চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে

আমাদের যে কোন কাজই চোখ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কারণে চোখের অত্যধিক পরিশ্রম হয়ে থাকে। তাই দরকার চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে সেটা জানাা।
অনেকেই সারাদিন কম্পিউটারে কাজ করে, কেউ কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে, আবার অনেকে টিভি দেখেই দিন পার। আর এই সমস্ত কারণে চোখে ক্লান্তি ও শুষ্কতা তৈরি হতে পারে। তাই আজকের আর্টিকেলে চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে তা জানতে নিচের লেখাগুলো পড়তে থাকুন।

পোস্ট সূচিপত্র: চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে (How to relieve dry and tired Eyes)
ভূমিকা
স্ক্রিনের ব্রাইটনেস এবং কনস্ট্রাস্টে সামঞ্জস্য
বড় ফন্টের ব্যবহার
পর্যাপ্ত বিশ্রাম
পানির ঝাপটা
সানগ্লাস ব্যবহার
চোখের পাতা ফেলতে হবে
চোখের পলক ফেলা
প্রচুর পানি পান করতে হবে
সবুজ গাছপালা বা উদ্ভিদ দেখা
পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা
হাতের তালুর উষ্ণতা চোখে দিন
চোখের হালকা ব্যায়াম
ভিটামিন এ ও ডি জাতীয় খাদ্য
চোখের ব্যায়াম
চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে-পরিশেষে

ভূমিকা:

দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে কোন কাজ করলে চোখের পেশিগুলো ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অর্থাৎ দীর্ঘক্ষণ চোখের উপরে চাপ পড়ার কারণে কপালের দুই পার্শ্বে, মাথার পেছনে অথবা ঘাড়ে ব্যথা এবং এর সাথে চোখে শুষ্কতার অনুভবও সৃষ্টি হতে পারে।

আরও পড়ুন: মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ ধরণের সমস্যার নাম অ্যাসথেনোপিয়া। আসলে এ ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার মূল কারণ হলো, দীর্ঘক্ষণ ধরে গাড়ি চালালে, একটানা অনেক সময় ধরে কম্পিউটার বা টিভি দেখলে, আবার দীর্ঘসময় ধরে ছোট ছোট অক্ষর পড়লে বা মোবাইল নিয়ে দীর্ঘ সময় কাটালে। অর্থাৎ অনেক সময় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, মানুষ চোখের পলক ফেলতেও অনেকে ভুলে যায়। তাই আজকের আর্টিকেলে চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে সে সম্পর্কিত পরামর্শগুলি নিম্নে বর্ণিত হলো।

চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে:

স্ক্রিনের ব্রাইটনেস এবং কনস্ট্রাস্টে সামঞ্জস্য:

আসলে যারা দীর্ঘক্ষণ ধরে ডেস্কটপ, ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আসছেন, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই স্ক্রিনের আলো এমনভাবে ঠিক করতে হবে, যাতে তা চোখের জন্য আরামদায়ক ঘটে থাকে।

বড় ফন্টের ব্যবহার:

কম্পিউটারে কাজ করার সময় জুম বাড়িয়ে লেখাগুলো বড় করে দেখে কাজ করলে তা চোখের উপরে অনেকটা চাপ কমবে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম:

চোখের ক্লান্তি দূর করতে অবশ্যই বিরতি নিয়ে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখকে বিশ্রাম দিতে হবে। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।

পানির ঝাপটা:

চোখের ক্লান্তি দূর করতে অনেক সময় পানির ঝাপটা দিতে পারলে তা উপকারে আসে। এক্ষেত্রে আপনি যদি সকালে ঘুম থেকে উঠে ও রাতে ঘুমানোর আগে অন্তত ২০ বার করে চোখে পানির ঝাপটা দেয়া যেতে পারে।

সানগ্লাস ব্যবহার:

সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি এবং সেইসাথে ধুলোবালি হতে চোখকে রক্ষা করতে বাইরে গেলে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করা উচিত হবে।

চোখের পাতা ফেলতে হবে:

অনেকেই আছেন, যারা একটানা দীর্ঘক্ষণ কোনদিকে না তাকিয়েই কাজ করে যেতে থাকেন। এটা করা যাবে না।

আরও পড়ুন: কথা না বলে চুপ থাকাটা খুবই জরুরী

কারণ দীর্ঘক্ষণ কোনকিছুর উপর একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকায় চোখে শুষ্কতা তৈরী হয়। তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে মাঝে মধ্যে এদিক-সেদিক মাথা ঘুরিয়ে চোখের বিশ্রাম দিয়ে কাজ করতে হবে।

চোখের পলক ফেলা:

অর্থাৎ দীর্ঘক্ষণ কাজ করতে থাকলে তাতে চোখের পলক পড়ার সম্ভাবনা কমে যেতে পারে। আর এর ফলে চোখে চুলকানি, জ্বালাপোড়া ভাব হতে পারে। এ ছাড়াও চোখের পাতায় তৈলাক্তকরণ জমা হয়। তাই এসবক্ষেত্রে কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখের পলক ফেলতে হবে।

প্রচুর পানি পান করতে হবে:

