মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে

চলমান জীবনে নানান ব্যস্ততার মাঝে হঠাৎ করেই কোন মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে, তা জানতে নিচের লেখাটি পড়ুন।
সুন্দর এই ধরিত্রীকে সবাই চাই ভালো থাকতে, সুখী বা খুশী সুন্দর থাকতে। কিন্তু এই খুশী থাকার প্রয়াসও মানুষের মন খারাপের কারণ হতে পারে। সে কারণেই আজকে মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে বিষয়টি আলোচনা করা যেতে পারে।

পোস্ট সূচিপত্র: মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে (What can cause people to be upset?)
ভূমিকা
পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন
একঘেয়েমী জীবনযাপন
মানসিক উত্তেজনা
মোবাইল ব্যবহারে আসক্তি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি
মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে-পরিশেষে

ভূমিকা:

আসলে জীবন চলার পথে মানুষের নানা রকমের প্রত্যাশা পূরণের আকাঙ্খা, ভবিষ্যৎ চিন্তা, ব্যক্তি জীবন, পছন্দ-অপছন্দের বিষয়, নিজের প্রতি হতাশা, ক্লান্তি, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ না করা এবং সর্বোপরি এক পর্যায়ে গিয়ে নিজের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি সহ অসংখ্য বিষয়ের সাথে মানবজাতির সম্পৃক্ততা।

আরও পড়ুন: স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণসমূহ ও প্রতিকার

আর প্রতিদিনের এই বিষয়গুলো কোন না কোন ভাবে মানুষের মনের ওপর নেগেটিভ প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলশ্রুতি মানুষের মন খারাপ। অর্থাৎ মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে এর অন্যতম উপমাগুলি হতে পারে রিক্রিয়েশন অথবা রিফ্রেশমেন্ট বা মনের কথা বলবার প্রকৃত মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকা। তাই আমাদের জানতে হবে, মন ভালো রাখার ক্ষেত্রে প্রতিদিনের কোন কোন অভ্যাসগুলি পরিবর্তন করা দরকার।

পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন:

সাধারণত একজন মানুষের দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমানোটা জরুরি। কিন্তু অনেকেই আছে, যারা কিছু বিষয়ে অযথা সময় নষ্ট করে ঘুমাতে দেরি করে থাকে। যেমন-রাত জেগে কোন সিরিয়াল বা মুভি দেখা, মোবাইল ব্যবহার, ফোনে কথা বলা ইত্যাদি বিষয়গুলোর কারণে অনিদ্রা ঘটে, যার প্রভাব তা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে থাকে। তাই মন ভালো রাখতে সর্বাগ্রে অনিদ্রাজনিত সমস্যাগুলি পরিবর্তন করাটা অত্যন্ত জরুরি।

একঘেয়েমী জীবনযাপন:

ঘোড়ার মতো ছুটে চলার জীবনে মাঝে মধ্যে লাগাম টানতে হবে। অর্থাৎ কাজ কিন্তু সারা জীবনই থাকবে, তবে সবসময়ে কাজের মধ্যে ডুবে থাকলে জীবনটা হয়ে যাবে একঘেয়েমী। তাই মাঝে মধ্যে ঘুরে বেড়াতে হবে, দরকার হলে সময় বের করেই দূরে কোথাও ঘুরে আসতে পারেন। আসলে একই রকম পরিবেশ, পরিস্থিতি বা একই ধরণের জীবন মানুষের মনে প্রভাব ফেলে থাকে, যার কারণে কোন না কোন সময়ে একঘেয়েমীপনা হাজির হয়ে যায়। মনে রাখবেন, শরীর ও মন আপনার, তাই একে ভালো রাখারও অন্যতম দায়িত্ব কিন্তু আপনারই।

মানসিক উত্তেজনা:

অর্থাৎ মন ভালো রাখতে গেলে কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যে অবহেলা করা একদমই চলবেনা। আপনার মনের মধ্যে যদি উদ্বেগের কোন মেঘ জমাট বেঁধে থাকে, তাহলে তা অতিসত্ত্বর দূর করুন।

আরও পড়ুন: আপনার সঙ্গী মিথ্যা বলছে কি না? তা বুঝবেন কিভাবে

এক্ষেত্রে আপনার বিশ্বস্ত, নিকটজন অথবা যাকে বললে হালকা হতে পারবেন, এমন কাউকে বলে ফেলুন। অযথা মনের মধ্যে কোন উদ্বেগ বা উত্তেজনা চেপে রাখলে তা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং ফলস্বরূপ তিলে তিলে কষ্ট পেতে হয়। এটা মোটেই কোন বুদ্ধিমান মানুষের কাজ নয়।

মোবাইল ব্যবহারে আসক্তি:

