গিমা শাক রান্না করার রেসিপি

গিমা শাকের অনেক গুণাবলী থাকলেও এটি কি কি ভাবে রান্না করা যায়, সেইসব বিষয় জানতে গিমা শাক রান্না করার রেসিপি বিষয়ক আলোচনাটি পড়তে হবে।

এই শাকের শুধু পাতা খাওয়া হয়ে থাকে যা তিতা স্বাদের। তবে ওষুধ তৈরির কাজে এর কাণ্ড, পাতা, ফুল সবই লাগে। আফ্রিকায় গিমা শাক সালাদ এবং জুস হিসেবেও খাওয়া হয়ে থাকে। তাই, চলুন জেনে নেয়া যাক গিমা শাক রান্না করার রেসিপি সম্পর্কিত বিষয়াদি।

পোস্ট সূচিপত্র: গিমা শাক রান্না করার রেসিপি (Recipe for cooking Gima vegetables)
ভূমিকা
গিমা শাকের ঔষধি গুণ
গিমা শাক রান্না করার রেসিপি
১ জন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি দৈনিক কতটুকু সবুজ শাক খেতে পারে
গিমা শাক রান্না করার রেসিপি-পরিশেষে

ভূমিকা:

‘গিমা’ বা ‘গিমে’ বা ‘ডিমি’ শাক নামে বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকায় তা পাওয়া যায়। তবে সাধারণত এই শাক হাটে-বাজারে খুব একটা দেখা যায় না। এটি দেখতে অনেকটা আগাছার মতো। লতানো চিকন ডাল বিশিষ্ট ছোট ছোট সবুজ পাতা হয়। এদের ফুল সাদা বর্ণের হয়ে থাকে, যা ঝোপের আকারে মাটির সঙ্গে লেগে থাকে, এটি পুকুর ধারেও হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন : সারা শরীর ব্যথা করে কেন - সারা শরীর ব্যথা হলে করনীয়

উল্লেখ যে, গিমা শাক রান্না করার রেসিপি প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য প্রকাশিত, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসাপত্র সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনি অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করবেন। প্রতিবেদনটির তথ্যে যদি আপনি উপকৃত অথবা ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে তা শেয়ার করবেন।

গিমা শাকের ঔষধি গুণ:

গিমা শাকে ওজন নিয়ন্ত্রণ ঘটে, গ্যাসের সমস্যা দূর হয়, দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ভিটামিন সি এর অভাব দূর হয়ম লিভারের সমস্যা দূর হয়, গায়ে চুলকানি বা চর্মরোগে গিমার শাক বেটে গায়ে লাগালে তা সেরে যায়, যে সকল মহিলা ডিসমেনোরিয়ায় ভুগে থাকেন, তাদের অবশ্যই গিমার শাক খেলে উপকৃত হতে পারেন।

গিমা শাক রান্না করার রেসিপি:

  • গিমার শাক, বেগুন কুচি কুচি করে প্রয়োজন মাফিক তেল, লবণ, হলুদ এবং পেঁয়াজ দিয়ে ভাজি করে খেতে পারেন।
  • গিমা শাকের সাথে ডাল/বেসন মিশিয়ে প্রয়োজনে বড়া বানিয়েও খাওয়া যেতে পারে।
  • গিমা শাক ও মাছ দিয়ে চমৎকার রেসিপি তৈরী করতে পারেন।
  • আমলকির জুসের সঙ্গে এই পাতা বেটে খাওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন: গন্ধভাদুলী পাতার উপকারিতা ও গুনাগুণ

  • গিমা শাক রান্না করার রেসিপি-র আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো-এটি আলু ও বেগুন দিয়ে তরকারি বানিয়েও খেতে পারেন।
  • থকথকে বা ঘন ডালের সাথে গিমার শাক দিয়েও একটি চমৎকার রেসিপি তৈরী করা যেতে পারে।
  • জন্জিসের সমস্যায় গিমা শাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এ সময়ে গিমা শাক সিদ্ধ করে পেঁয়াজ, লঙ্কা দিয়ে বেটে কালোজিরে ফোড়ন দিয়ে কড়াইতে নেড়ে ভর্তা বানিয়েও খেতে পারেন।

