মুখে ব্রণ হয় কেন, ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়?
একটা বয়সে মুখে ব্রণ হয়ে থাকে, কিন্তু অনেক অসময়েও আমাদের মুখে ব্রণ হয় কেন, আর এই ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়? সেটা জানতে হবে।
সাধারণত তৈলাক্ত ত্বক থেকে অতিরিক্ত সিবাম নিঃসরণ ঘটে এবং মৃত ত্বকের কোষ ও বিভিন্ন ময়লা জমে ত্বকের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়াও হরমোনজনিত কারণেও ব্রণ হয়ে থাকে। অর্থাৎ এসব কারণ ছাড়াও মুখে ব্রণ হয় কেন বা ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়? ইত্যাদি জানতে নিচের লেখাটি পড়তে হবে।
পোস্ট সূচিপত্র: মুখে ব্রণ হয় কেন, ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়? (Why do acne appear on the face, what can be done to solve the problem of Acne?)
ভূমিকা
মুখে ব্রণ হয় কেন
ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়?
মুখে ব্রণ হয় কেন, ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়?-শেষ কথা
ভূমিকা:
মূলত বয়ঃসন্ধিকালে অনেকেরই ব্রণ হয়ে থাকে। কিন্তু পরিণত বয়সে ব্রণ হওয়া এটা আসলেই একটা সমস্যা। আর ব্রণ মানেই গোটা মুখে ব্যথা এবং ব্রণ কমে গেলে মুখে দাগ সৃষ্টি। নানা কারণে মুকে ব্রণ সৃষ্টি হতে পারে, যেমন-বংশগত, বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার, বদহজম বা কোষ্ঠকাঠিন্য, দূষিত আবহাওয়া, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকা, বেশী পরিমাণে জাঙ্ক ফুডে আসক্তি, অনিদ্রা বা মানসিক চাপ, শরীরে অতিরিক্ত ঘাম ইত্যাদি নানা কারণে আমাদের মুখে ব্রণ দেখা যায়। তাই মুখে ব্রণ হয় কেন এবং ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়? সে বিষয়গুলি নিম্নে পর্যায়ক্রমে বর্ণিত হলো:
মুখে ব্রণ হয় কেন :
বর্তমানে অনেকেই ত্বকে অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করার ফলে ত্বকে র্যাশ বা ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। আবার কারও বংশগত কারণেও ব্রণ হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞগণ বলেন, বয়ঃসন্ধিজনিত কারণে শরীরের হরমোনের কিছু তারতম্য ঘটায়, যা তৈলগ্রন্থির ওপর প্রভাব ফেলে। এদের মধ্যে অ্যান্ড্রোজেন নামক একটি হরমোন বেশি হওয়ার কারণে তা ত্বকে সেবাম কোষগুলোকে অনেক বেশি কার্যকর করে তোলে এবং সেই সময়েই ত্বক তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এর কারণেই সৃষ্টি হয় ব্রণের সমস্যা। বলাবাহুল্য যে, সাধারণত তৈলাক্ত ত্বকেই সবথেকে বেশি ব্রণ ওঠে। আর এই ব্রণের জন্য কিন্তু দায়ী করা হয় propionibacterium acne নামের একটি ব্যাকটেরিয়াকে। এ বাদেও কর্টিকোস্টেরয়েড, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, লিথিনাম নামক ঔষধের কারণে ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়াও অন্যান্য কারণের মধ্যে যেমন-
আরও পড়ুন: ত্বকের যত্নের জন্য নারিকেল তেল কতটা সহায়ক
ত্বকের যত্ন না নেওয়া, দূষিত আবহাওয়া, নিম্নমানের মেকআপ এবং সর্বোপরি অন্যান্য টক্সিন থেকে যদি নিয়মিত ত্বক পরিস্কার না করা হয়, তাহলে সেই ত্বকের ছিদ্রে ময়লা বা ধূলিকণাগুলো আটকে যায়। এর থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে অবশ্য রোজ ঘুমাতে যাওয়ার আগে বা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশওয়াশ বা স্ক্রাবার দিয়ে মুখ পরিস্কার করতে হবে নিয়মিত। অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড বা ফাস্টফুড যেমন-সিঙাড়া, কোল্ড ড্রিংকস, পিজ্জা ইত্যাদি খাদ্য খাওয়ার কারণে হজমজনিত সমস্যার কারণেও ত্বকে ব্রণের সমস্যা ঘটে। নানাবিধ টেনসন, অনিদ্রা, অতিরিক্ত ঘাম, হরমোনের পরিবর্তন অপরিস্কার হাত মুখে দেয়া সহ নানাবিধ কারণে ব্রনের সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে।
ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়?
ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়? হিসেবে নিম্নে উদাহরণ বর্ণিত হলো:
ব্রণ হলে তা খোঁটানো যাবে না:
অনেকেই মুখে ব্রণ হলে তা নখ দিয়ে খোঁটানোর প্রচেষ্টা করেন, এটি একদমই করা যাবেনা, কারণে এতে করে ত্বকে ব্যথা সৃষ্টি হবে এবং পরবর্তীতে ব্রণের স্থানে দাগ সৃষ্টি হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ:
জাঙ্কফুড বা ফাস্টফুডসহ বেশি চিনিযুক্ত এবং অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। এর পরিবর্তে ফল, শাক-সবজি, ভিটামিন জাতীয় খাদ্য বেশি গ্রহণ করতে হবে।
বেশি করে পানি পান করতে হবে:
সাধারণত একজন সুস্থ্য মানুষের দৈনিক ২-৩ লিটার পানি গ্রহণ করা উচিত, তবে ব্যক্তিভেদে এই চাহিদা ভিন্ন হতে পারে। যেমন-কারো ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, তাহলে তার দৈনিক পানির চাহিদা (৬০*৩৫=২১০০) অর্থাৎ ২.১ লিটার। অর্থাৎ শরীরকে সুস্থ্য ব্রণ থেকে মুক্তির জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
আরও পড়ুন: ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো
পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস:
একজন মানুষের প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। সেক্ষেত্রে যদি ঘুমের সমস্যা বা অনিদ্রাজনিত সমস্যা থাকে তাহলে তা অতিসত্ত্বর দূর করতে হবে।
মানসিক চাপ কমাতে হবে:
অর্থাৎ দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপের কারণে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়, তাই অবশ্যই সর্বাগ্রে দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করতে হবে।
প্রসাধনী ব্যবহারে সতর্কতা:
বাজারে প্রচলিত যে কোন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার না করে আপনার ত্বকের ধরণ অনুযায়ী প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে।
ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করা:
সাধারণত শুষ্ক ত্বক হলে ঘন ঘন ময়েশ্চারাইজ করা খুবই জরুরী। অর্থাৎ এক্ষেত্রে শুষ্ক ত্বকের জন্য হালকা বা তেল মুক্ত ময়েশ্চারাইজ ব্যবহার করতে হবে। সাধারণত বাহির থেকে আসার পর প্রথমেই পরিস্কার পানি দ্বারা মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
মুখে ব্রণ হয় কেন, ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়?-শেষ কথা:
মুখে ব্রণ হওয়া যদিও একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ঘটে থাকে, তথাপি সতর্ক থাকাটা অতি বেশি জরুরী। কারণ আমাদের শরীরে যে নানাবিধ সমস্যা তৈরি হয়, তার অধিকাংশই অসতর্কতার কারণেই ঘটে থাকে। সুতরাং আজকের আলোচনায় মুখে ব্রণ হয় কেন, ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়? বিষয়টি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আশাকরি জানতে ও বুঝতে পেরেছেন।
আরও পড়ুন: মেথির নানা উপকারিতা ও পুষ্টি গুণাগুন
ব্রণের চিকিৎসায় ঘরোয়া কিছু প্রতিকার প্রয়োগ করতে পারেন, যেমন-মধু ও বেকিং সোডা মিশ্রিত করে ব্রণের উপর ব্যবহার করা যেতে পারে; সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বকে বাঁচাতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে ইত্যাদি। যাইহোক মুখে ব্রণ হয় কেন, ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়? বিষয়ক আলোচনায় আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকে, তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন এবং সেইসঙ্গে মুখে ব্রণ হয় কেন, ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়? বিষয়ের আলোচনায় দীর্ঘক্ষণ উপস্থিত থাকায় আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url