কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ

আমাদের দৈনন্দিন প্রতিটি রান্নায় মরিচ ছাড়া যেন স্বাদই হয়না। কিন্তু এই কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ কি তা আমরা অনেকেই জানিনা।
মিষ্টি জাতীয় খাদ্য বাদে সব খাবারেই আমরা মরিচের ব্যবহার করে থাকি। তবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কাঁচা মরিচ রাখলে শরীরে যোগ হয় একাধিক উপকার। তাই আজকে এই কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ এর বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো।

পোস্ট সুচিপত্র: কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ (Benefits and harms of green Chilies)
কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন
কাঁচা মরিচের উপকারিতাসমূহ
কাঁচা মরিচের অপকারিতাসমূহ
কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ-শেষ কথা

কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন:

কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ বিষয়ক আলোচনায় দেখা যায়, কাঁচা মরিচে অনেকগুলো ভিটামিন রয়েছে। যেমন-ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন কে এবং ভিটামিন বি। এ ছাড়াও কাঁচা মরিচে অন্যান্য যে ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে, তা হলো-রাইবোফ্রাবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন, আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার এবং ম্যাঙ্গানিজ।

কাঁচা মরিচের উপকারিতাসমূহ:

কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ এর মধ্যে নিম্নে কাঁচা মরিচের উপকারিতা বিষয়গুলি বর্ণিত হলো:

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:
সাধারণত কাঁচা মরিচে ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ রয়েছে। এই ভিটামিনগুলি শরীরে শ্বেত রক্ত কণিকার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তোলে।

আরও পড়ুন: আমলকির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতাসমূহ

হার্টের জন্য উপকারী:
কাঁচা মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন রক্ত সঞ্চালনের পরিমাণ উন্নত করে এবং রক্তে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করতে সহায়তা করে। ফলে হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকিসমূহ অনেকাংশে কমে যায়।

চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি:
কাঁচা মরিচে থাকা ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। তাই প্রতিদিন অন্তত একটি করে কাঁচা মরিচ খেলে চোখের জ্যোতি দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভালো থাকে।

ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সহায়তা:
অর্থাৎ কাঁচা মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন উপাদানটি শরীরে যেমন-ব্যথা, আর্থ্রাইটিস বা বিভিন্ন প্রদাহজনিত সমস্যায় প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে থাকে।

ত্বকে বলিরেখা দূর হয়:
প্রতিদিন অন্তত একটি করে কাঁচা মরিচ খেলে ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়ে না।

মনকে সতেজ রাখে:
অর্থাৎ কাঁচা মরিচ খাওয়ার ফলে তা মস্তিস্কে এনড্রোফিন নামক হরমোনের নিঃসরণ ঘটে এবং এর ফলে আমাদের মন চনমনে ও সতেজ থাকে।

মাড়ি ও চুলের সুরক্ষায় সহায়তা:
কাঁচা মরিচে ভিটামিন এ থাকার ফলে তা হাড়, দাঁত ও মিউকাস মেমব্রেনকে ভালো রাখতে এবং এর মধ্যে ভিটামিন সি থাকায় তা মাড়ি ও চুলের সুরক্ষা করতে সহায়তা করে থাকে।

জ্বর, সর্দি ও কাশি হতে পরিত্রাণ:
সাধারণত যাদের অধিকাংশ সময় জ্বর, সর্দি এবং কাশি জাতীয় সমস্যা লেগে থাকে, তাদের ক্ষেত্রে কাঁচা মরিচে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিমাটিন সি অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও শরীরে যে কোন ধরনের কাটা-ছেঁড়া বা ঘা শুকাতেও কাঁচা মরিচ অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

চর্বি কমাতে সহায়তা:
যাদের শরীরে চর্বিজনিত সমস্যা বিদ্যমান, তাদেরকে কাঁচা মরিচ খেতে হবে। অর্থাৎ খাবারের সঙ্গে কাঁচা মরিচ লেখে মোট হওয়ার সম্ভবনা অনেকটাই কমে যায়, কারণ কাঁচা মরিচে থাকা উপাদানগুলি শরীরের চর্বি ধ্বংস করে, ফলে স্লিম থাকা যায়।

আরও পড়ুন: হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় যে সব পুষ্টি উপাদান

শরীরের মেদ রোধে সহায়তা:
কাঁচা মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন খাদ্যের মধ্যে থাকা অতি উচ্চমাত্রার চর্বি শুষে নিয়ে শরীরের মেদ রোধে সহায়তা করে থাকে।

কাঁচা মরিচের অপকারিতাসমূহ:

শরীরে অ্যাসিডিটি ও পেটে ব্যথা:
সাধারণত অতিরিক্ত বা বেশি কাঁচা মরিচ খাওয়ার ফলে, অ্যাসিডিটি, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়াজনিত সমস্যা হতে পারে।

আলসার:
অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ খাওয়ার ফলে মুখ বা পেটে আলসার হতে পারে।

হজমের সমস্যা:
অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ খাওয়ার ফলে তা হজমের সমস্যা তৈরি হতে পারে।

পাইলসের সমস্যা:
সাধারণত যাদের পাইলসের সমস্যা আছে, তাদের অবশ্যই কাঁচা মরিচ অত্যন্ত ক্ষতিকর।

কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ-শেষ কথা:

কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ এর মধ্যে অনেকেই কাঁচা মরিচ ঝালের কারণে মনে করে যে, এটি খেলেই হয়তো শরীরের কোন ক্ষতি হবে। আসলে তা কিন্তু নয়, সাধারণত কাঁচা মরিচ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তবে তা বেশি পরিমাণে নয়, আবার একদিনে অনেক কাঁচা মরিচ খেয়ে ফেলাও সমস্যার কারণ হতে পারে। সাধারণত ৩৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কাঁচা মরিচ সেদ্ধ করলে বা ভেজে খেলে, তাতে থাকা ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। তবে কাঁচা মরিচের প্রকৃত পুষ্টি বা গুণ পেতে চাইলে অবশ্যই প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গে কাঁচা মরিচ খেতে হবে।

আরও পড়ুন: অতিরিক্ত কাঁচা পেঁয়াজ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে

যাইহোক আজকের কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ বিষয়গুলি যদি জেনে থাকেন, তাহলে তা অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এ ব্যাপারে আপনাদের কোন মন্তব্য/পরামর্শ যদি থাকে তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। সবশেষে কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতাসমূহ বিষয়ক আলোচনায় আপনার দীর্ঘক্ষণ উপস্থিতি আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Mithu Sarker
Mithu Sarker
আমি মিঠু সরকার, দুই বছর ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। ব্লগ পোস্ট, ওয়েব কনটেন্ট ও মার্কেটিং রাইটিংয়ে আমার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে অনলাইন সফলতা গড়াই আমার লক্ষ্য।