মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত

মানসিক চাপ এটা যেন আমাদের জীবনের সাথে কারণে-অকারণে জড়িয়ে গেছে। কিন্তু কীভাবে বা এই মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত সেটা জানা দরকার।
চলমান ব্যস্ত জীবনে নানা কারনে প্রতিনিয়তই আমাদের নতুন কোন না কোন পরিস্থিতি বা বাস্তবতার সাথে পরিচয় ঘটে যায়। যেমন-কাজের চাপ, সাংসারিক চাপ, পরিবেশ-পরিস্থিতির চাপ ইত্যাদি নানা চাপে আমাদের থাকতে হয়। এতোসব মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত সেটা যদি আয়ত্ত করতে না পারি, তাহলে মসৃণ পথ চলাই আমাদের বাধা সৃষ্টি হবে।

পোস্ট সূচিপত্র: মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত (What to do to Reduce Stress)
ভূমিকা
নিয়মানুযায়ী ঘুমানো
হাসতে হবে
শারীরিক পরিশ্রম
সুস্থ্য থাকতে হবে
খেলাধুলা বা ব্যায়াম করা
পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটান
শান্ত পরিবেশে অবস্থান
গান গাওয়া
বাড়ির কাজ করা
ভ্রমণ করা
ফলের রস খেতে পারেন
মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত-পরিশেষে

ভূমিকা:

আসলে আমরা প্রত্যেকেই চাই মানসিকভাবে ফ্রি থাকতে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কি তা হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে কর্টিসল ও অ্যাড্রোলিন নামক স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণের কারণে তা শরীর ও মনে নানা ধরণের প্রভাব ফেলে।

আরও পড়ুন: অতিরিক্ত কাঁচা পেঁয়াজ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে

এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, যেমন-রক্তচাপ বৃদ্ধি, ঘুমের সমস্যাসহ হার্টস্পিড এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও বেড়ে যায়। কিন্তু এতোসব স্ট্রেস কি এড়ানো যায়। না যায়না, তবে কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে তা অনেকটা নিয়ন্ত্রণেও রাখা যেতে পারে। তাই মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত বা কি ধরণের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত সে বিষয়েই কিছু কার্যকর টিপস নিম্নে প্রদত্ত হলো।

নিয়মানুযায়ী ঘুমানো:

আসলে বিভিন্ন বদ অভ্যাসের কারণে প্রায়ই আমাদের রাতে ঘুমাতে দেরী হয়, আর সকালে নির্ধারিত সময়ে উঠার কারণে দৈনিক যে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত তা আমরা করতে পারিনা। ফলে ঘুমের ঘাটতি থেকেই যায়। জেনে রাখা ভালো, প্রতিদিন যদি ৮ ঘন্টা ঘুমাতে পারলে মানসিক চাপ অনেকটা কমতে সহায়তা করে।

হাসতে হবে:

মানসিক চাপ এড়াতে আপনাকে হাসি-খুশী বা হাসতে হবে। কেননা, হাসিতে শরীরের রক্তপ্রবাহ বাড়ে এবং তার ফলে অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে যায় এবং শরীর চাঙা হয়ে উঠে।

শারীরিক পরিশ্রম:

এক জায়গায় অনেকক্ষণ বসে থেকে কাজ করলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়, এক্ষেত্রে হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে বা শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে মানসিকভাবে সুস্থ্য থাকা যায়। অর্থাৎ অফিসে বা কাজের ক্ষেত্রে না হলেও এর বাইরে অবসর সময়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। তাতে মানসিক চাপ কম হয়ে থাকে।

সুস্থ্য থাকতে হবে:

অর্থাৎ মানসিক চাপ এড়াতে নিজেকে সুস্থ্য থাকতে হবে। কারণ শরীর অসুস্থ্ থাকলে কিন্তু মানসিক চাপ বাড়ে।

খেলাধুলা বা ব্যায়াম করা:

মনকে প্রফুল্ল রাখতে অবশ্যই অবসর সময়ে কোন না কোন খেলাধুলা বা ব্যায়াম করা যেতে পারে, তাতে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায়।

পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটান:

অত্যাধিক মানসিক চাপ এড়াতে সাধারণত কুকুর বা বিড়ালের মতো প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানো যেতে পারে। 

আরও পড়ুন: হলুদ ও গোলমরিচে কমবে বাতের ব্যথা

কেননা, প্রাণীর সাথে সময় কাটারে সেরোটোনিন এবং প্রোরেকটিন হরমোন নিঃসরণ বাড়ে, যাতে মানসিক চাপ কমে থাকে।

শান্ত পরিবেশে অবস্থান:

অনেক সময় শব্দ বা কোলাহলে মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে। তাই এই ধরণের মানসিক চাপ এড়াতে অবশ্যই শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থান করলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যেতে পারে।

গান গাওয়া:

গান বা সঙ্গীত একটি মনের ব্যাপার। তাই মানসিক চাপ কমাতে আপনি মন খুলে গান গাইতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার স্বর বা সুর ভালো না হলেও বা কেউ সমালোচনা করলেও আপনি আপনার মন খুলে গান গাইতে থাকুন, এতে করে মানসিক চাপ কমে থাকে।

বাড়ির কাজ করা:

মানসিক প্রশান্তি পেতে চাইলে নিজেকে বাড়ির যে কোন কাজে ব্যস্ত রাখুন। তবে অবশ্যই ঝগড় বা রাগারাগি নয়। আপনি চাইলে পরিবারের সবাইকে চমক দেবার জন্য নতুন কোন রেসিপি তৈরী করতে পারেন।

ভ্রমণ করা:

মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম পথ হলো ভ্রমণ করা। অর্থাৎ ভ্রমণে মানসিক চাপ থেকে অব্যাহতি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে দূরে কোথাও না যেতে পারলে নিকটস্থ বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়-স্বজনের সময় কাটাতে পারেন। এতে করে পরস্পরের সাথে রিক্রিয়েশনের মাধ্যমে মনের উপর থেকে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যাবে।

ফলের রস খেতে পারেন:

মানসিক চাপ বা মেন্টাল স্ট্রেস কমানোর ক্ষেত্রে ভিটামিন সি জাতীয় ফলের রস খেতে পারেন। কেননা, ভিটামিন সি যুক্ত ফলের রসে কর্টিসল হরমোন কমিয়ে তা মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে থাকে।

মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত-পরিশেষে:

সাধারণত মানসিক স্ট্রেস একেবারে দূর করা না গেলেও উপরোক্ত অভ্যাসগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে মানসিক চাপ থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকতে পারবেন। একটা প্রশ্ন করি, যার উত্তরটা আপনাদের সকলেরই জানা-অভ্যাসটা আপনার তৈরি, না অভ্যাসের তৈরি আপনি। সুতরাং আজকে মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত তা আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে আশাকরি বুঝতে ও জানতে পেরেছি।

আরও পড়ুন: মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে

মূলত সবার অবস্থান এক রকম হয়না, আবার অর্থ থাকলেই যে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব তাও হয়ে উঠেনা। তাই মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত বিষয় সম্পর্কে কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। পরিশেষে আজকের মানসিক চাপ কমাতে কি করা উচিত বিষয়ক আলোচনায় আপনার দীর্ঘক্ষণ উপস্থিতির জন্য অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url