ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি?

ড্রাগন ফল বিদেশি হলেও বর্তমানে তা সারা বিশ্বে বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ হচ্ছে। তাই এই ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? তা জানতে হবে।
ড্রাগন ফলের উৎপত্তিস্থল হলো সেন্ট্রাল আমেরিকা। অর্থাৎ ১৩ শতকে সেন্ট্রাল আমেরিকায় এর চাষ শুরু হয়েছিল, যা বর্তমানে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এই ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? বা পুষ্টিগুণাবলী জানতে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

পোস্ট সূচিপত্র: ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? (What are the benefits and harms of Dragon Fruit?)
ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণাবলী
ড্রাগন ফল কয় প্রকারের হয়ে থাকে
ড্রাগন ফলের উপকারিতা
ড্রাগন ফলের অপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি?-শেষ কথা

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণাবলী:

ড্রাগন ফলটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল। এই ফলে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১ (থায়ামিন), ভিটামিন বি২ (রিবোফ্লাভিন), ভিটামিন বি৩ (নিয়াসিন), খনিজ (আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম), অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফাইবারসহ অন্যান্য উপাদানসমূহ।

ড্রাগন ফল কয় প্রকারের হয়ে থাকে:

ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? এর ক্ষেত্রে ড্রাগন ফল একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য এবং পুষ্টিগুণের কারণে তা ৪টি ভিন্ন রঙে দেখা যায়। যথা-হলুদ, বেগুনি, গোলাপী এবং লাল।

আরও পড়ুন: ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো

  • হলুদ ড্রাগন ফলটি মূলত গ্রীষ্মমন্ডলীয় ও মিষ্টি। এতে ভিটামিন সি ও ফাইবার রয়েছে প্রচুর।
  • বেগুনি ড্রাগন দেখতে ঠান্ডা এবং দারুণ স্বাদের হয়ে থাকে। এটিতেও ভিটামিন, ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে।
  • গোলাপী ড্রাগন ফলটি মিষ্টি ও কিছুটা ট্যাঞ্জি। এটি ত্বক এবং হজমের জন্য অত্যন্ত সহায়ক, আর এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদনসমূহ।
  • লাল ড্রাগন ফলটিতেও ভিটামিন সি এবং ফাইবার রয়েছে। তবে এতে লাইকোপেন নামক উপদান রয়েছে, যা হার্টের জন্য অত্যন্ত ভালো এবং ক্যান্সার প্রতিরোধের সহায়তা করে থাকে।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা:

  • ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? হিসেবে ড্রাগন ফলে প্রচুর ফাইবার থাকায় তা পেটের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যজনিত সমস্যা আছে তারা নিয়মিত খেতে পারেন এই ড্রাগন ফল।
  • ড্রাগন ফলে প্রিবায়োটিক উপাদান থাকায় তা আমাদের দেহে অন্ত্রে থাকা উপকারী জীবাণুদের পুষ্টি জোগায়। এতে করে পরিপাকতন্ত্র সুস্থ্য থাকে।
  • ড্রাগন ফলে প্রচুর আঁশ থাকায় তা রক্তের সুগার ও খারাপ চর্বি নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে থাকে।
  • এই ফলে প্রচুর আঁশ থাকার কারণে অনেকটা সময় পেট ভরা থাকে। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণেও এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  • ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে এই ড্রাগন ফলটিকে।
  • ড্রাগন ফলে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন উপাদান, যার ফলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং ছানি পড়ার ঝুঁকিও অনেকটা কমে যায়।
  • ড্রাগন ফল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে, যার ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটা হ্রাস পায়।
  • ড্রাগন ফলে ভিটামিন সি থাকায় তা নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটে।

আরও পড়ুন: আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার

  • চুলের ক্ষতি এড়ানোর ক্ষেত্রে প্রতিদিন দুধের সাথে ড্রাগন ফল খেতে পারেন, কারণ এতে করে চুল হবে নরম ও চকচকে।
  • সাধারণত যাদের বার্ধক্যজনিত আঘাত বা ব্যথা, হাড়ের রোগের ঝুঁকি ইত্যাদি রয়েছে, তাদের অবশ্যই নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে উপকারিতা পাওয়া যাবে। কেননা ড্রাগন ফলে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা হাড়কে শক্তিশালী করে।
  • গর্ভবতী নারীদের ড্রাগন ফল খাওয়া যেতে পারে, কেননা এতে করে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি, চর্বির উৎস এবং বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে কোষের পুনর্জন্মে সহায়তা করে থাকে।

ড্রাগন ফলের অপকারিতা:

  • যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই সতর্কতার সাথে ড্রাগন ফল খেতে হবে।
  • অত্যধিক ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে হতে পারে হজমে অস্বস্তি অর্থাৎ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল। কারণ এতে থাকা উচ্চ ফাইবার উপাদানের ফলে হতে পারে পেট ব্যথা বা ফোলা।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ড্রাগন ফল রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
  • যাদের কিডনিতে পাথর রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ড্রাগন ফল পরিহার করতে হবে। কারণ ড্রাগন ফলে রয়েছে অক্সলেট উপাদান, যা কিডনিতে পাথর তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
  • ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? হিসেবে অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে অনেক সময় ডায়রিয়া হতে পারে।
  • আবার লাল ড্রাগন ফল খেলে অনেক সময় প্রস্রাবের রং লাল হতে পারে।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি?-শেষ কথা:

মূলত ড্রাগন ফলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। অর্থাৎ ড্রাগন ফল নানাভাবে খাওয়া যেতে পারে। যেমন-টক দইয়ের সাথে ড্রাগন ফল, চাইলে সালাদ করে তা খাওয়া যেতে পারে, স্ন্যাকস হিসেবে অন্য ফলের সাথে মিশিয়েও ড্রাগন ফল খেতে পারেন। ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? হিসেবে ফলটি অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।

আরও পড়ুন: যেসব খাবারের কারণে মানসিক চাপ বাড়ে

যাইহোক আজকের আলোচনায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? বিষয়সহ এর বিভিন্ন পুষ্টিগুণাবলী, ড্রাগন ফলের প্রকারভেদ ইত্যাদি বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে, যা আপনাদের উপকারে আসবে। আর এই বিষয়ে যদি কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকে, তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন এবং সেইসঙ্গে ভালো লেগে থাকলে তা অন্যদের শেয়ার করতে পারেন। সবশেষে ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? বিষয়ক আলোচনাতে আপনার অংশগ্রহণের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url