চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী?
ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ উত্তরবঙ্গের এই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাটি। বলাবাহুল্য এই অঞ্চলের লোকজ সংস্কৃতি গম্ভীরা সারা পৃথিবীতে খুবই জনপ্রিয়। আজকে এই চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? তা জানার চেষ্টা করবো।
উত্তরবঙ্গের এই জেলাটি ভারতীয় সীমানা সংলগ্ন। দেশ বিভাগের আগে এই এলাকাটি মালদাহ জেলায় অন্তর্ভূক্ত ছিল, তৎকালীন মুসলিম শাসকগণ এই এলাকায় অনেক মসজিদ, মাদ্রাসা ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সর্বোপরি এখানে উৎপাদিত আমের কথা বলাইবাহুল্য। সুতরাং তারই আলোকে আজকে আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? তা খুঁজে বেরা করার চেষ্টা করি।
পোস্ট সূচিপত্র: চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? (What are the tourist attractions in Chapai Nawabganj?)
ঐতিহাসিক সোনা মসজিদ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? বলতে প্রথমেই সোনা মসজিদের প্রসঙ্গ আসে। সোনা মসজিদের প্রধান প্রবেশ পথে অবস্থিত শিলালিপির উদ্ধৃতি থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সুলতান হুসাইন শাহর শাসনামলে (১৪৯৩-১৫১৯ এর মধ্যে) জনৈক মনসুর ওয়ালী মুহম্মদ বিন আলী এই ছোট সোনা মসজিদটি নির্মাণ করেন। লোকমুখে প্রচলিত, মসজিদের গম্বুজগুলো সোনা দিয়ে মোড়ানো ছিল বলে এই মসজিদের নামকরণ হয় সোনা মসজিদ।
আরও পড়ুন: পাবনা জেলার দর্শনীয় ও ঐতিহ্যবাহী স্থান
রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে অবস্থিত এই ছোট সোনা মসজিদ। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের সন্নিকটে আরেকটি সোনা মসজিদ থাকার কারণে এই মসজিদটি সকলের নিকট ছোট সোনা মসজিদ হিসেবে পরিচিতি অর্জন করে। ১২টি গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটিতে সুলতানি আমলের স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত এবং গ্রানাইটের টালি ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদের চারপাশের দেওয়াল ৬ ফুট চওড়া, চারকোনায় ৪টি আটকোনা সম্বলিত মিনার রয়েছে। এর পূর্ব দিকের প্রবেশ পথের সোজাসুজি পশ্চিম ধারের দেওয়ালে নকশা খচিত ৫টি মেহরাব রয়েছে। এই মসজিদটি বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পর্যটনের নজর কাড়ে।
তিন গম্বুজ মসজিদ:
৩ গম্বুজ মসজিদটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ফিরোজপুরে অবস্থিত। তৎকালীণ বঙ্গ সুলতান শাহ সুজা প্রখ্যাত ইসলাম প্রচারক শাহ সৈদয় নেয়ামতউল্লাহর শীতকালে বসবাসের সুবিধার্থে এই ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন। তিন গম্বুজ মসজিদে রয়েছে বিশাল একটি মসজিদ ঘর, ৩টি মেহরাব ও সম্মুখ ভাগের দিকে রয়েছে ৩টি প্রবেশ পথ। এই ৩টি প্রবেশ পথের মাঝখানের দরজাটি আবার তুলনামূলক ভাবে বৃহদাকৃতির। মসজিদের কাছেই রয়েছে তোহাখানা নামক ইমারত যেখানে আছে শাহ নেয়ামত উল্লাহর সমাধি এবং বঙ্গ সুলতান শাহ সুজা কর্তৃক নির্মিত একটি দ্বিতল ইমারত। উল্লেখ্য যে, শাহ সুজার নির্মিত ইমারতটি ‘তোহাখানা’ নামে পরিচিত।ধনিয়াচক মসজিদ:
পনের শতকের শেষ দিকে ইলিয়াস শাহী আমলে নির্মিত হয় চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত ধনিয়াচক মসজিদটি। মধ্যযুগীয় মুসলিম স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত ইট ও টেরাকোটায় চমৎকার একটি নিদর্শন এই ধনিয়াচক মসজিদ। এই মসজিদে ৬টি গম্বুজ, ৩টি প্রবেশপথ এবং এর মধ্যে মাঝখানেরটি সবচেয়ে বড়। এ ছাড়াও উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ২টি করে মোট ৪টি দরজাও রয়েছে। তবে স্থানীয়দের ধারণা মতে, এক সময় এই এলাকায় ব্যবসায়ীরা সুতা বা তুলার ব্যবসা করতেন তাদের বলা হতো ‘ধুনি’। অর্থাৎ এই ধুনি শব্দ থেকেই ধুনিচক বা ধনিয়াচক নামটির প্রচলন হয়েছে।খনিয়াদিঘী মসজিদ:
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৪৫০ হতে ১৫৬৫ খ্রিষ্টাব্দে গৌড় রাজত্ব থাকাকালে এই মসজিদটি নির্মিত হয়। যা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরপুর এই মসজিদের দৈর্ঘ্য ৬২ ফুট এবং প্রস্থ ৪২ ফুট। মূল মসজিদের ছাদে রয়েছে একটি বিশাল গম্বুজ এবং বারান্দার ছাদে ৩টি ছোট আকৃতিক গম্বুজ রয়েছে। টেরাকোটা ও ইটের নকশায় অলংকৃত মসজিদটির পিলারে ও কার্নিশে পাথরের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।দারাসবাড়ি মসজিদ:
মসজিদের শিলালিপি থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৪৯৭ সালে সুলতান শামসুদ্দিন ইউসুফের শাসনামলেই মূলত এই দারাসবাড়ি মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। তবে শুরুতে এই মসজিদটির নামকরণ ফিরোজপুর থাকলেও ১৫০৪ সালে দারাসবাড়ি প্রতিষ্ঠার পর এটি লোকমুখে দারসবাড়ি মসজিদ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য যে, দারাসবাড়ি মসজিদ থেকে প্রাপ্ত ইউসুফি শাহী লিপিটি তোগরা অক্ষরে লেখা, যা বর্তমানে কোলকাতা যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। মসজিদটি মূলত টেরাকোটা ইট দিয়ে তৈরী, ৯টি কারুকার্যময় মেহরাব আছে এবং ভেতরের আয়তক্ষেত্র দুই ভাগে বিভক্ত ও মূল গম্বুজটি দেখতে অনেক আকর্ষণীয়। তবে মসজিদটির উত্তর প্রান্তে ৬০ বিঘা আয়তনের একটি বিশালী দিঘী রয়েছে।বাবুডাইং:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? এর মধ্যে বাবুডাইং ভ্রমণ স্থানটি অত্যন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত একটি জায়গা। এই স্থানটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঝিলিম ইউনিয়নে অবস্থিত মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় পাহাড়ি বনভূমি বেষ্টিত বাবুডাইং স্থানটি। মূলত বনের শেষ প্রান্তে উপরে অবস্থিত গোল চত্বর থেকে পূর্বদিকে গড়ে উঠা টিলার মত উঁচু-নিচু অংশটিই বাবুডাইং হিসেবে পরিচিত। আর এই উঁচু টিলা থেকে নীচের দিকে তাকালেই দেখা যায় ঢেউ খেলানো বনের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। বাবুডা্ইং এর সবথেকে মনোরম ও আকর্ষণীয় বিষয়ে হচ্ছে অজস্র গাছপালা থাকার কারণে বিভিন্ন জানা-অজানা পাখির প্রচুর সমাগম ঘটার ফলে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়, যা ভ্রমণ পিপাসু, পর্যটক এবং সর্বোপরি পাখি প্রেমিকদের বিমোহিত করে দেয়। একটি বিষয় জানা উচিত, তা হলো প্রায় ২৫ বছর আগে বিএমডিএ (বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন) কর্তৃক এই বাবুডাইং স্থানে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার চারা রোপন ও ৫টি পুকুর খনন করেছিলেন। বনের মাঝে প্রাকৃতিকভাব গড়ে উঠা লেকে একটি ক্রসড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে, যা দূর থেকে দেখলে মনে হয় ঝর্ণার মতো।নওদা বুরুজ/শাহুরুজ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে খ্যাত এই নওদা বুরুজ/শাহুরুজ। রাজা লক্ষণ সেনের শাসনামলে আমলে এই রহনপুর বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে জনপ্রিয়তা পায়। ফলে সেই কারণে রাজা লক্ষন সেন এখানে সুরম্য অট্টালিকাসহ অংসখ্য স্থাপনা গড়ে তুলেন। বর্তমানে এই নওদা বুরুজ দেখতে মাটির উঁচু ঢিবির মতো, ফলে স্থানীয়দের কাছে তা ষাঁড়বুরুজ হিসেবেও পরিচিত।আলপনা গ্রাম:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? প্রসঙ্গক্রমে আদিবাসী অধ্যুষিত এই আলপনা গ্রামটি পরিদর্শন করা উচিত। এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলায় অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রাম। মূলত এই ছোট্ট গ্রামটিতে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস। আর বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা খুব সহজ-সরল সর্বোপরি প্রকৃতি বান্ধব একটি গোষ্ঠী।
