কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে - জেনে নিন, কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো

কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে সেগুলি কি কি এবং সেইসঙ্গে জেনে নিন, কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো সম্পর্কে।
কিডনির-স্বাস্থ্য-ভালো-থাকবে-এই-৭টি-উপায়ে-জেনে-নিন-কিডনি-রোগের-প্রাথমিক-উপসর্গগুলো
মানুষের শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মধ্যে কিডনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ এ কথা আমরা অনেকেই জানি। তাই আজকের আলোচনাটি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নিচের যে অংশটি পড়তে চান ক্লিক করুন:
(These 7 ways to keep your kidneys healthy - Know the early symptoms of kidney disease)

কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে
কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো
কিডনী রোগ আসলে কি?
আলাদা খাদ্য তালিকা তৈরিকরণ
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কর্তৃক কিছু সাধারণ পরামর্শ সমূহ
কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে - জেনে নিন, কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো-শেষ কথা

কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে:

  • কিডনি পরিস্কার ও ডিটক্সিফাই করতে পানি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এ কারণেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
  • কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে শসার বিকল্প মেলা ভার। কারণ শসাতে পানির পরিমাণ বেশী থাকায় খাদ্য তালিকায় শসা থাকা অত্যন্ত ভালো, আর শসা শরীরকে সতেজ ও হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।
  • কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই চর্বিযুক্ত মাছ খেতে হবে। যেমন-স্যামন, টুনা জাতীয় চর্বিযুক্ত বিভিন্ন মাছ। আমরা জানি যে, উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের ঝুঁকির কারণ। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায় বা কিডনিকে ভালো রাখতে চর্বিযুক্ত মাছ খেতে হবে।
  • কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে-এর মধ্যে পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। সুতরাং পরিমিত ভাবে খাদ্য তালিকায় পালং শাক অপরিহার্য।
  • রসুনের অনেক প্রকার গুণ রয়েছে। অ্যালিসিন নামক একটি উপাদান যা রসুনে পাওয়া একটি প্রদাহরোধী, এটি রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে কিডনিকে রক্ষা করে থাকে।

আরও পড়ুন: দাঁড়িয়ে পানি পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

  • মিষ্টি আলু কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যাতে আছে ভিটামিন এ এবং সি, ফাইবার এবং পটাসিয়াম। সাধারণত মিষ্টি আলু রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে এবং স্বাস্থ্যকর রক্তচাপকে সহায়তা করে।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং নাইট্রেট সমৃদ্ধ বিট রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে এবং সেইসাথে রক্ত ​​​​প্রবাহও উন্নত করতে পারে। বিট রুট সাধারণত উচ্চ ফাইবার সামগ্রী, যেমন-খাবার হজম করতে, শরীরকে পরিষ্কার করতে এবং কিডনিকে ডিটক্সিফাই করতেও সাহায্য করে থাকে।

কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো:

  • সাধারণত কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলোর মধ্যে বলা যেতে পারে-শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তিভাব এবং দুর্বলতা বোধ করা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, শরীরের ওজন কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব, যে কোন কাজের ক্ষেত্রে মনোযোগ কমে যাওয়া, ক্ষুধা কমে যায়, ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় ও বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে চুলকানি শুরু হয় এবং বিশেষ করে রাত্রের দিকে হাত ও পা বিশেষ করে গোড়ালিতে হালকা ফোলাভাব দেখা দিতে শুরু করে ইত্যাদি।
  • সুনির্দিষ্ট কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ করেই শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তিভাব চলে আসে এবং সেইসঙ্গে নিজেকে দুর্বল বোধ হয়। অর্থাৎ কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো এটি একটি উল্লেখযোগ্য।
  • কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গের আরেকটি অন্যতম লক্ষণ হলো স্বাভাবিক প্রস্রাবের চেয়ে প্রস্রাব বেড়ে যাওয়া বা অত্যন্ত কমে যাওয়া। এ ছাড়াও বিশেষ করে রাত্রের দিকে বার বার প্রস্রাব হওয়া।
  • শরীরের ওজন ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। অর্থাৎ কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলির এটিও একটি কারণ। তবে তা ধীরে ধীরে হওয়ার কারণে অনেকেই তা বুঝতে পারেনা।

আরও পড়ুন: শরীরের ক্লান্তি ভাব এড়াতে যে পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা যেতে পারে

  • ক্ষুধা কমে যায় এবং কোন কারণ ছাড়াই বমি বমি ভাবের উদয় হয়ে থাকে। যদি এ রকম সমস্যা চলমান থাকলে তা হতে পারে কিডনির প্রাথমিক লক্ষণসমূহ।
  • মনোযোগ কমে যাওয়া, অর্থাৎ যে কোন কাজের ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে অথবা সেই কাজের ক্ষেত্রে চিন্তা-ভাবনা করতে সমস্যা তৈরি হয়।
  • সাধারণত কিডনির কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে গেলে ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠে এবং সেইসঙ্গে চুলকানিও শুরু হয়ে যায়।
  • সাধারণত কিডনির ব্যথা হতে পারে পিটের উপরের দিকে, পাঁজরের ঠিক নিচে অথবা কোমর বা পেটের পাশে। অর্থাৎ এ ধরণের ব্যথা বা ফোলাভাব দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
  • কিডনির প্রাথমিক উপসর্গগুলির মধ্যে আরেকটি হলো শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও বর্জ্য পদার্থ স্বাভাবিক নিয়মে বের না হওয়ার ফলে পা, গোড়ালি এবং হাতে ফোলাভাব দেখা দিয়ে থাকে।

কিডনী রোগ আসলে কি?