সাধারণত শরীরে পানির ঘাটতি চোখে প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এমন হয় যে, কাজের চিন্তায় বা চাপে পানি কম খাওয়া হয়ে যায়। যার প্রভাব দেখা যায় কোন এক সময়ে। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

সবুজ গাছপালা বা উদ্ভিদ দেখা:

চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে বলতে কাজের স্থানে বা দৃষ্টি সীমানার মধ্যে কোন সবুজ জাতীয় উদ্ভিদ রাখতে পারেন। যাতে করে আপনার কাজের ফাঁকে ফাঁকে মাথা ঘুরিয়ে সবুজ উদ্ভিদ বা গাছপালা দেখা যেতে পারে, এতে করে চোখ ভালো থাকবে।

পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা:

পড়াশুনার সময় বিশেষ করে আলোর উৎসটি যেন আপনার মাথার পেছনের দিকে থাকে, যাতে সেই আলোটি বই বা খাতার ওপর সরাসরি পড়ে। আবার টিভি দেখার সময় অবশ্যই ঘর অন্ধকার না করে হালকা মৃদু আলোর ব্যবস্থা রাখতে পারেন।

হাতের তালুর উষ্ণতা চোখে দিন:

অনেক সময় চোখে চুলকালে আপনার দু’হাতের তালু ঘষে গরম করে তা চোখের বন্ধ পাতার ওপর অন্তত ১০ সেকেন্ড রাখতে পারেন, এতে করে চোখ শিথিল হবে।

চোখের হালকা ব্যায়াম:

কম্পিউটারে কাজের ফাঁকে চোখ বন্ধ করে আস্তে আস্তে খুলুন এবং চারিদিকে ধীরে ধীরে দৃষ্টি ঘোরান। এতে করে চোখের ওপর চাপ অনেকটাই কমবে।

ভিটামিন এ ও ডি জাতীয় খাদ্য:

যদি এমনটা হয় যে, আপনার কাজের জন্য অতিরিক্ত চোখের পরিশ্রম করতে হচ্ছে, সেক্ষেত্রে খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখুন, গাজর, ডিমের কুসুম, কলিজা বা দুগ্ধজাতীয় খাবার।

চোখের ব্যায়াম:

চোখের ক্লান্তি দূর করার ক্ষেত্রে চোখের ব্যায়াম একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন-কথক নৃত্যের একটি ভঙ্গি আছে, যেখানে নাচের ভঙ্গিমায় ১টি আঙুলকে বিভিন্ন ভাবে চারিদিকে ঘুরিয়ে দেখা হয়ে থাকে এবং মজার বিষয় হলো এই আঙুলটির দিকেই কিন্তু দৃষ্টি নিবেন্ধ থাকে। এ ছাড়াও চোখের বিভিন্ন ব্যামায়ের জন্য ওয়েবসাইট (যেমন-https://www.dragarwal.com/bn/blog/eye-wellness) ও ইউটিউব তো আছে। প্রয়োজনে এগুলো ওয়েবসাইট থেকে চোখের ব্যায়ামগুলো জেনে নিতে পারেন।

চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে-পরিশেষে:

চোখ একটি সেনসিটিভ ইস্যু। অর্থাৎ, চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে এর ক্ষেত্রে চোখে যদি অতিরিক্ত শুষ্কতা, জ্বালা বা যে কোন ধরনের অসুবিধা বোধ করেন, তাহলে অবশ্যই চোখের চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। কারণ পৃথিবীকে দেখার জন্যই একমাত্র চোখই অবলম্বন, তাই চোখ নিয়ে কোন রকমের অবহেলা করাটা ঠিক নয়। আসলে চোখ নিয়ে আমরা অনেকটাই অবহেলা করে থাকি, যেমন অল্প আলোতে পড়াশুনা করা, বাইরে বের হলাম, হঠাৎ বাতাসে কিছু ধূলিকণা চোখে-মুখে এসে পড়লো এবং কিছুক্ষণ পর আমরা চোখ চুলকিয়ে থাকি। আসলে এমন কাজ না করে আমরা যদি সঙ্গে সঙ্গে পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতাম, তাহলে চোখের মধ্যে জমে থাকা ধূলিকণা গুলো পানির সাথে বেরিয়ে যেতো। সুতরাং এ রকম অজস্র ভুল আমরা প্রতিদিন কোন না কোন ভাবে করে থাকি।

আরও পড়ুন: ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি?

আজকের চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে হিসাবে উপরে বর্ণিত নানা পরামর্শগুলি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে তা শেয়ার করতে পারেন এবং গুরুত্বপূর্ণ কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকে তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। চোখকে ভালো রাখতে যেমন আপনি সকালে আপনি ঘুম থেকে উঠে যদি সবুজ গাছপালার দিকে অন্তত ৫-১০ মিনিট তাকিয়ে থাকেন, তাহলে এটি চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। অর্থাৎ এ রকম অনেক বিষয়েই আমরা জানি, কিন্তু সঠিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করিনা বা ভুলে যায়। যাইহোক সবশেষে আজকে চোখের শুষ্কতা এবং ক্লান্তি দূর করা যায় কিভাবে বিষয়ক আর্টিকেলে আপনার উপস্থিতির বা অংশগ্রহণের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

বি,দ্র.: উপরের বর্ণনাগুলি শুধুমাত্র পরামর্শক, কোন চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url