, পালংশাক, টমেটো, ধুন্দল, চিচিঙ্গা ইত্যাদি সবজিগুলো বেশী পরিমাণে খেতে হবে। যেমন-পাতলা করে টক ডাল, সজনে ডাটা দিয়ে ডাল ইত্যাদি। এগুলো আপনার শরীরের জন্য যেমন উপকারী ঠিক তেমনি শরীরকে ঠান্ডা রাখতেও তা কার্যকরী।
গরমে টক দই খেতে পারেন:
গরমকালে কি খাওয়া যাবে বলতে শরীরের পাকস্থলীকে সুস্থ্য রাখতে আপনি প্রতিদিন টকদই খেতে পারেন। সাধারণত টক দই খালিও খেতে পারেন, আবার পানি মিশিয়ে শরবত করেও খেতে পারেন।
গরমের সময় যে সমস্ত খাবার খাবেন না:
সাধারণত গরমকালে কিছু কিছু খাবার পরিহার করাই শ্রেয়, কেননা একদিকে যেমন প্রচণ্ড গরমের তীব্রতার ফলে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উপাদান বের হয়ে যাওয়া, আবার অপরদিকে গরম আবহাওয়াজনিত শুষ্কতা। সুতরাং এই রকম ক্ষেত্রে কি খাওয়া যাবেনা বা কোন খাবারগুলো পরিহার করতে হবে, তা জানতে নিচের লেখাগুলো পড়ুন:
মশলা জাতীয় খাবারসমূহ: প্রচন্ড গরমে কি খাওয়া যাবেনা, তা হলো-ভুনা মাছ, মাংস, বিরিয়ানী, গরুর মাংস এমন ধরণের খাদ্যগুলি পরিহার করাই শ্রেয়।
বিভিন্ন প্রকার আইসক্রীম ও কোমল জাতীয় পানীয়: সাধারণত আমরা মনে করি, আইসক্রীম বা কোমল জাতীয় পানীয়গুলো ঠান্ডা, অর্থাৎ তা খেলে সাময়িক ভালো লাগে বা শরীর ঠান্ডা লাগে। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে, এই জাতীয় উপাদানগুলো কিন্তু পরবর্তীতে আপনার শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে। তাই কি খাওয়া যাবেনা এর তালিকায় আইসক্রীম বা কোমল পানীয় অন্যতম।
মশলা জাতীয় খাবারসমূহ: প্রচন্ড গরমে কি খাওয়া যাবেনা, তা হলো-ভুনা মাছ, মাংস, বিরিয়ানী, গরুর মাংস এমন ধরণের খাদ্যগুলি পরিহার করাই শ্রেয়।
বিভিন্ন প্রকার আইসক্রীম ও কোমল জাতীয় পানীয়: সাধারণত আমরা মনে করি, আইসক্রীম বা কোমল জাতীয় পানীয়গুলো ঠান্ডা, অর্থাৎ তা খেলে সাময়িক ভালো লাগে বা শরীর ঠান্ডা লাগে। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে, এই জাতীয় উপাদানগুলো কিন্তু পরবর্তীতে আপনার শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে। তাই কি খাওয়া যাবেনা এর তালিকায় আইসক্রীম বা কোমল পানীয় অন্যতম।
আরও পড়ুন: অ্যাভোক্যাডো ফলের উপকারিতা ও গুনাগুণ
ফাস্ট ফুড: গরমের সময়ে কি খাওয়া যাবেনা এমন প্রশ্নে বলা যায়, বিভিন্ন ফাস্ট ফুডগুলো থেকে বিরত থাকাই ভালো। কেননা, এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও চর্বি থাকায় তা হজম করতে অনেক সময় লাগে এবং এগুলো রক্তচাপকে আরও প্রবাহিত করে ও প্রদাহ বাড়ায়।চা-কফি: গরমের সময় যতটা সম্ভব চা বা কফি কম পান করবেন। সাধারণত চা বা কফি আমরা কেন খাই, শরীরকে গরম রাখার জন্যে এবং তা শীতকালেই বেশী খেয়ে থাকি। আর জেনে রাখা উচিত, চা বা কফি হতে নির্গত ক্যাফেইন শরীরকে পানিশূন্য করে ফেলে এবং শরীরের তাপামাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই কি খাওয়া যাবেনা এই তালিকায় উক্ত খাবারটি অবশ্যম্ভাবী।
ভাজা পোড়া কম খাওয়া: গরমকালে কি খাওয়া যাবেনা এই তালিকায় সর্বপ্রথম ডুবো তেলে ভাজা নানাপ্রকার মুখরোচক খাদ্য খেতে ভালো লাগলেও তা অতিসত্ত্বর পরিহার করতে হবে। কারণ এই সমস্ত ভাজা পোড়া জাতীয় খাবারে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরী হয়।
গরমকালে কি খাওয়া যাবে - কি খাওয়া যাবেনা-শেষ কথা:
মূলত অতিরিক্ত গরমের কারণে আমাদের শরীর থেকে যে অতিরিক্ত পানি ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়, তার ফলে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। এর ফলে শরীরে শুরু হয় নানাপ্রকার অস্বস্তি, ক্লান্তি, বমি বমি ভাব ইত্যাদি নানা ধরণের সমস্যা। আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারলেন শরীরকে সুস্থ্য রাখার জন্য গরমকালে কি খাওয়া যাবে - কি খাওয়া যাবেনা, আশা করি তা আপনাদের উপকারে আসবে।
আরও পড়ুন: স্ট্রবেরি ফলের পুষ্টিগুণ ও এর উপকারিতা
আসলে আপনারা অনেকেই জানেন, আবহাওয়া বা মৌসুম পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক কিছুর পরিবর্তন সাধিত হয়। তাই শীতকালের পোশাক যেমন গরম কালে পড়া যায়, ঠিক তেমনি শীতকালের খাদ্য-খাবারও গরমের সময় পরিহার করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এজন্য গরমকালে কি খাওয়া যাবে আবার কি খাওয়া যাবেনা ইত্যাদি বিষয়গুলি মনে রাখতে হবে। পরিশেষে এতোক্ষণ আমাদের সাথে গরমকালে কি খাওয়া যাবে - কি খাওয়া যাবেনা বিষয়ক বর্ণনাতে যুক্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url