নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে

শরীরের মধ্যে নানাবিধ সমস্যা তৈরি হলে সবথেকে বেশি সমস্যায় ভোগে নারীরা। তাই নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে তা জানাটা জরুরী।
মূলত আমাদের শরীরের যে কোন সমস্যা তৈরি হলে তা এক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অন্য অঙ্গ-প্রতঙ্গের মাধ্যমে সংকেত প্রকাশ করে থাকে। নারীদের নানাবিধ সমস্যার মধ্যে যেমন-কারও যদি কিডনিতে সমস্যা তৈরি হলে তার প্রথম লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পায় হাত-পা বা মুখে ফোলাভাবের মাধ্যমে। সুতরাং, নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে তা জানতে নিচের বর্ণনাটি পড়তে হবে।

পোস্ট সূচিপত্র: নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে (Signs to watch out for on women's hands and feet)
ভূমিকা
অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা বোধ করা
হাত-পা ফোলা ভাব
কিডনির সমস্যার লক্ষণগুলি নিম্নরূপ
ইউটিআই নারীদের সাধারণ সমস্যা
হাত-পা অবশ হয়ে যাওযার কারণ
ত্বকের রঙে পরিবর্তন
পেশীতে অস্বাভাবিক ঝাঁকুনি
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত
নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে-পরিশেষে

ভূমিকা:

আসলে নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে এইজন্য দরকার যে, অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা, হাতে-পাশে অবশ ভাব, ত্বকের রঙ পরিবর্তন, হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক ফোলাভাব অথবা ত্বকে কোনো অজানা পরিবর্তন দেখা দেয়া, মূত্রের রং পরিবর্তন, প্রস্রাবে ফেনা হওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বা খুব কম প্রস্রাব হওয়া, কারও কারও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত আসা ইত্যাদি।

আরও পড়ুন: শিশুর খাবারে বাড়তি লবণ-চিনি, হতে পারে যে সমস্যাগুলো

আর উপরোক্ত সমস্যাগুলি যখন বহিঃপ্রকাশ ঘটে তখনই এর সমাধানে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়। আসলে একজন নারী সংসারের সকল কাজ-কর্ম থেকে শুরু করে সন্তান প্রসবসহ সন্তানকে মাতৃস্নেহে মানুষ করার মতো কঠিন কাজগুলি করে থাকে। যার ফলে বেশির ভাগ নারীরাই এই ধরণের রোগ সম্পর্কে উদাসীনতার পরিচয় দেয়। সুতরাং নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে তা নিম্নে পর্যায়ক্রমে বর্ণিত হলো:

অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা বোধ করা:

আপনার শরীরে যদি ক্লান্তি বা অতিরিক্ত দুর্বলতা অনুভূত হয়ে থাকে, যা সাধারণ কাজকর্মকে বাধাগ্রস্ত করে তোলে তাহলে অবশ্যই সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন, কেননা এই ধরণের সমস্যাগুলি রক্তাল্পতা বা বিভিন্ন স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

হাত-পা ফোলা ভাব:

কোন আঘাতজনিত ছাড়া যদি হাতে বা পায়ে ফোলা ভাব দেখা দিয়ে থাকে অথবা মাঝে-মধ্যেই যদি তা এ ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়, তাহলে এর গভীরে কোন স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সময় ক্ষেপন না করে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করাটাই উত্তম।

কিডনির সমস্যার লক্ষণগুলি নিম্নরূপ:

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সঙ্গে প্রোটিন বের হলে তা কিডনির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার মূত্রের রং, পরিমাণ ও ধরণেও পরিবর্তন হয়ে থাকে, যেমন-প্রস্রাবে ফেনা হওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বা খুব কম প্রস্রাব হওয়া ইত্যাদি লক্ষণগুলি অগ্রিম হিসেবে দেখা দিতে পারে।

ইউটিআই নারীদের সাধারণ সমস্যা:

সাধারণত নারীদের মধ্যে ইউটিআই (ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন) খুবই সাধারণ। বারণ এতে বারবার প্রস্রাবে জ্বালা, ব্যথা বা কোন সংক্রমণ হতে পারে। তবে এই ধরনের ইউটিআই যদি বার বার হয়ে থাকে, তাহলে তা কিডনি বিকলের ঝুঁকি তৈরি করে থাকে।

হাত-পা অবশ হয়ে যাওযার কারণ:

ডায়াবেটিস: পেরিফেরাল স্নায়ু রোগের একটি সাধারণ কারণ। আর এর ফলে পায়ের পাতা অবশ হওয়ার লক্ষণ দেখা যেতে পারে, কারণ ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা ভুগলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।

আরও পড়ুন: পুরুষদের কোন বয়সে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে

নিউরালজিয়া: শরীরের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে তীব্র ব্যথা ও জ্বলুনির অনুভূতি দেখা দিয়ে থাকে। শরীরের যে কোন স্থানে হতে পারে এই রোগ। আবার সংক্রমণ এবং বয়সের কারণেও তা হতে পারে।

লাইম ডিজিজ: এটি পতঙ্গবাহিত ইনফ্লামেটরি অসুখ, যা খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই ধরনের রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো ক্লান্তি, জ্বর, পেশি ও জয়েন্টের ব্যথা, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

ত্বকের রঙে পরিবর্তন:

নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে এর মধ্যে ত্বকের রঙ বা অবস্থার পরিবর্তন। অর্থাৎ যেমন-ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, নীলচে ভাব আসা অথবা অস্বাভাবিক ফোলাভাব এবং ত্বকে কোন ঘা দেখা গেলে তা অবশ্যই কোন রোগের লক্ষণ।

পেশীতে অস্বাভাবিক ঝাঁকুনি:

অনেক সময় হাত ও পাশের পেশীতে অস্বাভাবিক রকমের ঝাঁকুনি বা কাঁপুনি দেখে গেলে বুঝতে হবে তা স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণ।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত:

আসলে যে কোন ধরনের লক্ষণগুলো যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় অথবা হঠাৎ করে দেখা যায়, তাহলে তা অবশ্যই কোন না কোন স্বাস্থ্যগত সমস্যার ইঙ্গিত, তাই অবহেলা বা উদাসীনতা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আবার চিকিৎসকের মতে, কিডনি রোগের শুরুতে এর লক্ষণগুলো খুবই হালকা হয় বা দেখা যায় না। তাই এক্ষেত্রে নিয়মিত স্বাক্ষ্য পরীক্ষা খুবই জরুরী। কারণ শরীরের যে কোন ধরণের অস্বাভাকিক লক্ষনের জন্য দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ।

নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে-পরিশেষে:

আসলে শরীরের কোন না লক্ষণের সাথে অবশ্যই শরীরের অন্য কোন সমস্যা নিহিত থাকে। তাই যে কোন লক্ষণ দীর্ঘমেয়াদি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করাটাই সঠিক ও যুক্তিযুক্ত। বিশেষ করে গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে নিয়মিত চেক-আপ বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, রক্ত ও প্রস্রাবের পরীক্ষা ইত্যাদি জরুরী। তাই আজকের আর্টিকেলে নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে বিষয়টি নিজেকে সচেতন হওয়ার জন্য খুবই জরুরী।

আরও পড়ুন: পায়ে ব্যথার সম্ভাব্য কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার কি হতে পারে?

যাইহোক বর্ণিত নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে বিষয়ক আলোচনাটি আশাকরি বুঝতে পেরেছেন এবং এতদ বিষয়ে যদি আপনাদের কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকে তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। সবশেষে নারীদের হাতে-পায়ে যে লক্ষণের জন্য সতর্ক হতে হবে বিষয়ক আপনার দীর্ঘক্ষণ উপস্থিতির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এবং সেইসঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url