কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে
খাদ্যাভাসের কারণে প্রায়শঃই আমরা হজমজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকি। আর এর ফলে শুরু হয় কোষ্ঠকাঠিন্য। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে, আজকের আলোচনায় তা বর্ণিত হলো:
মূলত হজমজনিত সমস্যা থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ সহ নানা অসুবিধাসমূহ। সুতরাং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে তা অবশ্যই আমাদের জানা উচিত।
পোস্ট সূচিপত্র: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে (What can be eaten to relieve constipation?)
খাদ্য তালিকায় যে খাবারগুলো রাখা অবশ্যম্ভাবী
কোন কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন
কষা নরম করার কিছু উপায়সমূহ
কখন ডাক্তার দেখানো যেতে পারে
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে : শেষ কথা
খাদ্য তালিকায় যে খাবারগুলো রাখা জরুরী:
শাকসবজি: কষা দূর করতে আঁশযুক্ত খাবারের কোনো বিকল্প নেই। আর শাকসবজি হলো আঁশের সবচেয়ে ভালো উৎস। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় তাজা মৌসুমি শাকসবজি রাখুন। সবজির মাঝে লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, ঢ্যাঁড়স রাখুন। খাবার তালিকায় সালাদ রাখুন প্রতি বেলায়। শসা ও কাঁচা পেঁপের সালাদ খুব উপকারী। শসায় ৯৪ শতাংশ পানি থাকে, যা মল নরম করতে সাহায্য করে।
কলা: কলায় প্রচুর আঁশ রয়েছে। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তারা সকালের নাশতায় একটি করে পাকা কলা রাখুন।
আপেল: কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে নিয়মিত খোসাসহ আপেল খান। আপেলের খোসায় পর্যাপ্ত আঁশ রয়েছে, যা মল নরম করে।
নাশপাতি: আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে যদি প্রতিদিন একটি করে নাশপাতি খেতে পারেন, তাহলে শরীরে আঁশের চাহিদা ২২ শতাংশ পূরণ হবে।
কলা: কলায় প্রচুর আঁশ রয়েছে। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তারা সকালের নাশতায় একটি করে পাকা কলা রাখুন।
আপেল: কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে নিয়মিত খোসাসহ আপেল খান। আপেলের খোসায় পর্যাপ্ত আঁশ রয়েছে, যা মল নরম করে।
নাশপাতি: আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে যদি প্রতিদিন একটি করে নাশপাতি খেতে পারেন, তাহলে শরীরে আঁশের চাহিদা ২২ শতাংশ পূরণ হবে।
আরও পড়ুন: সুষম খাদ্য কী ও কোনগুলোকে সুষম খাদ্য বলা হয় এবং সুষম খাদ্য গ্রহণের উপকারিতা
ইসবগুলের ভুসি: আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পান করুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একইভাবে ইসবগুলের ভুসি খেলে সকালে মলত্যাগে কোনো সমস্যা হয় না। তবে ইসবগুলের ভুসি খেলে সারা দিন প্রচুর পানি পান করতে হবে। না হলে ইসবগুলের ভুসি শরীর থেকে পানি শোষণ করে মলত্যাগ আরও কষ্টসাধ্য করে তুলবে।তোকমা: তোকমাও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে উপকারী একটি খাবার। তোকমা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ঘণ্টাখানেক পর খেতে পারেন। এতে পুষ্টিগুণ বেশি পাওয়া যায়। চাইলে পানির পাশাপাশি ফল বা লেবুর শরবতে ভিজিয়ে রেখেও তোকমা খাওয়া যায়।
টকদই: টকদই প্রোবায়োটিকসম্পন্ন খাবার, যা হজমে সাহায্য করে। এতে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই খাবার খাওয়ার পর দুই থেকে তিন চামচ টকদই খাওয়ার চেষ্টা করুন।
এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সারা দিন প্রচুর পানি পান করতে হবে। শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়। পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
টকদই: টকদই প্রোবায়োটিকসম্পন্ন খাবার, যা হজমে সাহায্য করে। এতে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই খাবার খাওয়ার পর দুই থেকে তিন চামচ টকদই খাওয়ার চেষ্টা করুন।
এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সারা দিন প্রচুর পানি পান করতে হবে। শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়। পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
কোন কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন :
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে এর মধ্যে অবশ্যই নিম্নের খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন-
- ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- প্রক্রিয়াজাত খাবার ও হিমায়িত খাবার খাবেন না।
- লাল মাংস খাওয়া যাবে না।