অনেকে আছেন, যারা সারাদিন কর্মব্যস্ত থাকার পরও রাত্রে শোয়ার আগে মোবাইল ব্যবহারে ব্যস্ত হয়ে যায়। আবার অনেকেই আছেন, অনেক রাত জেগে অনলাইন গেমস খেলেন, ভিডিও দেখে থাকেন। মূলত এই ডিজিটাল দুনিয়ার প্রতি আসক্তিতে এবং অনিদ্রজনিত কারণে মনের উপর প্রভাব ফেলে থাকে, যার ফলে মন খারাপ হতে পারে। সাধারণত আমরা কিন্তু খারাপ জিনিসটাই গ্রহণ করতে পছন্দ করি বেশি। ডিজিটাল মিডিয়াতে পজিটিভ-নেগেটিভ দুই ধরনের বিষয়ই থাকে, কিন্তু আমরা নেগেটিভ বিষয়গুলিই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। এর থেকে বিরত থাকার চেষ্টা/অভ্যাস করুন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি:

মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে এর অন্যতম কারণ হতে পারে, সারাদিন কর্মব্যস্ত থাকার ফলে, অবশেষে রাত্রে যখন সময় পাই, তখন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা টুইটারে বন্ধু খোঁজার চেষ্টা করি। অথচ সারাদিনই আমরা ফোনের সংস্পর্শে থেকেও পরিবার-পরিজনদের খোঁজ নিতেই ভুলে যায়। এ বিষয়ে মনোবিদরা বলেন, মানুষ বর্তমানে ডিজিটাল দুনিয়ায় বন্ধুত্ব খুঁজে বেড়ায়, যা মোটেই সঠিক নয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল দুনিয়ায় বন্ধুত্ব না খুঁজে বাস্তবে মানুষের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে হবে। অর্থাৎ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, নিকটতম শুভাকাঙ্খীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ বা দেখা-সাক্ষাত না হলে তা সম্পর্কে চির ধরে এবং এক পর্যায়ে গিয়ে কিন্তু মানুষ একাকি হয়ে যায়।

মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে-পরিশেষে:

মানুষের মন খারাপ নানা কারণে হতে পারে, যেমন-কেউ আমাকে কড়া কথা বললো, তাতে আমার মন খারাপ হয়ে গেলো; বাবা-মা ছেলেকে বকুনি দিল, ছেলের মন খারাপ হয়ে গেলো; একজন বন্ধু আরেক বন্ধুকে সময় দিয়ে এলোনা, বন্ধুর মন খারাপ হয়ে গেলো। সুতরাং এভাবে বিশ্লেষণ করলে বা দেখলে আমাদের পদে পদে মন খারাপের অনেক কারণ ঘটতে পারে। কিন্তু মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে বলতে এর সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে। অর্থাৎ ক্ষণে ক্ষণে বা বিভিন্ন কারণে-অকারণে বা হঠাৎ কোন ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে মন খারাপ এমন বিষয়গুলো বয়স/আবেগের কারণে হতে পারে, যা কিছু মুহুর্ত বা সময়ের পরে ঠিক হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: ভালো থাকার জন্য কী করতে হয়

কিন্তু মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে তার অর্থ ব্যাপক। কারণ প্রাত্যহিক জীবনে মানুষ ধীরে ধীরে পরিপক্ক হয়ে ওঠে, আর এর সাথে যুক্ত হয় নানাপ্রকার দায়বদ্ধতা, বন্ধন, দায়িত্ব-কর্তব্য ইত্যাদি নানা বিষয়। কিন্তু এই ব্যস্তময় জীবনটা আমরা এমনভাবে গড়ে ফেলি, যেখানে ভালোবাসার প্রকাশ, অনুভূতি, আনন্দের বহিঃপ্রকাশ এমন বিষয়গুলো থেকে আমরা ধীরে ধীরে সরে যেতে থাকি, যার কারণগুলি উপরে বর্ণিত হয়েছে। তাই কর্মক্ষেত্রে, পরিবার-পরিজনের সাথে, নিকটতম বা বাইরের কারো সাথে মনের রিক্রিয়েশন করতে হবে। মনে রাখবেন, মন ও শরীর দুটো একই অঙ্গে থাকলেও তা সম্পূর্ণই আলাদা। শুধু শরীর ভালো নিয়ে যেমন চলাফেরা করা যায় না, আবার শরীর খারাপ, কিন্তু মন ভালো করেও চলাফেরা করা যায় না। যাইহোক আজকের মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে বিষয়ক আর্টিকেল সম্পর্কে যদিও আপনারা বাস্তব জীবনে বা আগে থেকেই অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করে রেখেছেন, তারপরেও নতুন কিছু জানতে পারলে আমাদের ভালো লাগবে। বর্ণিত বিষয়গুলির সম্পর্কে আপনাদের কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। সেইসঙ্গে মানুষের মন খারাপের কারণ কি হতে পারে বিষয়ক আলোচনার সাথে দীর্ঘক্ষণ যুক্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Mithu Sarker
Mithu Sarker
আমি মিঠু সরকার, দুই বছর ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। ব্লগ পোস্ট, ওয়েব কনটেন্ট ও মার্কেটিং রাইটিংয়ে আমার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে অনলাইন সফলতা গড়াই আমার লক্ষ্য।