স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার
স্ট্রোকের ঝুঁকি হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছে নানা বয়সে। তাই স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকিটা অনেকটাই কমানো যেতে পারে।
স্ট্রোকে মৃত্যু সেটা একটা নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে সভ্যতার উৎকর্ষতায় বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষদের ৩০ বছর পেরোনোর আগেই স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের। সুতরাং এই স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার বিষয়ে জানতে নিচের লেখাগুলো পড়ুন:
পোস্ট সূচিপত্র: স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার (All the foods you can eat to prevent Stroke)
স্ট্রোক আসলে কীভাবে হয়
স্ট্রোক কয় ধরণের
স্ট্রোক হওয়ার প্রধান কারণ কি?
স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার
স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার-পরিশেষে
স্ট্রোক আসলে কীভাবে হয়:
মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায় এবং এর ফলে মস্তিস্কের কোষগুলো দ্রুত পরিমাণে অক্সিজেন ও পুষ্টি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে স্ট্রোক করে থাকে।
স্ট্রোক কয় ধরণের:
সাধারণত স্ট্রোক ২ ধরণের হয়ে থাকে, যথা-১) ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং ২) হেমোরেজিক স্ট্রোক। অর্থাৎ ইস্কেমিক স্ট্রোক ঘটে থাকে, যখন মানুষের মস্তিস্কের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাধে এবং তার ফলে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: লিভার সিরোসিস কেন হয়? লিভার সিরোসিস থেকে বাঁচার উপায়
তবে এই জমাট বাধার অন্যতম কারণ হলো হৃদরোগ। অপরদিকে হেমোরেজিক স্ট্রোক ঘটে, যখন মানুষের মস্তিস্কের রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তবে এটি সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য রক্তনালীর সমস্যার কারণে ঘটে থাকে।
স্ট্রোক হওয়ার প্রধান কারণ কি?
স্ট্রোক হওয়ার অন্যতম কারণগুলি হলো উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, নিয়মিত শরীর চর্চার অভাব, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি বিষয়গুলোকে দায়ী করা হয়ে থাকে।
স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার:
- শাকসবজি: অর্থাৎ পালং শাক, পুঁইশাক, লাউশাক, ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং প্রচুর ফাইবার। এ ছাড়াও ব্রুকলি, ফুলকপি ইত্যাদি ক্রুসিফেরাস সবজি, যা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখতে পারলে হৃদরোগের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে থাকে।
- মাছ: মাছে ওমেগা-৩ ও প্রোটিন থাকে, যা শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরলগুলো কমিয়ে হার্ট এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- সাইট্রাসজাতীয় ফল: সাধারণত যে সমস্ত ফলগুলোতে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ রয়েছে, যেমন-লেবু, কমলা, জাম্বুরা ইত্যাদি খেতে পারলে তা শরীরের ফ্রি র্যাডিকেল দূর করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: মাথার স্ক্যাল্পে সমস্যা, সমাধানে কি পদক্ষেপ নেয়া যায়
- আখরোট: শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও দেহের প্রদাহ কমাতে আখরোট খাওয়া যেতে পারে, কেননা আখরোটে ওগেমা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
- টক দই: টক দই শরীরের রক্তনালীর স্বাস্থ্য বজায়সহ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং পেটের সমস্যা কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। কারণ টক দইয়ে আছে ভিটামিন ডি, প্রোটিন এবং পটাশিয়ামের মত গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা।
- অ্যাভোকাডো: স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার এর মধ্যে অ্যাভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যেটি আমাদের শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে এবং সেইসঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- বাদাম ও বীজ: বাদাম, তিসির বীজ, চিয়া বীজে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফাইবারসহ নানা উপদান হৃদরোগের জন্য খুবই উপকারী।
- গ্রিন-টি: স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে গ্রিন-টি খাওয়া যেতে পারে। কারণ গ্রিন-টিতে ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান থাকায় তা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে থাকে।
স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার-পরিশেষে:
স্ট্রোক প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে সতেচনতা বৃদ্ধি। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাদ্য, তৈলাক্ত ও চর্বিযুক্ত খাদ্য, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন, অতিরিক্ত ধুমপান করা, অত্যধিক মানসিক চাপ, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস, অনিয়ন্ত্রিত ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি নানাবিধ কারণে স্ট্রোক হয়ে থাকে। তাই স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে তা হ্রাস করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: কাজু বাদাম যেভাবে খেলে মিলবে উপকারিতা
অর্থাৎ আজকের স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার বিষয়ক আলোচনায় শুধুমাত্র স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য যে সমস্ত খাদ্য সহায়ক তার বিবরণাদিই তুলে ধরা হয়েছে। আশাকরি আপনারা তা বুঝতে ও জানতে পেরেছেন। মূল কথা হলো, স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের লক্ষ্যে, সাধারণত আমরা যে সমস্ত খাদ্যগুলি গ্রহণ করি তার প্রতি মনোযোগ দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সবশেষে স্ট্রোক প্রতিরোধে খেতে পারেন যে সমস্ত খাবার বিষয়ে আপনার যদি কোন মন্তব্য বা পরামর্শ প্রদান করতে চান, তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন এবং সেইসঙ্গে উপরোক্ত বর্ণিত বিবরণে আপনার দীর্ঘক্ষণ উপস্থিতি ও অংশগ্রহণের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
___________________________________________________________________________________
বি.দ্র.: মূলত এই ব্লকে প্রদত্ত তথ্যগুলি শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞান এবং তথ্যের উদ্দেশ্যে প্রণীত, এটি কোন চিকিৎসা পরামর্শ নয়। তবে চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোন উদ্বেগের জন্য অবশ্যই একজন যোগ্যতাসম্পন্ন এবং স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url