চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, কিভাবে সমাধান করা যায়
অনেক সময় চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যা নিয়ন্ত্রণ করাটা বেশ ঝামেলারই মনে হয়। তাই কিভাবে সমাধান করা যায়।
বাইরের ধুলা-বালি, পরিবেশ দূষণ, ধোয়া, পোক-মাকড় ইত্যাদি হঠাৎ করেই আমাদের চোখে এসে পড়ে, আবার অ্যালার্জিজনিত কারণেও চোখ চুলকাতে থাকে। আর তখন এই চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি-র কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং তখন মনে হয়, দ্রুত কিভাবে সমাধান করা যায়, তা জানতে নিচের লেখাটি পড়তে হবে।
পোস্ট সূচিপত্র: চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, কিভাবে সমাধান করা যায় (Itchy eyes are a discomfort, how to solve it)
চোখ চুলকানোর লক্ষণসমুহ
চোখ চুলকানোর কারণসমূহ
চোখ চুলকানোর বিকল্প কি হতে পারে?
চোখের সমস্যায় ঘরোয়া প্রতিকার
চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, কিভাবে সমাধান করা যায়-পরিশেষে
চোখ চুলকানোর লক্ষণসমুহ:
চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, তবে তার আগে এর লক্ষণগুলি বুঝতে হবে: চোখে জল বা অস্রুসিক্ত চোখ, লালভাব, সাব, ফোলা, ছিঁড়ে যাওয়া, চুলকানি, বার্ন সংবেদন ইত্যাদি লক্ষণগুলি অন্যতম।
চোখ চুলকানোর কারণসমূহ:
চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, তাই এর অনেকগুলো কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:- অ্যালার্জিজনিত কারণ: ধুলা, পরাগরেণু ইত্যাদি চোখে জমে তা চুলকানি সৃষ্টি করে থাকে।
- অনেক সময় ভুল পাওয়ারের চশমা বা ভুল কন্ট্রাক্ট লেন্স ব্যবহারে চোখ চুলকানোর কারণ হতে পারে।
- সাধারণত শুষ্ক চোখ জ্বালাপোড়ার অন্যতম কারণ। অর্থাৎ অনেকেই আছে, যাদের চোখে অশ্রু তৈরি কম হয়ে থাকে, ফলে সেটাও চোখ চুলকানো বা চোখ জ্বালাপোড়া করার অন্যতম কারণ।
- অনেক সময় ঘুমের ঘাটতি এবং বিভিন্ন ভাইরাসজনিত কারণেও চোখ জ্বালাপোড়া বা চোখ চলুকানির কারণ হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: স্মার্টফোনে ফটো গ্যালারি স্পেস কিভাবে বাড়ানো যায়
- সাধারণত প্লেকার/ষ্টাই জাতীয় চোখের পাতার সংক্রমণ হতে পারে চোখের জ্বালাপোড়া বা চুলকানির অন্যতম কারণ।
চোখ চুলকানোর বিকল্প কি হতে পারে?