কিডনি রোগ বা রেনাল ডিজিজ, যাকে প্রযুক্তিগতভাবে নেফ্রোপ্যাথি বলা হয়। অর্থাৎ কিডনি রোগকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। ক) আকস্মিক কিডনি বৈকল্য এবং খ) দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ। মোটকথা যখন হঠাৎ করেই কিডনিকে যেটা আক্রান্ত করে, তাকে বলে আকস্মিক কিডনি ইনজুরি আর ধীরে ধীরে বা দীর্ঘ সময়ে যখন কিডনি তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে, সেটাকে বলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগ। আবার অন্যভাবে বলতে গেলে কিডনি রোগকে দুইভাবে ভাগ করা যায়। যেমন-মেডিক্যাল ও সার্জিক্যাল।

আলাদা কর্তৃক খাদ্য তালিকা তৈরিকরণ:

আসলে একজন কিডনি রোগীর জন্য একটি বিশেষ খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণে কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে যা জানাটা অতীব জরুরী। তাই কিডনি ভলো রাখতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কোন খাবার কখন খাওয়া যাবে এবং কোন খাবার কখন খাওয়া যাবে না তা উল্লেখ থাকবে। তবে একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ ডায়েটিশিয়ান কর্তৃক শুধুমাত্র কিডনি রোগীর জন্য একটি খাদ্য তালিকা তৈরি করে দিতে পারেন।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কর্তৃক কিছু সাধারণ পরামর্শ সমূহ:

সাধারণত একজন বিশেষজ্ঞ বা অভিজ্ঞ ডাক্তার সর্বপ্রথম খাদ্যাভাসের উপর গুরুত্ব প্রদান করেন, যেমন-প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ এবং ফাইবার বা আঁশ সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করার উপর গুরুত্ব প্রদান করে থাকেন।
  • কিডনি ভালো রাখার জন্য অবশ্যই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কারণ উচ্চ রক্তচাপ কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
  • নিয়মিত ওজন পরিমাপ করতে হবে। অর্থাৎ ওজন বাড়লে বা কমলে তা ডাক্তারকে সময়মত জানাতে হবে।
  • একজন কিডনী রোগীর কোনমতেই ধূমপান এবং মদ্যপান করা যাবে না, কারণ ধূমপান বা মদ্যপান কিডনিকে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
  • এছাড়াও পর্যাপ্ত ঘুমের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেমন একজন মানুষের প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো অত্যন্ত জরুরী।
  • সাধারণত একজন মানুষের প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট শারীরিক ব্যায়াম করা উচিত, এতে করে শরীর সুস্থ্য রাখতে সহায়তা করে থাকে।
  • চিকিৎসকরা অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যেমন-ধ্যান, যোগব্যায়াম, কোয়ান্টাম মেথড বা মানসিক প্রশান্তি মিলে এমন ধরণের প্রশান্তিমূলক কৌশল অবলম্বন করতে।

কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে - জেনে নিন, কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো-শেষ কথা:

আসলে কিডনি আপনার রক্তকে অতিরিক্ত তরল এবং বর্জ্য পদার্থ থেকে পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। তাই এর যত্ন নেয়াটা ভীষণ জরুরী। জেনে রাখা ভালো, প্রতিদিন প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ কোয়ার্ট রক্ত ​​সুস্থ কিডনি দ্বারা ফিল্টার করা হয়। তাই কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো জানাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন: স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণসমূহ ও প্রতিকার

সুতরাং, আজকের কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে বিস্তারিত বর্ণনা ছাড়াও কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো জানা থাকলে তা আপনাদের উপকারে আসবে। মূলত কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এই ৭টি উপায়ে - জেনে নিন, কিডনি রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো আর্টিকেলে আপনাদের আরও কিছু জানার প্রয়োজন হলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন এবং সেইসঙ্গে এতোক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি।

বি:দ্র:-আর্টিকেলটি কোন চিকিৎসা পত্র নয়, এটি তথ্যমূলক আলোচনা। চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোন বিষয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Mithu Sarker
Mithu Sarker
আমি মিঠু সরকার, দুই বছর ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। ব্লগ পোস্ট, ওয়েব কনটেন্ট ও মার্কেটিং রাইটিংয়ে আমার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে অনলাইন সফলতা গড়াই আমার লক্ষ্য।