ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা

মাত্রাতিরিক্ত ব্যথার ঔষুধ সেবনে যে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে তা অনেকেরই অজানা, তাই ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা।
আজকাল অনেকেই সামান্য একটু মাথা ব্যথা, পায়ে ব্যথা, ঘাড় ব্যথা বা ব্যথাজনিত কোন সমস্যা দেখা দিলে, কোনকিছু না ভেবেই চট করেই ব্যথানাশক ঔষুধ সেবন করে থাকেন, এর ফলে শরীরে দেখা দেয় নানা প্রকার জটিলতা। শুধুমাত্র এই কারণেই ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা।

পোস্ট সূচিপত্র: ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা (Painkillers should not be taken for a long time)

ভূমিকা:

আসলে শরীরের কোন অসুখের জন্যই অতিরিক্ত ঔষুধ সেবন করা ঠিক নয়। বর্তমানে আমরা অনেক কিছু জানি, বুঝি, কিন্তু মানতে পারিনা। যেমন-একটু মাথা ব্যথা করছে, সঙ্গে সঙ্গে দোকানদারের নিকট থেকে ব্যাথার ট্যাবলেট নিয়ে খেয়ে ফেলি, কিন্তু সেই ব্যাথার ট্যাবলেটটি কত পাওয়ার, কোন কোম্পানী এতোকিছু জানাটা বাড়তি ঝামেলা মনে করি। আবার সামান্য একটু গ্যাসের সমস্যা হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে দোকানদারের নিকট থেকে গ্যাসের ট্যাবলেট নিয়ে খেলে ফেলি, কিন্তু ভুলক্রমেই জিজ্ঞেস করিনা, কি ধরণের গ্যাসের ট্যাবলেট দিচ্ছে? তবে একথা সত্য যে, যাদের দীর্ঘমেয়াদী অসুখ আছে, তাদের বিষয়টি আলাদা। কারণ তারা ডাক্তারের পরামর্শ মেনেই ঔষুধ সেবন করে থাকেন।

আরও পড়ুন: কলার খোসার পুষ্টিগুণ উপকারিতা ও ব্যবহার

যাইহোক ফালতু প্যাচাল না করে আমরা কাজের কথায় আসি। মূল কথা হলো ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা। কারণ অতিরিক্ত পেইন কিলার সেবনে শরীরে নানারকম অসুখের সৃষ্টি করে। অনেকেই বাতের ব্যথার যন্ত্রণার জন্য খুব হাই পাওয়ারের ব্যথার ঔষুধ খেয়ে থাকেন। আসলে আমাদের নিজেদেরকে ডাক্তার মনে করা যাবে না, কারণ আমরা যদি ডাক্তারই হতাম, তাহলে কোন হাসপাতাল বা চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে বসে থাকতাম। কিন্তু সেটি তো নয়, এটা আমরা মনে মনে ভেবে নিয়েছি। মাথায় রাখতে হবে, শরীরের কোন সমস্যা দেখা দিলে তা চিকিৎসা শাস্ত্রবিদ্যা মেনেই শরীর নামক যন্ত্রটির সেবা করা বুদ্ধিমানের কাজ।

দীর্ঘদিন ধরে ব্যথার ঔষুধ সেবনে যে ক্ষতিগুলো হয়ে থাকে:

ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা, কারণ অনেকদিন ধরে ব্যথার ঔষুধ চলতে/খেতে থাকলে শরীরের লিভারের সমস্যা, কিডনি ফেইলিওর, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, পেট ব্যথা, গ্যাসট্রাইটিস, স্ট্রোকসহ দেখা দেয় নানারকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, যেমন-দীর্ঘদিন ধরে প্যারাসিটামল বা এই গ্রুপের কোন ঔষুধ সেবন করলে লিভারের ক্ষতি হয়। আবার অ্যাসপিরিন, ন্যাপ্রোক্সেন জাতীয় বা আইবুপ্রোফেন ঔষুধ সেবনের ফলে সৃষ্টি হয় পেট ব্যাথা, জ্বালা, কিডনি ফেলিওর বা ড্যামেজও হতে পারে।

অতিরিক্ত ব্যথার ঔষুধ সেবনে সুনির্দিষ্ট ক্ষতি কি কি?

=  ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা, কারণ এর ফলে নিম্নে বর্ণিত ক্ষতিগুলো হয়ে থাকে-
=  দীর্ঘদিন ধরে ব্যথার ঔষুধ সেবনের সমস্যা হলো তা হরমোনের কার্যকারিতায় বাধা প্রদান করে।
=  নেপ্রোক্সেন, অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ঔষুধগুলি শরীরের রক্ত পাতলা করে ফেলে।
=  ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ঔষুধগুলি যেমন হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
=  অতিরিক্ত ব্যথানাশক ঔষুধ সেবনে হরমোন বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে নারীদের গর্ভপাত ঘটে থাকে।

কীভাবে ব্যথানাশক ঔষধ ব্যবহার এড়িয়ে চলা যায়:

ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা, অর্থাৎ অতিরিক্ত ঔষধ সেবনে যেমন শারীরিক নানা জটিলতা তৈরী হয়, ঠিক তেমনি নানা প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু যে কোন বিষয়েই বিকল্প ভাবনা থাকা ভালো, কারণ একঘেয়েমী বা একনাগাড়ে চলছে বা অতিরিক্ত বা ধারাবাহিক বা অনবরত চলছেই ইত্যাদি বিষয়গুলো থেকে বিকল্প ভাবনা ভাবতে হবে।
* সর্বপ্রথম টিপস হচ্ছে শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শক্রমেই ব্যথানাশক ঔষুধ সেবন করতে হবে।
* যাদের হাঁটু ব্যথা, ঘাড় ব্যথা, কোমর ব্যথা বা কাঁধে ব্যথা, তাদের জন্য উচিত হবে ঔষুধের ওপর ধীরে ধীরে নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হবে।

আরও পড়ুন: জেনে নিন, কীভাবে শরীরে প্রতিদিন প্লাস্টিক ঢুকছে

* যারা অ্যালকোহল পান করেন বা মাদকাসক্তে আসক্ত এমন ব্যক্তিগণ সাধারণত উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, উৎকণ্ঠা বা একাকীত্বে ভুগে থাকেন, চিকিৎসকের পরামর্শক্রম গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
* অতিরিক্ত টেনসন, উৎকণ্ঠা বা উদ্বেগের কারণেও ব্যথা নাশক ঔষধ সেবনে আসক্তি বাড়তে পারে, তবে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন যোগাসনের মাধ্যমে তা উপশম করা যেতে পারে।
* যাদের গ্যাস্ট্রিক আলসার রয়েছে এক্ষেত্রে তাদের অবশ্যই

ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা-পরিশেষে:

আসলে যখন তখন, যেভাবে, সেভাবে আমরা নিজের ইচ্ছেমত ব্যথানাশক ঔষধসহ যে কোন ঔষধই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই অনেক সময় খেয়ে ফেলি। আজকের আর্টিকেলে আমরা ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা সম্পর্কে আলোকপাত করেছি, কেন অতিরিক্ত ব্যথার ঔষধ খাওয়া যাবে না, অতিরিক্ত ব্যথার ঔষধ খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি ধরণের হতে পারে এবং কিভাবে তা কমানো যেতে পারে, ইত্যাদি বিষয়ে ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা নামক বর্ণনাতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি উপরোক্ত আলোচনাটি আপনাদের উপকারে আসবে।

আরও পড়ুন: জেনে নিন, কোন কোন ফলে বাড়ে লিভারের কার্যকারিতা

কথায় বলে, ধৈর্য্য ও সহ্য, এই দুইটি গুণ থাকাটা খুবই জরুরী। কারণ বিপদে ধৈর্য্য ধারণ করাই হচ্ছে উৎকৃষ্ট পন্থা। তাই খুব তাড়াতাড়ি বিচলিত না হয়ে একটু ধৈর্য্য, সহ্য এবং সময় নিয়েই যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। আজকে ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা বিষয়ক আটিকেলের মূল বিষয় হচ্ছে, সামান্য একটু কারণে যে কোন ব্যথার ঔষধ খাওয়া যাবে না। কারণ ছোটখাট যে কোন সমস্যার জন্য চট করে কোন ঔষুধ না খেয়ে ধীরে, সুস্থ্য মস্তিস্কে এবং সর্বোপরি নিকটস্থ ডাক্তার অথবা প্রেসক্রাইব সম্পর্কিত ডাক্তারের নিকট থেকে পরামর্শ গ্রহণ করেই ঔষধ সেবন করা উচিত। পরিশেষে ব্যথানাশক ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়া যাবেনা বিষয়ক আলোচনায় দীর্ঘক্ষণ যুক্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Mithu Sarker
Mithu Sarker
আমি মিঠু সরকার, দুই বছর ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। ব্লগ পোস্ট, ওয়েব কনটেন্ট ও মার্কেটিং রাইটিংয়ে আমার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে অনলাইন সফলতা গড়াই আমার লক্ষ্য।