স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয়

অনেক সময় ফোন করতে গিযে দেখি চার্জ নাই বা শেষ হয়ে গেছে। তাই স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয় সেটা জানা অত্যন্ত জরুরী।
সাধারণত ফোন একটি অত্যন্ত জরুরি ও প্রয়োজনীয় ডিভাইস। নতুন একটি ফোন কিনে কিছুদিন ব্যবহারের পর তার চার্জ থাকে না বা ঘন ঘন চার্জ দিতে হয়, কিন্তু কেন? সুতরাং এমন বিষয়ে স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয় বা কিভাবে মোবাইলে দীর্ঘক্ষণ চার্জ রাখতে কি করণীয়, তা জানতে নিচের লেখাটি পড়তে হবে।

পোস্ট সূচিপত্র: স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয় (How to take care of your smartphone battery)
অতিরিক্ত চার্জ এরিয়ে চলুন
ফোন ক্রয়ের আগে ব্যাটারী যাচাই
যখন তখন পোনে চার্জ না দেয়া
অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলি বন্ধ করতে হবে
নিজস্ব চার্জার ব্যবহার
স্ক্রীন ব্রাইটনেস কমানো
ভাইব্রেশন বন্ধ রাখতে হবে
পাওয়ার সেভিং মোড ব্যবহার
সিল্ক সেটিংস বন্ধ
চার্জিংয়ের সময় ফোন ব্যবহার না করা
পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহারে সচেতনতা
সফটওয়্যার আপডেট
কিছু কিছু কমন অ্যাপস চালু না রাখা
স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয়-শেষ কথা

ফোনের ব্যাটারি ভালো বা দীর্ঘস্থায়ী রাখার উপায়গুলি অর্থাৎ স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয় তা নিম্নে বর্ণিত হলো:

অতিরিক্ত চার্জ এরিয়ে চলুন:

অনেকে আছে, যারা সারা রাত ফোন চার্জ দিয়ে রাখে। এতে করে ১০০% চার্জ হয়ে যাওয়ার পরও ফোনটি কিন্তু চার্জেই থাকে, যা লিথিয়ান-আয়ন ব্যাটারির জন্য ক্ষতিকর। এতে করে ব্যাটারির উপর চাপ পড়ে এবং ব্যাটারি ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে।

ফোন ক্রয়ের আগে ব্যাটারী যাচাই:

অর্থাৎ সাধারণত আমরা আমাদের পছন্দের ফোনটি ক্রয় করি বটে, তবে ব্যাটারির ক্যাপাসিটি কেমন তা কিন্তু দেখিনা।

আরও পড়ুন: iPhone 17 Air ফোনে যা যা থাকছে

আসলে ফোন কেনার আগে ব্যাটারির ক্যাপাসিটি কেমন তা অবশ্যই দেখে ক্রয় করতে হবে, কেননা এতে করে স্মার্টফোনটি কিভাবে ব্যবহার করা যায় তা বুঝতে পারবেন।

যখন তখন পোনে চার্জ না দেয়া:

সাধারণত ফোন যখন তখন চার্জ দেয়া মোটেই উচিত নয়। কারণ এটার উপরে ব্যাটারির দীর্ঘায়ু অনেকটাই কমে যায়। এখনকার বেশির ভাগ ফোনেই লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি থাকে, সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য ফোন চার্জ করার সময় একটা নির্দিষ্ট সময় থাকা উচিত। অবশ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, সব স্মার্টফোনই কিন্তু একটি সময়ে গিয়ে লো ব্যাটারি ওয়ার্নিং দেয়, তাই এটি দেখা মাত্রই ফোনটি চার্জে বসানো যেতে পারে।

অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলি বন্ধ করতে হবে:

সাধারণত ফোন ব্যবহার করার সময় আমরা অজান্তেই অনেক অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস চালু করি, যা বন্ধ করতে ভুলে যায়। কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকা এই সমস্ত অ্যাপস ব্যাটারির উপর চাপ সৃষ্টি করে থাকে, যার ফলে ব্যাটারীর চার্জ কমে যায়। এক্ষেত্রে ব্যাটারি সেভার মোডে ব্যবহার করলে ভালো হয়।

নিজস্ব চার্জার ব্যবহার:

প্রতিটি ফোনের একটা নিজস্ব চার্জার থাকে। আর এই চার্জার অনুযায়ী ফোনের ব্যাটারীর ক্যাপাসিটি নির্ধারণ করা থাকে। অর্থাৎ আপনার স্মার্টফোনটি দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য নিজস্ব চার্জার ব্যবহার করাই যুক্তিযুক্ত।

স্ক্রীন ব্রাইটনেস কমানো:

অনেকে ফোন ব্যবহারের কিছু কিছু সময়ে ব্রাইটনেস বাড়িয়ে দিয়ে থাকেন। কিন্তু পরবর্তীতে তা কমাতে ভুলে যান। আর এতে ব্যাটারির লাইফ কমে যাওয়ার অন্যতম বড় কারণ। তাই প্রয়োজন শেষ হলে অবশ্যই ক্স্রিন ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখতে হবে।

ভাইব্রেশন বন্ধ রাখতে হবে:

অনেক সময় আমরা প্রয়োজনে ভাইব্রেশন অন করি, কিন্তু সবসময়ে তা অন না করে প্রয়োজন শেষ হয়ে তা বন্ধ করা প্রয়োজন। সাধারণত রিংটোনের চেয়ে ভাইব্রেশনে বেশি ব্যাটারী অপচয় হয়ে থাকে।

পাওয়ার সেভিং মোড ব্যবহার:

সাধারণত স্মার্ট ফোনগুলোতে পাওয়ার সেভিং মোড থাকে। এই পাওয়ার সেভিং মোড সাধারণত ব্রাকগ্রাউন্ড পরিষেবাগুলি বন্ধ করে এবং স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কম রাখে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিপিইউ এর কর্মক্ষমতা হ্রাস করে ব্যাটারির লাইফ বাড়িয়ে দেয়।

সিল্ক সেটিংস বন্ধ:

ফোনে অনেক সময় ইমেইল ও সোশ্যাল মিডিয়া আপডেটের মতো ডেটা সিল্কগুলি প্রচুর শক্তি অপচয় করে থাকে। অবশ্য ওয়াইফাই সংযুক্ত থাকাবস্থায় ঘন ঘন সিল্ক বন্ধ রাখতে হবে।

চার্জিংয়ের সময় ফোন ব্যবহার না করা:

অনেকেই আছে যারা স্মার্টফোন চার্জে দিয়ে আবার সেটি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু ফোন চার্জে থাকাকালীন তা ব্যবহার করলে বাটারির ওপর চাপ পড়ে।

আরও পড়ুন: মাইক্রোসফট সব উইন্ডোজে এআই যুক্ত করছে

আর এতে করে কিন্তু ব্যাটারির চার্জ হতে সময় বেশি লাগে। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো যে, এতে করে ফোন তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটা বেড়ে যায়।

পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহারে সচেতনতা:

যারা সচরাচর বা নিয়ম করে মোবাইল ফোনটি চার্জ দিতে পারেন না, তারা পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করে থাকেন। এক্ষেত্রে পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহারের আগে এর সঠিক ভোল্টেজ ও ভালো মানের পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করা উচিত।

সফটওয়্যার আপডেট:

সাধারণত নতুন আপডেট সম্পন্ন হচ্ছে স্মার্টফোন গুলিতে ব্যাটারি ব্যবস্থার উন্নয়ন থাকে, যার ফলে নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেটে তা পারফরম্যান্স ভালো হয়।

কিছু কিছু কমন অ্যাপস চালু না রাখা:

সাধারণত স্মার্টফোনগুলোতে লোকেশন ট্র্যাক, ব্লুটুথ এবং ওয়াই-ফাই চালু না রেখে প্রয়োজন শেষে তা বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ এসব অ্যাপসে ব্যাটারি খরচ হয়ে থাকে।

স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয়-শেষ কথা:

সাধারণত আমরা প্রয়োজনেই কিন্তু ফোনটা কিনি, কিন্তু এর ব্যবহারটা সঠিক ভাবে করিনা বা করতে পারিনা। কারণ আমার ফোন আমি যেভাবেই ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারি, কিন্তু যদি নিয়মানুযায়ী ফোনটার যত্ন করি তাহলে ফোনটাও ভালো থাকে এবং তা টিকে অনেকদিন। যেমন আমরা ফোন অন করলে তা কোন সময়ের জন্যই বন্ধ করি না, কিন্তু নিয়মানুযায়ী তা একবার বন্ধ করতে হয়, তাতে ফোনের মধ্যে অনেক কুকিজ বা মেমোরিতে অনেক ফাইল চলমান থাকে তা ক্লিয়ার হয়। আবার অনেকটা অকারনে কাছে ভিতে দোকান হলে সেখানে গিয়ে বলে থাকি, ফোনের চার্জ বেশিক্ষণ থাকছেনা, খুব বেশিদিন আগে তা কেনা হয়, নতুন মোবাইলেও চার্জ থাকছেনা কেন? আসলে এই অভিযোগগুলি অনেকাংশেই ভিত্তিহীন। কারণ আপনি মোবাইলে যদি সারাক্ষণই ভিডিও দেখেন, তাহলে তো এর চার্জ ক্ষয় হবে বেশি। তাই স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয় বিষয়গুলি উপরে বর্ণিত নিয়মের মধ্যে করলে তা টেকসই হবে অনেকদিন।

আরও পড়ুন: কোটি কোটি মাছি ছড়িয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্র

যাইহোক, আজকের স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয় বিষয়ক আলোচনায় আমাদের স্মার্টফোনটি কিভাবে দীর্ঘদিন টিকে বা কি কি করলে এর ব্যাটারী অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে সে বিষয়গুলি সম্পর্কে অবগত হলেন। যদি উক্ত বিষয়ে কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকে তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারে। পরিশেষে স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয় বিষয়ের তথ্যমূলক আলোচনায় আপনার দীর্ঘক্ষণ সম্পৃক্ততার জন্য অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সবশেষে স্মার্টফোনের ব্যাটারি কিভাবে যত্ন নিতে হয় বিষয়ক পরামর্শগুলি আপনার নিকট প্রয়োজন মনে হলে অবশ্যই তা শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url