কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য

কর্মব্যস্ততা এবং একই চলমান ধারাগুলি জীবনে কেমন যেন একটা একঘেয়েমীপনা তৈরী করে দেয়। আর এ লক্ষ্যে আজকে আমরা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানার চেষ্টা করবো।
যারা ভ্রমণ পিপাসু এবং সময় পেলেই যারা ভ্রমণ করে থাকে আবার অনেকে আছেন যারা বিভিন্ন উৎসবে, বিভিন্ন কর্মসূচি উপলক্ষ্যে, দীর্ঘসময় ছুটি কাটাতেও বেড়াতে গিয়ে থাকেন। তাই আজকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য বিষয়ে চলুন চটজলদি জেনে নিই।

পোস্ট সূচিপত্র: কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য (All information about Kuakata Sea Beach)
ভূমিকা
কুয়াকাটা নামকরণ ও ইতিহাস
কুয়াকাটা যাবার মাধ্যমসমূহ
কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থানগুলি কি কি?
কুয়াকাটায় অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য-শেষ কথা

ভূমিকা:

সাগর ভালো লাগে না এমন মানুষ খুম কমই আছেন। সমুদ্রের বিশালতা, পাহাড় আর বনভূমিসহ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য যা প্রতিনিয়তই যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে, এ যেন প্রকৃতির কোলে এক অনাবিল শান্তির পরশ। সেইজন্য আজকে আমরা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয়াদি জানার চেষ্টা করি। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ কিলোমিটার যা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচিত।

কুয়াকাটা নামকরণ ও ইতিহাস:

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য, কুয়াকাটা নামকরণ ও ইতিহাসটা ঠিক এমন, ১৮ শতকে যখন মুঘল শাসকগণ যখন আরাকানদের বিতাড়িত করতে থাকেন, তখন তারা এই কুয়াকাটায় এসে বসবাস শুরু করে। কুয়াকাটা শব্দটি আসলে কূপ শব্দ থেকে এসেছে। মূলত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতটি সবচেয়ে বেশী পরিচিতি লাভ করেছে সূর্যোদায় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য। তবে সবচেয়ে ভালোভাবে এখানে সূর্যোদয় দেখতে চাইলে তা গঙ্গামতির বাক থেকে দেখবেন এবং পশ্চিত সৈকত থেকে সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করতে পারবেন।

কুয়াকাটা যাবার মাধ্যমসমূহ:

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য বিষয়ক আলোচনায় কুয়াকাটায় বিভিন্ন ভাবে যেতে পারেন। যেমন-রেলপথে, সড়কপথে, নদী-পথে এবং চাইলে আপনি সমুদ্রপথেও কুয়াকাটা যেতে পারবেন। প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কোন জায়গা থেকে কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন এবং সেখান থেকেই যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যম কি, সে অনুযায়ী আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কিসে যাবেন।

কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থানগুলি কি কি?

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য মতে কুয়াকাটায় যদি আপনি পিকনিকে যেতে চান তাহলে মিউজিয়াম থেকে দক্ষিণে ফার্মস এন্ড ফার্মস এর বিশাল নারিকেল বাগান, ফল ও ফুলের বাগান রয়েছে এবং এখানেই আছে কয়েকটি পিকনিক স্পট। এ ছাড়াও নারিকেল গাছের পাশাপাশি বন বিভাগের উদ্যোগে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ঝাউ গাছ। আবার এখানেও রয়েছে পিকনিক স্পট। যদি আপনি মিউজিয়াম পরিদর্শন করতে চান, তাহলে বেরী বাঁধ দিয়ে সমুদ্র সৈকতের যাওয়ার পথে বামদিকে ব্যক্তিগত উদ্যোগেই একটি মিউজিয়াম দেখতে পাবেন, আপনি চাইলে সেখানে থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। সূর্যোদয় দেখতে চাইলে সাধারণত ঝাউবনে গেলেই ভালো হয়। যদি আপনি পাঁয়ে হেটে যেতে চান তাহলে সময় লাগবে ২০ মিনিট আর যদি ভ্যান বা বাইকে যেতে চান তা হলে সময় লাগবে ১০ মিনিট। এর থেকে একটু সামনে গেলেই দেখতে পাবেন ৩ নদীর মোহনা, অর্থাৎ ৩টি নদী কিভাবে সাগরে মিশে তার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রামের যত দর্শনীয় স্থান ও নামসমূহ