- যদি আপনার চোখ শুষ্ক প্রকৃতির হয়ে থাকে তাহলে সেই চোখের জন্য কৃত্রিম অশ্রু ড্রপ অর্থাৎ রিফ্রেশ বা সিস্টেন জাতীয় ড্রপ ব্যবহার করলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
- অনেক সময় চোখ জ্বালাপোড়া বা চুলকালে করলে ঠান্ডা কাপড় পানিতে ভিজিয়ে তা চোখে দিতে পারেন।
- চোখের সমস্যার কারণে সঠিক পাওয়ারের চশমা ব্যবহার করা উত্তম।
- সাধারণত বাইরে থেকে এসে অনেকেই যেমন হাত-মুখ ধুয়ে থাকে এটি যেমন একটি সংস্কার, ঠিক তেমনি বাইরে থেকে ভালো করে চোখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে অনেকটাই রিফ্রেশ হয় এবং সেইসাথে চোখের জীবাণুমুক্ত থাকে।
- চোখে যদি অ্যাল্যার্জিজনিত সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে অ্যান্টিহিস্টাসিন ড্রপ, যেমন-আলাওয়ে বা প্যাটাডে জাতীয় ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
- অনেকেই আছে, যারা দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার স্ক্রিণে তাকিয়ে কাজ করে থাকে, আবার অনেকেই টিভির দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকে। এতে করে চোখ ভালো রাখতে এগুলো এড়িয়ে যেতে হবে।
- তবে আই ড্রপ দিনে ৪ বার এর বেশি ব্যবহার করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
চোখের সমস্যায় ঘরোয়া প্রতিকার:
- চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, কিভাবে সমাধান করা যায় বলতে সাধারণত শসায় আছে অ্যান্টি-ইরিটেশন প্রোপার্টিজ, যা জ্বালাপোড়া, ফোলাভাব, চুলকানো ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত কার্যকরী। সুতরাং চোখ চুলকানোজনিত সমস্যায় একটি শসা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। পাতলা চাকা চাকা করে কাটা শসাগুলো ফ্রিজে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর সেই ঠান্ডা শসা দুই চোখের উপর অন্তত ১০ মিনিট দিয়ে রাখতে হবে। যদি দিনে ৫ বার এইভাবে শসা ব্যবহার করতে পারলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
- চোখ চুলকালে অনেক সময় ঠান্ডা দুধ যদি তুলার বল বা প্যাড তৈরি করে চোখের চারপাশে আলতো করে ঘষে নিতে হবে বা চোখের উপর দিয়ে রাখলেই এতে চোখ ঠান্ডা থাকবে এবং চুলকানোও বন্ধ হবে। এই ঘরোয়া উপকারটি সকালে ও সন্ধ্যায় অর্থাৎ দিনে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: কালোজিরা চিবিয়ে খেলে কি কি উপকার হয়
- চোখের সমস্যায় দারুণ কাজ করে বিশুদ্ধ গোলাপজল। অর্থাৎ চোখ পরিস্কারের জন্য দিনে দুবার গোলাপ জল দিয়ে চোখ পরিস্কার করলে উপকার পাওয়া যায়। তবে তাৎক্ষণিক উপকার পেতে চাইলে ড্রপ হিসেবেও চোখে গোলাপজল দেয়া যেতে পারে।
- চোখের চুলকানো বা জ্বালাপোড়া কমাতে লবণ পানি দারুণ কার্যকর। সাধারণত লবণে থাকে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং এটি যে কোন জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে থাকে। তাই এক কাপ বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে ১ চা-চামচ লবণ মিশিয়ে উষ্ণ গরম করতে হবে, যাতে ভালোভাবে মিশে যায়। এরপর মিশ্রণটি ঠান্ডা হলে তা চোখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করতে হবে।
- সাধারণত আলুতে আছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট উপাদান, যা চোখ চুলকানোজনিত সমস্যা সমাধানের দ্রুত সাহায্য করে থাকে। এটি চোখের ফোলাভাব ও লালচেভাব কমাতেও যথেষ্ট সাহায্য করে থাকে। এক্ষেত্রে একটি আলু পরিস্কার করে ধুয়ে তা কেটে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। এরপর সেই ঠান্ডা আলুর টুকরা চোখের উপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট দিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। দিনে ২ থেকে ৩ বার রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্তত একবার এভাবে আলু ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, কিভাবে সমাধান করা যায়-পরিশেষে:
আসলে বিভিন্ন অসতর্ককার কারণে অথবা অ্যালার্জিজনিত কারণেও চোখ চুলকাতে পারে। এক্ষেত্রে বাইরে বের হওয়ার সময় রোদ চশমা ব্যবহার করা যেতে পারে, কারণ চশমা থাকলে ধুলা-বালি চোখে কম পড়ে। বিভিন্ন ভিটামিনজনিত কারণেও অনেক সময় চোখ জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। তাই আজকের চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, কিভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে আশাকরি উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন।
আরও পড়ুন: মাইগ্রেন হলে কি কি সমস্যা হতে পারে - প্রতিকারগুলি কি কি
সুতরাং চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, কিভাবে সমাধান করা যায় বিষয়ক আলোচনায় যদি কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকে তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। এছাড়াও এতোক্ষণ চোখ চুলকানো একটি অস্বস্তি, কিভাবে সমাধান করা যায় বিষয়ক আলোচ্য বিষয়ে সংযুক্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url