কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায়

শরীরে আয়রনের অভাব হলে ব্যাহত হয় হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন। কিন্তু কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় বা কি খেলে বা কি করলে তা পূরণ হবে ইত্যাদি বিষয়ে জানতে নিচে বর্ণিত আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
শরীরে আয়রনের ঘাটতিজনিত সমস্যায় আমরা প্রায়ই ভুগে থাকি। সাধারণত আয়রনের ঘাটতি হলে শরীরে রক্তশূন্যতা, দুর্বলতা, মাথাব্যাথা, মাথা ঘোরাসহ নানাবিধ সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। অর্থাৎ কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় তা জানাটা আমাদের জন্য খুবই আবশ্যক।

পোস্ট সূচিপত্র: কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় (How to treat iron deficiency)
আয়রনের ঘাটতি হলে কী সমস্যা হতে পারে
আয়রনের ঘাটতি হলে কী কী খাবেন
আয়রনের ঘাটতিজনিত কারণে যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
আয়রনের ঘাটতিজনিত কারণে কোন ফল বেশি খেতে হবে
আয়রনের ঘাটতি হলে কী করবেন
কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় - শেষ কথা

আয়রনের ঘাটতি হলে কী সমস্যা হতে পারে:

পরিসংখ্যান অনুযায়ী পুরুষের তুলনায় মহিলারাই এই সমস্যার ভুক্তভোগী হোন সবথেকে বেশী। তবে শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে তা কিন্তু কিডনির ওপর প্রভাব ফেলে সবথেকে বেশী। আর আমরা জানি যে, কিডনি হচ্ছে শরীরের ছাঁকনি।

আরও পড়ুন: রক্ত দেওয়া-নেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন

এ ছাড়াও আয়রনের ঘাটতিজনিত সমস্যা শুরু হলে শরীরে রক্তশূন্যতা, দুর্বলতা, মাথাব্যাথা, বিরক্তি এবং মাথা ঘোরা ইত্যাদি উপসর্গগুলি অন্যতম হিসেবে ধরে নেয়া যেতে পারে। একজন গড় ব্যক্তিকে প্রতিদিন ১৮ মিলিগ্রাম আয়রন গ্রহণ করতে হবে, তবে বিভিন্ন বয়সের লোকেদের জন্য প্রয়োজনীয়তা পরিবর্তিত হতে পারে। তবে অবশ্যই আমাদের  সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আয়রনের ঘাটতি হলে কী কী খাবেন:

সাধারণত কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায়, তার অন্যতম কারণ হলো খাদ্যাভাস। অর্থাৎ খাদ্যাভাসের মাধ্যমেই প্রতিরোধ করা যায় আয়রনের ঘাটতি। এক্ষেত্রে বিষয়টি হচ্ছে কি কি খাবেন বা কোনগুলো খাবেন। নিম্নে কিছু খাবারের বর্ণনা যদিও প্রদান করা হলো, কিন্তু সবকিছুরই একটা পরিমিত বিষয় আছে। অতিরিক্ত কোনকিছুই ভালো না বা সঠিক নয়।

  • পালং শাকসহ যে কোন শাকসবজি
  • মুরগির মাংস
  • মাছ
  • সামুদ্রিক খাবার
  • শুকনো ফল

আরও পড়ুন: হাটুঁর জয়েন্টে ব্যথা কেন হয়-হাটুঁর জয়েন্টে ব্যথা ঔষধের নাম

  • ডার্ক চকোলেট
  • সব রকমের ডাল
  • বিনস
  • কড়াইশুঁটি
  • স্যামন মাছ
  • কচুশাক

আয়রনের ঘাটতিজনিত কারণে যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত:

সয়াবিন, সূর্যমুখীর বীজ বা তেল, চা, কফি, ওয়াইন, ক্যালসিয়াম এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলি আয়রন শোষণে বাধা দেয়। তাই এই সব খাবার অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো। সুতরাং কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় বলতে সবকিছুই সবসময় না খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে যখন আয়রনের ঘাটতি দেখা দিবে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই উপরোক্ত খাবারগুলি অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে।