আরও পড়ুন: নাটোর জেলার ইতিহাস - নাটোর জেলার কোনগুলো দর্শনীয় স্থান
টিকইল গ্রামের এই আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা তাদের মাটির বাড়ি-ঘরের প্রতিটা কোণায় বা স্থানে বছরের পর বছর বংশ পরস্পরায় নানারকম নান্দনিক সব আলপনা অঙ্কন করেন। তুলির আঁচড়ে তারা নিজেদের তৈরি করা রঙ ও আলপনা আঁকার কাঁচামাল তারা মাটি থেকেই তৈরি করে। এইসব আলপনা চিত্রগুলি তারা বিভিন্ন রঙ দিয়ে জীবন্ত করে তোলে, যা দেখলে সত্যিই চোখ জুড়িয়ে যায়। শুধুমাত্র এই কারণের জন্য টিকইল নামের গ্রামটি বিভিন্ন মানুষের কাছে হয়ে উঠে আলপনা গ্রাম হিসে্বে। কারণ এই আদিবাসী গ্রামের যে কোন বাড়িতে গেলেই দেখতে পাবেন বিভিন্ন আলপনা চিত্র।
কানষাট আম বাজার:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে বসে বাংলাদেশের বৃহত্তম আমের বাজার। আর এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে, বাংলাদেশের আমের রাজধানী বলা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে। বিভিন্ন প্রজাতির আমের সমাগম ঘটে এই কানসাট বাজারে। প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন স্থান হতে ব্যবসায়ীরা আম সংগ্রহ করতে ছুটে আসেন এই কানসাট বাজারে। ভোর থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমে থাকে সুবিস্তৃত ও সুবিশাল এই আমের বাজার।
বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধিস্থল:
১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনীর নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ ও পাশবিক অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বিভিন্ন সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিক্ত হয়ে লড়াই চালিয়ে যান। ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ৭নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত ও সুনিপুণ বুদ্ধিদীপ্তে মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক শত্রুসেনা অর্থাৎ পাকিস্তানের সব দুর্ভেদ্য ঘাটি নিশ্চিহৃ করতে থাকে। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর মহানন্দা নদী অতিক্রমকালে শত্রু সেনাদের দুর্ভেদ্য সব ঘাটি নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন, একের পর এক ঘাটি নিশ্চিহ্র করার সময় পাকিস্তানি বাহিনীর একটি স্নাইপার বুলেট তাঁর দেহে এসে আঘাত করলে তিনি লুটিয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে তাঁর শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী তাঁকে সম্মানের সাথে সোনা মসজিদ চত্বরে সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশ সরকার তাঁর এই অসামান্য অবদানের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করেন।
ইলা মিত্র:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? বলতে তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী ইলা মিত্র স্মরণে নাচোল উপজেলার কেন্দুয়ায় একটি স্মৃতিস্তম্ভটি বা এর ইতিহাস জানাটা খুবই আবশ্যক। ইলা মিত্র নাচোল কৃষক ও সাঁওতাল আদিবাসীদের সংগঠিত করে আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৫০ সালের ৫ জানুয়ারি পুলিশ ও কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটার ফলে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার প্রায় ২ হাজার সেনা প্রেরণ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু পাকিস্তানী সেনারা শান্তির বদলে ওই এলাকায় ব্যাপক মারপিট, শতাধিক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যাসহ ১২টি গ্রামের কয়েক’শ বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়। এ সময় ইলামিত্র পালানোর চেষ্টাকালে পুলিশের হাতে ১০০ সদস্য ধরা পড়েন। বলাবাহুল্য ইলামিত্র নাচোল উপজেলায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে ছিলেন। তিনি নিজের সর্বস্ব দিয়ে মানুষের সেবা করে মানবতার এক মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। অত্রাঞ্চলের জনগণকে শিক্ষিত করার লক্ষ্যে তিনি একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি হতদরিদ্র মানুষের পাশে এক দেয়াল হিসেবে প্রতিবাদী রূপ হিসেবে সহায়তা করে গেছেন
ঐতিহাসিক আলী শাহপুর মসজিদ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে আলী শাহপুর মসজিদটি অবস্থিত। এটিও চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? এর মধ্যে একটি। মসজিদটির চূড়ায় একটি মিনার রয়েছে, এর চার কোণায় ৪টি বুরুজ, উত্তর ও দক্ষিণে ২টি খিলান জানালা, এর দেওয়ালের চার কোণায় চারটি নাম রয়েছে, মসজিদটি গৌড়িয়া ইট দ্বারা নির্মিত, মসজিদটি খিলানের উপরে স্থাপিত, ভিতর ও গম্বুজে বিচিত্র নকশা সহ বহিরাংশের দেওয়ালের গায়েও রয়েছে বিচিত্র মেরলন নকশা। আলী শাহপুর মসজিদটির ইতিহাস রয়েছে নানা মতবিরোধ। অনেকেই মনে করেন, এই মসজিদটি পাঁচশত বছরের পুরনো। আবার কেউ কেউ মনে করেন, আলী শাহ নামক এক ধর্মপরায়ন ব্যক্তি এই এলাকায় ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে আসেন এবং তিনি অত্র মসজিদটি নির্মাণ করেন। সুতরাং তার নামানুসারে এ এলাকার নামকরণ হয়েছে আলীশাহপুর। তবে সঠিক ইতিহাস পাওয়া না গেলেও মসজিদের পুরাকীর্তির নিদর্শন দেখে অনেকেই মনে করেন, এটি ৫ থেকে ৬ শত বছরের পুরনো।
খঞ্জনদিঘীর মসজিদ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুরে অবস্থিত এই খঞ্জনদিঘীর মসজিদটি। দারসবাড়ী মসজিদের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত বালিয়া দিঘীর দক্ষিণ পাড় ঘেঁষে পূর্বদিকে কিছু দূর এগোলেই চোখে পড়বে খঞ্জনদিঘীর এই মসজিদটি। ধ্বংসাবশেষে পরিণত হওয়া এই মসজিদটির নির্মাণ সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পাওয়া গেলেও ইটের তৈরী এই মসজিদটির বাইরে সুন্দর কারুকাজ। তবে মতভেদে খঞ্জনদীঘির এই মসজিদটির স্থাপনা দেখে অনুমান করা হয় এপি পনেরো শতকের দিকে নির্মিত হয়েছিল।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? - পরিশেষে:
আসলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন থাকলেও এখানকার লোকজ সংস্কৃতিও অত্যন্ত চমৎকার। বিশেষ করে এখানকার গম্ভীরা গান সারা বিশ্বে একটি বিশেষ স্থান অর্জন করেছে। আজকের আর্টিকেল চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? তা বর্ণিত হলেও শিবগঞ্জ জেলার চমচম বা মিষ্টি সহ বিখ্যাত কালাইরুটি, ছোটখাট ভ্রমণের জন্য রয়েছে মহানন্দা সেতু, ভারতীয় সীমান্তবর্তী হওয়াই এখানকার মোহিদীপুর চেকপোষ্ট দিয়ে মালামাল আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? সম্পর্কিত আর্টিকেলটি আশাকরি আপনাদের জানার আগ্রহকে যৎসামান্য হলেও বিস্তৃত করবে।
আরও পড়ুন: বগুড়া জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য - বগুড়া জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
পরিশেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? বিষয়ে যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্টস করে জানাবেন। আসলে আমাদের এই ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, নানা ধরণের সভ্যতা, যুগের পরিবর্তন এবং নানা ইতিহাসের সাক্ষী কালের আবর্তে তা হারিয়ে যাচ্ছে, যা আমরা অনেকেই জানি। যাইহোক সবশেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান কী কী? সম্পর্কিত আলোচনায় দীর্ঘক্ষণ থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url