আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার

আনারস একটি অত্যন্ত সুস্বাদু, রসে ভরপুর ও পুষ্টিকর ফল। তাই চমৎকার এই ফল আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার সমূহ আছে তা জানতে হবে।
মূলত আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে, যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যেমন-ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ, ফাইবার ও ব্রোমেলাইন নামক এক ধরণের এনজাইম রয়েছে। ফলে আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার তা জানতে নিচের লেখাটি পড়তে হবে।

পোস্ট সূচিপত্র: আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার (All the benefits of Pineapple)
আনারসের পুষ্টিগুণাবলী
আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার
আনারস খাওয়ার অপকারিতা
আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার-শেষ কথা

আনারসের পুষ্টিগুণাবলী:

পুষ্টিগুণাবলীর দিক থেকে আনারস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আনারসে আছে ভিটামিন বি-৬, ম্যাগনেশিয়াম, থিয়ামিন, রাইবোফ্লাভিন, ফোলেট, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং বিটা ক্যারোটিনের মত পলিফেনল।

আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার:

  • আনারসে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। তাই নিয়মিত আনারস খেলে তা ত্বকের অকাল বার্ধক্য রোধসহ ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়ে না। এ ছাড়াও আনাসরে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি থাকায় তা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে থাকে। অর্থাৎ নিয়মিত আনারস খেলে শরীরের সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।

আরও পড়ুন: হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় যে সব পুষ্টি উপাদান

  • আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার হিসেবে এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি। অর্থাৎ এ সমস্ত শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানগুলি ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
  • নিয়মিত আনারস খাওয়ার ফলে তা আলঝেইমার রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।
  • আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার বলতে এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরের আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে।
  • আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার বলতে এতে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশী থাকায় তা কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে থাকে। অর্থাৎ যাদের শরীরে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরলের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে তাদের নিয়মিত আনারস খেলে তা কমে থাকে।
  • আনারসে আছে ব্রোমেলিন যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • সাধারণত মাড়ি বা দাঁতের যে কোনো সমস্যা সমাধানে আনারস অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কেননা আনারসে থাকা ক্যালসিয়াম বিশেষ করে মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধানে তা অত্যন্ত সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে।
  • আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার বলতে আমাদের চোখের রেটিনা এবং অন্ধত্ব হওয়াজনিত রোগ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। অর্থাৎ গবেষণায় দেখা গেছে যে, আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া আমাদের রক্ষা করে। সাধারণত এ রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয়, যার ফলে আমরা ধীরে ধীরে অন্ধত্বের দিকে পতিত হই। আসলে আনারসে আছে বেটা ক্যারোটিন, যা প্রতিদিন খেলে আমাদের এ ধরণের রোগের সম্ভাবনা কমে যায় এবং এতে চোখ সুস্থ থাকে।
  • আনারসে রয়েছে প্রচুর ফাইবার এবং ফ্যাট অনেক কম। যার কারণে সকালের নাস্তায় বা সালাদে অথবা আনারসের জুস নিয়মিত খেলে আমাদের ওজন অনেকটাই কমে যাবে।
  • আনারস কিন্তু পুষ্টির একটি বড় উৎস। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন এ ও সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফসফরাস। আর এ সমস্ত উপাদানগুলি দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে দারুণ কার্যকরী। তাই প্রতিদিন অল্প পরিমাণে হলেও আনারস খাওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন: বিরল ধরণের অ্যালার্জি অ্যাফা-গ্যাল সিনড্রোম

  • আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার বলতে এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ, যা হাড়ের গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণে আনারস রাখা যেতে পারে।

আনারস খাওয়ার অপকারিতা:

  • অনেকেরই অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আছে। তাই আনারস খাওয়ার ফলে ঠোঁট ফুলে যাওয়া বা গলার মধ্যে সুরসরি বোধ হয়ে থাকে। যাদের এ জাতীয় সমস্যা বিদ্যমান তাদের ক্ষেত্রে যেটা করণীয়, তা হলো-আনারস কেটে আগে লবণ-পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে খেতে পারলে এ ধরণের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
  • আনারসে অনেক বেশি প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে। অর্থাৎ ২টি চিনির উপাদান, যেমন-সুক্রোজ এবং ফ্রুটোজ রয়েছে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকার।
  • কাঁচা আনারসে অনেক বেশি পরিমাণে এসিডিটি থাকে, যা মুখের ভিতর ও গলায় শ্লেষ্মা তৈরি করে। আবার অনেকের পেটে ব্যথাও হতে পারে। সুতরাং এরকম ক্ষেত্রে তাদের জন্য পাকা আনারস খাওয়া যেতে পারে।
  • সাধারণত আনারস দাতের জন্য উপকার করলেও অনেক ক্ষেত্রে তা ক্ষতিকর হিসেবে দেখা দেয়। যেমন যাদের দাঁতে কেভিটিস ও জিংজাইভেটিভস জনিত সমস্যা আছে, তাদের অবশ্যই আনারস না খাওয়াই ভালো।

আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার-শেষ কথা:

আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার হিসেবে উপরোক্ত গুণাবলী ছাড়াও এটি কিডনিতে পাথর হলে আনারস খেলে পাথর দূর করতে সাহায্য করে থাকে, ডিপথেরিয়া রোগের লক্ষণগুলি কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালনে করে থাকে, রক্তের স্বল্পতা দূর করতে, এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ধুমপানের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে থাকে, টিবি বা যক্ষ্মা রোগের জন্য আনারসের রস অত্যন্ত উপকারী, কুষ্ঠ রোগেও আনারসের উপকারিতা পাওয়া যায়, পেটে চুল চলে গেলে আনারস খেলে তা গলে যায়, আনারসের সঙ্গে গুড় মিশিয়ে খেলে পেটের বাত রোগ সেরে যায় এবং সর্বোপরি জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি ইত্যাদিতেও আনারস অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।

আরও পড়ুন: জ্বর থেকে দ্রুত সেরে উঠতে কি কি খাওয়া উচিত?

যাইহোক আজকের আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার বিষয়ক আর্টিকেল থেকে নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে বা জানতে পেরেছেন আনারসের বহু গুণাবলীর সম্পর্কে। আশাকরি উপরোক্ত তথ্যগুলি যদি আপনার নিকট ভালো লেগে থাকে তাহলে তা অন্যদেরও শেয়ার করতে পারেন এবং এ বিষয়ে কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকে তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। পরিশেষে আনারসে আছে যে সমস্ত উপকার বিষয়ক আলোচনায় আপনার দীর্ঘক্ষণ উপস্থিতি এবং আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমাদের সঙ্গেই থাকুন, পরবর্তী অন্য কোন বিষয়ের আর্টিকেল প্রকাশের জন্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Mithu Sarker
Mithu Sarker
আমি মিঠু সরকার, দুই বছর ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। ব্লগ পোস্ট, ওয়েব কনটেন্ট ও মার্কেটিং রাইটিংয়ে আমার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে অনলাইন সফলতা গড়াই আমার লক্ষ্য।