১ জন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি দৈনিক কতটুকু সবুজ শাক খেতে পারে:

সাধারণত একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত সুবজ শাক খেতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে USDA এর পরামর্শনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন দুই থেকে তিন কাপ সবজি খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যেহেতু সবুজ শাক সাধারণত খুব বেশি ঘন হয় না, তাই এক কাপ সবজির পুষ্টির সমান হতে দুই কাপ কাঁচা শাক লাগে।

গিমা শাক খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কেননা একজন ব্যক্তি মূলত কতটুকু গিমার শাক খেতে পারবেন, তা না জেনেই কেউ যদি বেশি পরিমাণে গিমার শাক খেয়ে ফেলে তাহলে বমি ও ডায়রিয়া হতে পারে। তবে গর্ভবতী বা প্রসূতি অবস্থায় এটি না খাওয়াটাই উত্তম।

গিমা শাক রান্না করার রেসিপি-পরিশেষে:

আসলে গিমা শাকটি একটি জংলী শাক হিসেবেই বেশি পরিচিত। কিন্তু হারবাল জাতীয় চিকিৎসার ক্ষেত্রে এটি রিউমেটিকের ব্যথা ও সোরিয়াসিস হারবাল ঔষুধ তৈরির কাজে বিশেষ ভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন-গিমা শাকের কান্ড, ফুল ইত্যাদি সবই কাজে লাগে। সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য, পাকস্থলি ও অন্ত্রের সমস্যা, রক্তপ্রবাহে সমস্যা, অ্যাজমা, ফুসফুস সংক্রান্ত রোগ, ভিটামিন সি এর অভাবজনিত অসুখ (স্কার্ভি, চুলকানি, মাংসপেশি ও হাড়ের ব্যথা) সহ নানাভাবে এটি আমাদের কাজে লাগে। তাই আজকে এই গিমা শাক রান্না করার রেসিপি বিষয়ক আলোচনায় নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন যে, গিমা শাক কত উপকারী একটি উদ্ভিদ।

আরও পড়ুন: কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ

প্রকৃতপক্ষে গিমা শাকের আরও গুণাবলীর মধ্যে যেমন-এটি অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের প্রকোপ কমাতে সহায়তা করা ছাড়াও ওজন কমানো, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি ইত্যাদিতেও চমৎকার কাজ করে এই গিমা। অনেক সময় চোখ উঠলে বা ব্যথা করলে কিন্তু এই গিমার পাতা দিয়ে সেক দিলে তা উপশমে সহায়ক হয়। সুতরাং গিমা শাক রান্না করার রেসিপি বিষয়ক আলোচনায় যদি আপনার কোন মন্তব্য/পরামর্শ প্রদান করতে চাইলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। বমি বন্ধ করার জন্য যদি আপনি গিমা পাতার রস এবং আধা কাপ আমলকী ভেজানো পানি মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে বমি বন্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ গিমা শাকের নানান উপকারিতা পর্যবেক্ষণ করে নিঃসন্দেহে বলা যেতেই পারে এটি একটি ঔষধি ভেষজ। পরিশেষে আজকের গিমা শাক রান্না করার রেসিপি বিষয়ক আর্টিকেলে আপনার দীর্ঘক্ষণ উপস্থিতির জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Mithu Sarker
Mithu Sarker
আমি মিঠু সরকার, দুই বছর ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। ব্লগ পোস্ট, ওয়েব কনটেন্ট ও মার্কেটিং রাইটিংয়ে আমার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে অনলাইন সফলতা গড়াই আমার লক্ষ্য।