আয়রনের ঘাটতিজনিত কারণে কোন ফল বেশি খেতে হবে:

কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় এর ক্ষেত্রে ফল বেশী করে খাওয়া উচিত। তবে যখন শরীরে আয়রনজনিত সমস্যা তৈরী হবে তখন অবশ্যই ফলমূল একটু বেশী খেতে হবে। কেননা, ফলে প্রচুর আয়রন থাকে, যা খুব দ্রুতই শরীরে আয়রনজনিত সমস্যা দূর করে থাকে। নিম্নে কিছু ফলের তালিকা প্রদত্ত হলো যা আয়রনজনিত সমস্যায় খুব দ্রুত কাজ করে।
  • ডুমুর
  • লেবু
  • কমলাবেলু
  • বেদানা
  • আপেল
  • পেয়ারা
  • তরমুজ
  • ক্যাপসিকাম
  • স্ট্রবেরি
  • পেঁপে
  • কিশমিশ
  • বিটজাম
  • খেজুর

আয়রনের ঘাটতি হলে কী করবেন:

আসলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। একমাত্র চিকিৎসকই ভালো করে বলতে পারবেন, কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় বা করণীয় কী অথবা কী খেতে হবে? তবে এক্ষেত্রে সাবধানতা হিসেবে একটানা অনেকক্ষণ কোন কাজ করা যাবে না, কারণ তাতে ক্লান্তি বাড়বে বা শরীর দুর্বল লাগবে। তবে এ সময় অবশ্যই বিশ্রাম নিয়ে কাজ করতে হবে। কোন প্রকার ভারী ব্যায়াম করা যাবে না, তাতে হার্টে চাপ পড়তে পারে। এমনভাবে ব্যায়ামের নিয়ম ঠিক করুন, যাতে অল্প অল্প করে ব্যায়াম করা যায়।

কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় - শেষ কথা:

আজকের কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় বিষয়ক আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারলেন আয়রনের ঘাটতির জন্য কী কী খাবার খাওয়া যেতে পারে বা কোন খাবারগুলো খাওয়া যাবে। মূলত আয়রনের ঘাটতিজনিত সমস্যায় ঔষুধের ওপর নির্ভর না করে প্রকৃতির উৎপাদিত বিভিন্ন ধরণের ফল-সবজি বেশী করে খেতে হবে। আগেকার দিনের মানুষদের মধ্যে খাবারের এত বাচবিচার ছিলনা, তারা প্রকৃতি থেকে উৎপাদিত যে কোণ খাবারই গ্রহণ করতো। যেমন-কাঁচা কলা, কলার মোচা বা কলার থোড় কিন্তু আয়রনের যথেষ্ট উৎস। আবার পাকা কলাতেও আয়রন আছে। সুতরাং আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে প্রতিদিনের তারকারিতে আপনি কোন সবজিটি রান্না করবেন। একজন নারী যখন সন্তান সম্ভবা হন, তখন কিন্তু ডাক্তাররা তাদের আয়রন ট্যাবলেট খেতে দেন, কারণ এ সময়টাতে নারীদের আয়রনজনিত সমস্যা দেখা দেয় বলেই তারা প্রেসক্রিপশনে আয়রন ট্যাবলেট লিখে দেন। তাই সুস্ত্য, সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার জন্য সবকিছুই খেতে হবে তবে তা যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয়।

আরও পড়ুন: কিভাবে পটাশিয়াম রক্তচাপকে প্রভাবিত করে

পরিশেষে, কীভাবে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা যায় সম্পর্কিত আজকের পোস্ট থেকে আপনারা আয়রন জনিত সমস্যা, উত্তোরণ, ঘাটতি এবং কীভাবে তা রোধ করা যেতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে জানতে পেরেছেন। এরপরেও যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন, এবং এরকম আরও অনেক তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। সবশেষে এতোক্ষণ বর্ণিত বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
 
বি.দ্র.: উপরে বর্ণিত তথ্যগুলি শুধুমাত্র পরামর্শ স্বরূপ, কোন চিকিৎসাপত্র নই। তবে অবশ্যই যে কোন অসুখ বা শারীরিক সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url