হলুদ ও গোলমরিচে কমবে বাতের ব্যথা

ডাক্তার, ঔষধ কত কিছুই না করি এই বাথের ব্যথায়। কিন্তু ঘরোয়াভাবে হলুদ ও গোলমরিচে কমবে বাতের ব্যথা সেটা আমরা অনেকেই জানিনা।

আগেকার দিনে সমাজ জীবনে এমন অনেক টোটকা ছিল, যেগুলো উপলক্ষ বা প্রয়োগ করে মানুষ সুস্থ্য হতো।, ঠিক তেমনই একটা হচ্ছে বাত ব্যথা, আর তাই হলুদ ও গোলমরিচে কমবে বাতের ব্যথা বিষয়ে জানতে নিচের লেখাটি সম্পুর্ণ পড়ুন।

বর্তমানে চিকিৎসাসেবার উন্নতির কারণে অনেক জটিল ব্যাধি সারানো সম্ভব হলেও কিছু কিছু অসুখ আছে, যা প্রায় অধুরাই থাকে। সাধারণত আমরা বাতের ব্যথার জন্য ব্যথার ঔষধ খাই, চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করি, কিন্তু তারপরেও তা থেকে পরিত্রাণ পাইনা। আসলে বাতের ব্যথা কেন হয়, কি কারণে হয়, কিভাবে এর উৎপত্তি ঘটে ইত্যাদি বিষয়ে নাই বললাম।

কিন্তু চলমান জীবনে আমাদের কিছু বদঅভ্যাস বা খাদ্যাভাসের কারণেও বাতের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। আমরা অনেকেই জানি, বাতের অনেক ধরণ আছে, যেমন-গেঁটে বাত, কটিবাত বা কোমর প্রদাহ, আম বাত, বাতজ্বর, সন্ধিবাত, পিরি বাত, সায়াটিকা/কোটি স্নায়ুশূল ইত্যাদি। এর মধ্যে বেশকিছু বাদ আছে যা ঔষধের মাধ্যমে সেরে যায়, কিন্তু এদের মধ্যে এমন কিছু বাত আছে যা ঔষধ খেয়েও কমেনা।

সাধারণত হলুদের প্রধান উপাদান হলো কারকিউমিন। অর্থাৎ এই কারকিউমিন শরীরের প্রদাহ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।

মূলত গোরমরিচে থাকা পিপারিন (Piperine) নামক এক ধরনের উপাদান। এই পিপারিন শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে। সর্বোপরি, ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের ঝুঁকি কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ ছাড়াও হজমে সহায়তা, পেটফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়া প্রতিরোধেও সহায়তা করে থাকে।

যদিও হলুদ ও গোলমরিচ আলাদা আলাদাভাবে উপকারী হলেও, একসঙ্গে তারা কার্যকারিতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।

যার কারণে হলুদ ও গোলমরিচে কমবে বাতের ব্যথা। চলুন জেনে নিই, হলুদ ও গোলমরিচ একসঙ্গে খেলে কি কি উপকার মিলে?

হলুদ ও গোলমরিচ যদি একসঙ্গে খাওয়া যায়, তাহলে হজম এনজাইম সক্রিয় হয় এবং এর ফলে গ্যাস বা পেটফাঁপার মতো সমস্যাগুলো কমে যায়।

সাধারণত হলুদের কারকিউমিন এবং গোলমরিচে থাকা পিপারিন দ্বৈতভাবে শরীরের বিভিন্ন ধরণের ব্যথা, যেমন-বাতের ব্যথা, অস্থিসন্দির ব্যথা বা আর্থ্রাইটিস জাতীয় ব্যথা কমাতে সহায়তা করে থাকে।

হলুদ ও গোলমরিচের গুড়া একসঙ্গে খেলে তা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, কোলেস্টেরণ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রক্ত জমাট বাধার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।

হলুদ ও গোলমরিচের দ্বৈত মিশ্রণ শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অর্থাৎ টক্সিন দূর করে বা দূষেণের প্রভাব হ্রাস করে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।

গবেষণা থেকে জানা যায়, হলুদের কারকিউমিন এবং গোলমরিচের পিপারিন একসঙ্গে শরীরের মেটাবলিজম শক্তি বাড়ায়, তার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে এবং ক্যানসারের সম্ভাবনাও কমাতে সাহায্য করে থাকে।

বিশেষজ্ঞগণের মতামত অনুসারে, সাধারণত রাতে ঘুমানোর আগে এক কাপ উষ্ণ দুধের মধ্যে হলুদ ও সামান্য গোলমরিচ মিশিয়ে পান করতে হবে। যদি আরেকটু বেশি উপকার পেতে চাইলে তাতে সামান্য মধু বা দারুচিনির গুঁড়োও যোগ করা যেতে পারে।

আসলে প্রকৃতির অবাধ বিচিত্রতায় কত কিছুই না লুকায়িত রয়েছে। সেই পরশ পাথর খোঁজার মত। সবকিছুই কিন্তু আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতেই বিদ্যমান। মানুষ বরাবরই প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়েই জয় করেছে সবকিছু। যেমন গ্রীষ্মকালে যে ফলগুলো হয়, কিন্তু শীতকালে সেই ফলগুলো হয় না, কেন? এরকম হাজারো প্রশ্ন আছে? আসলে যখন যেটার প্রয়োজন, প্রকৃতি ঠিক সেভাবেই আমাদের সামনে উপস্থিত হয়। তাই আজকের হলুদ ও গোলমরিচে কমবে বাতের ব্যথা ঠিক তেমনই একটি বিষয়। হলুদ ও মরিচ দুটোই কিন্তু শুদ্ধ প্রকৃতির উপকার, আমরা প্রতিনিয়তই বিশেষ করে রসনা বিলাসে ব্যবহার করে থাকি। আগেকার দিনে এবং বর্তমানেও সব ধরণের ঔষধই কিন্তু এই প্রকৃতি সৃষ্ট কোন না কোন কিছু থেকে আবিস্কার হচ্ছে বা হয়েছে। যাইহোক অনেক জ্ঞানের কথা বলে ফেললাম।

পরিশেষে আজকের হলুদ ও গোলমরিচে কমবে বাতের ব্যথা বিষয়ক আলোচনাটি যদি আপনারা না জেনে থাকেন, তাহলে নিজেও জানেন এবং অপরকে জানার জন্য শেয়ার করতে পারেন। আর, হলুদ ও গোলমরিচে কমবে বাতের ব্যথা বিষয়ের আলোচনায় আপনার দীর্ঘ উপস্থিতির জন্য অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এবং সেইসঙ্গে কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।