মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার (Is obesity preventable? Causes and Remedies of Mecha)
পরিস্কার এবং উজ্জ্বল দাগবিহীন ত্বক সবাই পেতে চায়। কিন্তু অনেক সময় মুখে ছোপ ছোপ দাগ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই, মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার কী হতে পারে?
মেছতা পুরোপুরি প্রতিকার করা অনেক সময় সম্ভব হয় না। তবে অবস্থার উন্নতি ঘটানো সম্ভব। তাই, চলুন জেনে নেয়া যাক, মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার সমূহ।
পোস্ট সূচিপত্র: মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার
মেছতা আসলে কি?
কেনো মেছতা হয়?
মেছতা দূর করার উপায়
মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য?
মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার- শেষ কথা
মেছতা আসলে কি?
মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার বিষয়ক আর্টিকেলে মেছতা আসলে কি তা বর্ণিত হলো:
আসলে মেলাসমা বা মেছতা হলো ত্বকের একটি পিগমেন্টেশন ডিসঅর্ডার। বেশিরভাগ সময় নারীরাই এই সমস্যায় বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকে। সাধারণত শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে গালে এবং মুখে হালকা বা গাড় বাদামী রঙের দাগ দেখা দেয়। যার ফলাফল মুখে কালচে ছোপ বা প্যাচ পড়ে, মুখের সৌন্দর্য অনেকটাই নষ্ট করে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে মুখ-কপালসহ বুকেও হতে পারে মেছতা।
কেনো মেছতা হয়?
আসলে মেছতা কে হয় বা মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার গুলি কি হতে পারে তা জানার আগে আমাদের অবশ্যই যে বিষয়টি জানতে হবে, তা হলো মেছতা কেন হয়?
- বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেছতার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মির প্রভাব, বংশগত কারণ, গর্ভধারণ, হরমোনজনিত সমস্যা ইত্যাদি কারণে মেছতা হয়ে থাকে।
- সাধারণত ত্বকের কোন অংশ যদি দীর্ঘসময় রোদের ক্ষতিকর আলট্রাভায়োলেট রশ্মির সংস্পর্শে আসে তাহলে সেখানে মেছতা দেখা দেয়।
- যদি দেখেন আপনার মুখে বা গলাতে কিংবা ঘাড়ে বা পিঠে এক ধরনের কালো দাগের মত হয়ে থাকে। এটাকে বলে অ্যাকান্থোসিস নিগ্রিকান্স। সাধারণত আপনার পরিবারের কারও স্থূলতা থাকলে বা ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলে এই ধরনের কালো দাগ পড়তে পারে।
আরও পড়ুন: জামরুল ফল এর পুষ্টিগুণ ও খাবারের উপকারিতা
- এ ছাড়া বেশি কসমেটিক্স, রাসায়নিক দেওয়া ক্রিম মুখে ব্যবহার করলে একধরনের গুটি গুটি কালো দাগ হয় সারা মুখে। একে বলে পিগমেন্টেড কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস। বিশেষ করে প্রসাধনী থেকে এমন ত্বকের সমস্যা দেখা দিয়ে।
- হাই ব্লাড প্রেসারের ওষুধ, ডায়াবেটিসের ওষুধ বা বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াতেও অনেক সময় মেছতার মত এমন দাগ হতে পারে।
মেছতা দূর করার উপায়
জেনে রাখা ভালো মেছতার দাগ দ্রুত যায় না। তবে প্রশ্ন থেকে যায় মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার বা কিভাবে মেছতা দূর করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই এর পেছনে সময় দিতে হবে এবং ধৈর্য রাখতে হবে।
- প্রথমেই মেছতার কারণ খুঁজতে হবে। কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে যদি হয়ে থাকে তাহলে সে ওষুধ বন্ধ করতে হবে বা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। এ ছাড়া হরমোনজনিত সমস্যা হলে সেক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- মেছতার দাগ কমাতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডিমেলামাইজিং ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। দাগ অনেক বেশি হলে রয়েছে লেজ়ার ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থা।
- সরাসরি সূর্যের আলোর প্রভাব থেকে ত্বককে মুক্ত রাখতে হবে। রোদে গেলে ত্বক ঢেকে রাখতে হবে। এছাড়া ভালো মানের সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার এবং চুল লম্বা করতে মেথির ব্যবহার বা মেথির কাজ কি
- মেছতার দাগ তুলতে চাইলে এই ঘরোয়া পদ্ধতিটি প্রয়োগ করতে পারেন। একটি পাতিলেবুর রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে মেছতার দাগের উপর হালকা করে ঘষতে থাকতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না চিনির দানাগুলো গলে না যায়।
- এ ছাড়াও মেছতার দাগ তুলতে আপনি আপেল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। যেমন আপেল সাইডার ভিনেগার এর সাথে মাত্র দু’চামচ পানি মিশিয়ে যদি তুলা দ্বারা গোটা মুখে লাগিয়ে দিন। এরপর অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর তা ধুয়ে ফেলুন।
মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য?
মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার জানতে নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলো যে কারণে পেড়তে হবে :
বিভিন্ন কারণে ত্বকে মেছতার দাগ পড়তে পারে। বিশেষ করে জেনেটিক্স, ত্বকের রঙের ধরন, হরমোন বা সূর্যের এক্সপোজার স্তরের কারণে এই অবস্থার বিকাশের ঝুঁকি বেশি। এসব ক্ষেত্রে মেলাসমা সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা যায় না।
- মেছতার দাগ প্রতিরোধ করার জন্য আপনাকে কিছু নিয়মের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যেমন-সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা, এই সময়টাতে আপনাকে সূর্যের আলো বা তাপকে এড়িয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে আপনি সানস্ক্রিন, রোদ চশমা অথবা বিশেষ কোন সান প্রটেকটর ব্যবহার করতে পারেন।
- অবশ্যই বাইরে বের হওয়ার আগে কিংবা ঘরের ভেতর সূর্যের আলো পড়লেও যাতে ত্বকে সমস্যা না হয়, এজন্য দিনে উচ্চ-এসপিএফযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
- সম্ভব হলে হরমোনজনিত ওষুধ সেবন এড়িয়ে চলতে হবে। আপনার ত্বকে যে কারণেই মেছতা হোক না কেন, এর প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি হলো সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষিত থাকা।
মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার- শেষ কথা :
আজকে মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার এবং পরামর্শগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আসলে একটা বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, সাধারণত নারীর প্রজননক্ষম বয়সে মেছতা দেখা দেয়। তবে পুরুষের বেলায় মেছতা হওয়াটা খানিক বিরল। তবে সূর্যালোকের সংস্পর্শ ও ইস্ট্রোজেনের সঙ্গে মেছতা হওয়ার যোগসূত্র রয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে মুখের বিভিন্ন ধরনের কালো দাগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটা দেখা যায় সেটি হচ্ছে- ব্রণের সমস্যা। তাছাড়া রোদেপোড়া দাগ, ছোট-বড় তিল, ব্রণের দাগ, অ্যালার্জিজনিত কারণে কখনো কখনো কিছু কালো দাগ, তাছাড়া চোখের চারপাশের কালো দাগ ও চোখের নিচের গর্ত ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: হেঁচকি ওঠে কেন - হেঁচকি থামানোর ঘরোয়া উপায়গুলি কি কি
মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার করার ক্ষেত্রে আপনাকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল টার মধ্যে কোন কাজ থাকলে বা বাইরে যেতে হলে অবশ্যই সান প্রটেকটর বা সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে, প্রয়োজনে ছাতাও ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এই সময়ের মধ্যে কোনমতেই সরাসরি সূর্যের আলো যাতে আপনার ত্বকে বা স্ক্রিনে পৌঁছতে না পারে।
এ
ছাড়াও পরবর্তীতে অন্য কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে সেটাও কমেন্ট করে জানাতে
পারেন। এরকম আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে
পারেন। এতোক্ষণ আমাদের সাথে আজকে মেছতা কি প্রতিরোধযোগ্য? মেছতার কারণ ও প্রতিকার আলোচ্য বিষয়ে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url