পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে

পুরুষদের একটা নির্দিষ্ট সময়ে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে, কিন্তু কোন সময়ে তা কমে সেটা পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যায় আর্টিকেল থেকে জানতে হবে।
পুরুষদের দেহে শুক্রাণু উৎপাদন কখনো বন্ধ হয় না। অর্থাৎ পুরুষরা যে কোনো সময়ে বাবা হতে পারেন। তাই পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে বা কোন সময়ে বাড়ে তা জানতে নিচের লেখাটি পড়তে হবে।

পোস্ট সূচিপত্র: পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে (At what age does sperm count decrease in Men?)
ভূমিকা
শারীরিক পরিবর্তনজনিত কারণ
জীবনযাত্রার প্রভাবজনিত কারণ
পুরুষের শুক্রাণু কম থাকার লক্ষণসমূহ
শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে সহায়ক খাদ্যগুলি
পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে-পরিশেষে

ভূমিকা:

একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর নারীদের দেহে ‘মেনোপজ’ আসে, অর্থাৎ ডিম্বাণু উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে এমনটা হয়না। অর্থাৎ পুরুষদের কখনোই শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধ হয় না। তবে একথা সত্য যে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে পুরুষদেরও প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়।

আরও পড়ুন: অ্যাভোক্যাডো ফলের উপকারিতা ও গুনাগুণ

অর্থাৎ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের শুক্রাণুর গুণগত মান ও সংখ্যা কমতে থাকে। যাইহোক এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও এর পেছনে রয়েছে কিছু বিজ্ঞানসম্মত কারণ। সুতরাং পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে থাকে তা বিশদ আকারে জানতে নিচের বর্ণনাগুলি পড়ুন।

শারীরিক পরিবর্তনজনিত কারণ:

মুলত শুক্রাণুর পরিবর্তন ঘটে শারীরিক পরিবর্তনের কারণে।
  • শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস: পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে তার কারণ হলো পুরুষদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন উৎপাদন কমতে থাকে, আর এর ফলে শুক্রাণুর সংখ্যাও কমে যায়। সাধারণত পুরুষদের শুক্রাণুর গুণগত মান সর্বোচ্চ বজায় থাকে ২৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে, অর্থাৎ ৩০ বছরের পর থেকে তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। আবার কোন এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়স পর্যন্ত শুক্রাণুর মান বজায় থাকে।
  • শুক্রাণুর গুণগত মান হ্রাস হওয়া: পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুক্রাণুর গুণগত মানও কমে যায়। এক্ষেত্রে শুক্রাণুর ডিএনএ এর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে বেড়ে যায়। অর্থাৎ বেশি বয়সে বাবা হলে সদ্যোজাত সন্তানের জন্ম থেকেই হার্টের সমস্যা, খিঁচুনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার স্নায়ুতন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া বা শিশুর জন্মকালীন ওজন বা বার্থওয়েটও কম হতে পারে। তবে একথাও ঠিক যে, যদি কোন পুরুষ ৫০ বছর বয়সে সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা রাখেন, সেক্ষেত্রে উক্ত সন্তানের নানা জটিলতার ঝুঁকি থেকেই যায়।
  • অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যাদি: সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে সৃষ্টি হয় নানারকম জটিলতা। অর্থাৎ এ সময়ে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের কারণেও দেখা দিতে পারে নানা স্বাস্থ্যগত সমস্যা। অর্থাৎ এই ধরনের সমস্যাগুলি প্রজনন ক্ষমতাকে ব্যাহত করে থাকে।

জীবনযাত্রার প্রভাবজনিত কারণ:

ধুমপান: অতিরিক্ত ধুমপান করার ফলে তা শুক্রাণুর ওপর প্রভাব পড়ে এবং শুক্রাণু কমিয়ে দেয়।
অ্যালকোহল: অর্থাৎ অ্যালকোহল সেবনের ফলে তা শুক্রাণুর গুণগত মান কমিয়ে দিতে পারে।

আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কি নিরাপদ - কোন সময়ে সহবাস করা উচিত নয়

অতিরিক্ত দৈহিক স্থুলতা: সাধারণত অতিরিক্ত দৈহিক স্থুলতা বা মোটা হয়ে গেলে তা শুক্রাণুর গুনগত মান কমিয়ে দিতে পারে।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ: আসলে অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে শুক্রাণুর উৎপাদন কমে যেতে পারে।

পুরুষের শুক্রাণু কম থাকার লক্ষণসমূহ:

আসলে পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে বা কম শুক্রাণু থাকার উপসর্গগুলি একেক পুরুষের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। তবে কিছু সাধারণ কম শুক্রাণু সংখ্যা লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে;
  • কম যৌন সংগম করা;
  • ইরেটাইল ডিসফাংশন;
  • অন্ডকোষ এরিয়াতে ব্যথা বা ফোলা;
  • অনেক পুরুষের মুখের বা শরীরের চুল কমে যাওয়া ক্রোমোসোমার অস্বাভাবিকতা তুলে ধরে;
  • অতিরিক্ত বর্যিপাত
  • সর্বোপরি যৌন ও প্রোস্টেট সমস্যার ইতিহাস

শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে সহায়ক খাদ্যগুলি:

ফলের মধ্যে যেমন-পেয়ারা, অ্যাভোক্যাডো, ব্লু বেরি, বেদাো, কলা ইত্যাদি, আবার শাক-সবজির মধ্যে পালংশাক, অ্যাসপারাগাস, বেলপেপার, মাছ, ডিম, ডার্ক চকোলেট, আখরোট ইত্যাদি খাদ্যগুলি শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে।

পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে-পরিশেষে:

আসলে একজন পুরুষদের বীর্যরসে শুক্রাণুর সংখ্যা প্রতি মিলিমিটারে প্রায় ১৬ মিলিয়নের কম হলে তা প্রজননে অক্ষমতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে সাধারণ ভাবে প্রতি মিলিমিটার বীর্যরসে ৪০-৩০০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকে। তবে সন্তান লাভ করতে চাইলে ২০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকলেই তা সম্ভব। আসলে প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আর এটি নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জীবনধারা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর। তবে পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে বলতে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন, স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমাতে পারলে প্রজনন ক্ষমতা ভালো থাকে।

আরও পড়ুন: ছোট মাছ খেলে যেসব উপকার পাওয়া যায়

যাইহোক আজকের পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে বিষয়ক আলোচনায় নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন একজন পুরুষের কোন বয়সে শুক্রাণুর ক্ষমতা বাড়ে আবার কোন বয়সে তা কমে। তবে এটাও ঠিক যে, ৫০ বা ৬০ বছর বয়সেও একজন পুরুষ সুস্থ্য সন্তানের জন্ম দিতে পারেন। আসলে লাইফস্টাইল বা জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করেও শুক্রাণুর পরিমাণ ও গুনগতমান বাড়ানো যেতে পারে। তাই আজকের আর্টিকেলে বর্ণিত পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে বিষয় সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকে তাহলে তা আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url