এ ছাড়াও সমুদ্র উপকূলে নানা ধরণের পর্যটক ছাড়াও সমুদ্র ভ্রমণকারী জাহাজ, ট্রলার এবং স্পিড বোট। আপনি ইচ্ছে করলে অপেক্ষামান জাহাজ বা ট্রলারে করে সুন্দরবন সংলগ্ন ফাতরার চর, কটকা, হাঁসার চর, গঙ্গামতির লেক,সোনার চর ইত্যাদি ঘুরে আসতে পারেন। কুয়াকাটার সমুদ্র উপকূলের পার্শ্বে বিভিন্ন খাবার হোটেল বিশেষ করে মাছের দোকান ছাড়াও রাখাইনদের হাতে বোনা বিছানার চাদর, জামা, শাল ইত্যাদি ক্রয় করতে পারেন।

কুয়াকাটায় অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ:

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য অনুযায়ী উপরোক্ত দর্শনীয় স্থান ছাড়াও কুয়াকাটায় আরও কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যেমন:

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে মোট কয়টি নদী আছে? পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী কোনটি?

কুয়াকাটার কুয়া, ঝাউ বন, রূপালী দ্বীপ, রাখাইন পল্লী, পাখি মারা পানি যাদু, ঝিনুক বীচ, শুকটি পল্লী, লাল কাঁকড়ার চর, লেবুর চর, কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান, স্বপ্ন রাজ্য, স্বপ্ন রাজ্য, চর গঙ্গামতী, আদিবাসী রাখাইনদের স্থাপত্য নিদর্শন, দুইশত বছরের পুরনো এবং দেশের সব থেকে বড় গৌতম বুদ্ধের বিশালাকৃতির মূতি। গৌতম বুদ্ধের এই ধ্যানমগ্ন মূর্তিটি ছত্রিশ ফুট উঁচু এবং এর ওজন প্রায় সাড়ে সাইত্রিশ মণ।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য-শেষ কথা:

সাধারণত যারা প্রায়ই ভ্রমণ করে থাকেন, তারা অনেক কিছুই জেনে গেছেন। কিন্তু এমন যারা আছেন, হয়ত প্রথমবার ভ্রমণ করবেন বা করতে যাচ্ছেন, তাদেরকে অবশ্যই সবকিছু সঠিক পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। আর যে কোন নতুন অভিজ্ঞতায় হয় তিক্ত স্বাদ দিয়ে, তাই সবকিছুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি থাকাটা অতি আবশ্যক। আজকের কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য বিষয়ক আলোচনায় একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে বিশেষ করে ভ্রমণের ক্ষেত্রে, যেখাবে যাবেন সেখানকার ভ্রমনের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে অবশ্যই জেনে যাবেন। এ ছাড়াও কিভাবে স্বল্প মূল্যে/চিপ রেটে চলাফেরা ও খাওয়া-দাওয়া করা যায়, কোন কোন জায়গায় যাবেন, কোথায় থাকবেন ইত্যাদি এমন অনেক বিষয় আছে যা জানাটা আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যে কোন ভ্রমণই একটি আনন্দের বিষয়, কিন্তু যদি কোন অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে যায়, সেক্ষেত্রে সব আনন্দই নিমিষে ম্লান হয়ে যায়। তাই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের শেষ ঠিকানা সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ বা যে কোন স্থানে ভ্রমণের আগে আপনাকে সচেতনতা, বিচক্ষণতা  ‍ও বুদ্ধিমত্তার সাথে চলতে হবে।

আরও পড়ুন: চিনি না গুড় স্বাস্থ্যের জন্য কোনটি ভালো

ধরুন, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের শেষ ঠিকানা সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে একান্তই যদি কোন সমস্যায় পড়েই যান, তাহলে অবশ্যই ০১৭৬৯৬৯০৭১৯ নম্বরে কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশের সাহায্য নিতে পারেন অথবা -০১৭৩৩৩৩৪১৫৫-নম্বরে জেলা প্রশাসক, কলাপাড়া উপজেলা অফিস হতে সহযোগিতার জন্য ফোন করতে পারেন। সবশেষে এতোক্ষণ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের শেষ ঠিকানা সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত বিষয়ক বর্ণনাতে যুক্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন জানাচ্ছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url