- ফুল ক্রিম জাতীয় খাদ্য বা পূর্ণ ননিযুক্ত দুধ খাওয়া যাবেনা। এ ছাড়াও পনির জাতীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
কষা নরম করার কিছু উপায়সমূহ :
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে এমন আলোচ্য প্রশ্নে নিম্নেবর্ণিত কিছু উপায়সমূহ:
- কিছু প্রাকৃতিক উপায় আছে, যেগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে এর সমাধান হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শরীর হাইড্রেট না থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেজন্য পর্যাপ্ত পানি পানের পাশাপাশি তরল খাবার, পানিসমৃদ্ধ ফলমূল ও শাকসবজি খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
- বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করলে হজম প্রক্রিয়া ঠিক থাকে। আর হজম ঠিক থাকলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে তার জন্য খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত আঁশসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এ ধরনের খাবার মল তৈরির প্রক্রিয়াকে সহজ করতে সাহায্য করে। লাল চাল, লাল আটা, ডাল জাতীয় খাবার, চিয়া সিড, শাকসবজি ও বাদাম এ ধরনের খাবার। এসব খাবার আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে।
আরও পড়ুন: ফুড পয়জনিং কি - ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি - প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে হিসেবে অবশ্যই ইসবগুলের ভুসি খুবই কার্যকর। তবে সেটা খেতে হবে বুঝেশুনে। অনেকে রাতে ইসবগুলের ভুসি খেয়ে ফেলেন, এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমার পরিবর্তে বেড়ে যায়। এর কারণ ঘুমের মধ্যে পর্যাপ্ত পানি পান করা হয় না। তাই ইসবগুলের ভুসি পেটে গিয়ে খাবার নরম করার সুযোগ পায় না। সেজন্য ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে সকাল বা দুপুর বেলা। এতে অনেকটা সময় জেগে থাকার ফলে পর্যাপ্ত পানি খাওয়া হয় আর কষার সমস্যা কমে যায়।
কখন ডাক্তার দেখানো যেতে পারে :
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে আলোচনায় অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়ায় ডাক্তারের কাছে যাওয়া। যদিও মাঝে মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্য সাধারণ এবং প্রায়শই জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাধান হয়ে যায়, কিছু পরিস্থিতির বিচারে অনেক সময় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের উপসর্গ দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে এবং তীব্র ব্যথা, রক্তপাত বা ওজন হ্রাসের সাথে হতে থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী
- যদি আপনার অন্ত্রের অভ্যাসের হঠাৎ-ই পরিবর্তন লক্ষ্য করেন এবং বিশেষ করে তা ৫০ বছরের বেশি ব্যক্তিদের মধ্যে ঘটে, তাহলে কোনো অন্তর্নিহিত অবস্থাকে বাতিল করতে অবিলম্বে একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে যোগাযোগ করুন।
- সাধারণত আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য এর সাথে বমি বা পেটের ব্যথা অথবা জ্বরের মতো কোন সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন এবং সেক্ষেত্রে ডাক্তার দেখানোটা আবশ্যক। এই সমস্ত উপসর্গগুলি আপনার অন্ত্রে বাধার লক্ষণ হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে : শেষ কথা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি খাওয়া যেতে পারে আলোচ্য বিষয়ে বলা যায়, কোষ্ঠকাঠিন্য একটি নীরব সংগ্রাম হতে পারে। মূলত: জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে, প্রাকৃতিক প্রতিকার, এবং যখন প্রয়োজন হয়, চিকিৎসা হস্তক্ষেপের মাধ্যমে, কোষ্ঠকাঠিন্য কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যায় এবং কাটিয়ে উঠতেও পারা যায়। মনে রাখতে হবে, সর্বোত্তম হজম স্বাস্থ্য বজায় রাখা সামগ্রিক সুস্থ্যতার জন্য অপরিহার্য এবং হজম স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের অস্বস্তি থেকে মুক্ত জীবনযাপন করতে পারেন।উপরোক্ত উপায়গুলির পাশাপাশি কিছু কাজ বর্জন করাও জরুরি। যেমন: অতিরিক্ত চিন্তা করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। সে জন্য নিজেকে চিন্তামুক্ত থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। অনেকে মলত্যাগের অনুভূতি এলেও চেপে রাখেন। এতে এই সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। সে জন্য মলত্যাগের চাপ অনুভূত হলে চেপে না রেখে মলত্যাগ করতে হবে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url