রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো

শিক্ষানগরী হিসেবে খ্যাত রাজশাহী একসময় রেশম শিল্পের জন্য বিখ্যাত। ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরপুর রাজশাহী শহরে রয়েছে নানা বিনোদন স্পট ও ঐতিহ্যবাহী স্থানসমূহ। রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো তা জানতে আজকের আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
রাজশাহীর রেশম সিল্ক, আম সারা পৃথিবীতে অত্যন্ত সমাদৃত ও পরিচিত। আজকের আলোচনা থেকে আপনার জানতে পারবেন রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো। তো চলুন জেনে নিই, দর্শনীয় স্থানগুলোর পরিচিতি ও নামসমূহ।

পোস্ট সূচিপত্র: রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো (What are the tourist attractions in Rajshahi District?)

ভূমিকা
রাজশাহী শহরে অবস্থিত দর্শনীয় স্থানসমূহ
বাঘা উপজেলায় অবস্থিত দর্শনীয় স্থানসমূহ
গোদাগাড়ী উপজেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো-শেষ কথা

ভূমিকা

উত্তরবঙ্গ তথা বরেন্দ্র ভূমি অধ্যুষিত রাজশাহী অঞ্চলটি পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সমৃদ্ধ রাজশাহী জেলায় রয়েছে বিভিন্ন ভ্রমণ স্থান, ঐতিহাসিক নানা স্থাপনা, মসজিদ, মন্দির, জাদুঘরসহ নানা স্থাপনা। এ ছাড়াও রয়েছে হাঁসের মাংস দিয়ে কালাইয়ের রুটি বা বেগুন ভর্তা, কাটাখালী বাজরের গরুর মাংস বা হাঁসের মাংসের কালাভুনা, আমের সীজনে আম খাওয়া, সিএন্ডবি মোড়ের গরম রসগোল্লা, বাটার মোড়র বিখ্যাত জিলাপী সহ পদ্মার পাড়ে নিরিবিলি পরিবেশে ঘোরাঘুরি।

রাজশাহী শহরে অবস্থিত দর্শনীয় স্থানসমূহ:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়:
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো এর মধ্যে শিক্ষার বিদ্যাপীঠ হিসেবে খ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও সুবৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় তথা রাজশাহী প্রাণকেন্দ্র এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী দেশ-বিদেশ থেকে এখানে পড়তে আসেন উচ্চতর ডিগ্রীর আশায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরতে গেলে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত সাবাশ বাংলাদেশ ভাস্কর্যটি প্রশাসনিক ভবনের সামনেই অবস্থিত। এ ছাড়াও শহীদ হাবিবুর রহমান হলের সামনে অবস্থিত বিদ্যার্ঘ ভাস্কর্য,  সুবর্ণ জয়ন্তী টাওয়ার, বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ, ড. জোহার প্রতিকৃতি ও বিজয় সাগর ও শহীদ মিনার, শহীদ বুদ্ধিজীবি স্মৃতিফলক, শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা দেখতে পারেন।

আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রামের যত দর্শনীয় স্থান ও নামসমূহ

এ ছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই পেয়ে যাবেন প্যারিস রোড। এই রোডের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দু’পাশে বেষ্টিত গাছগুলি ফ্রান্সের প্যারিস থেকে আনার কারণে এই রোডটির নামকরণ হয়েছে প্যারিস রোড।
রাজশাহী কলেজ:
১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এবং রাজশাহী শহরের প্রাণ ভোমরা এই কলেজটি। রাজশাহী কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন তৎকালীন জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরগোবিন্দ সেন। দুবলহাটির রাজা হরলাল রায় বাহাদুরের আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে ১৮৭৩ সালে এই কলেজ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সুবিশাল পরিসরের এই কলেজটি স্যার হবিবুর রহমানের অধ্যক্ষকালে অত্যন্ত সুসজ্জিত, নান্দনিক, কালার কম্বিনেশন এবং সুপরিকল্পিত ভাবে সাজানো হয়েছে, যা কলেজে ঘোরাঘুরি করলেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ২৫ হাজার শিক্ষার্থী এবং ২০০ জন শিক্ষকের সমন্বয়ে ১৯টি বিষয়ে অনার্স কোর্স এবং ২১টি বিষয়ে মাষ্টার্স কোস পড়ানো হয়। এই কলেজের অন্যতম আকর্ষণীয় হচ্ছে প্রশাসনিক ভবন, সুবিশাল খেলার মাঠ, বিভিন্ন বিভাগ এবং সর্বোপরি গ্রন্থাগারটি। এই গ্রন্থাগারে ৭০ হাজার বইয়ের মধ্যে রয়েছে অনেক পুরনো বই, গেজেট, বিশ্বকোষ, পুঁথি, পান্ডুলিপি এবং বিভিন্ন সময়ের পত্র-পত্রিকাসমূহ। তাই রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো-র মধ্যে একটি হচ্ছে এই রাজশাহী কলেজ।
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর:
রাজশাহী শহরের সিপাইপাড়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরটি রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো-এর মধ্যে অন্যতম। ১৯১৬ সালে তৎকালীন গভর্নর লর্ড কারমাইকেল এর আদেশে প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য নির্মিত হয় এই জাদুঘরটি। এই জাদুঘরে রয়েছে বহু মূল্যবান কষ্টি পাথরে নির্মিত নানা রকমের ভাস্কর্য, খোদিত লিপি, মুদ্রা, মৃৎপাত্র, পোড়ামাটির ফলক, অস্ত্রশস্ত, আরবি ও ফারসি দলিলপত্র, চিত্র এবং বিভিন্ন বইপত্র ইত্যাদি।
হজরত শাহ মখদুম রূপস (র.)-এর মাজার:
চৌদ্দ শতকের একজন মুসলিম দরবেশ হচ্ছেন শাহ মখদুম রূপস (র.)। যিনি বরেন্দ্র অঞ্চলে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে আগমন করেন। মূলত মখদুম শব্দের অর্থ ধর্মীয় নেতা এবং রূপস অর্থ আচ্ছাদিত। অর্থাৎ শাহ মখদুম নিজ মুখমন্ডল এক টুকরো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতেন বলে তাঁকে রূপস বলা হতো। রাজশাহী শহরের দরগাপাড়া এলাকায় হজরত শাহ মখদুম রূপস (র.)-এর মাজার অবস্থিত। কথিত আছে যে তিনি কুমিরের পিঠে চড়ে নদী পার বা চলাচল করতেন। প্রতি বছর ১০ই মহররম শাহ মখদুমের দরগায় একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং এ দিনেই দরগায় সনাতন ধর্মাবল্বীদের অনেকেই আসেন বিভিন্ন মনোঃকামনা পূরণের আকাঙ্খা নিয়ে শাহ মখদুম বাবার কাছে।
শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা:
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো-র মধ্যে রাজশাহী চিড়িয়াখানা একটি। ব্রিটিশ আমলে রেসকোর্স ময়দান হিসেবে ব্যবহৃত স্থানটিও বর্তমানে রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। তৎকালীন মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামানের প্রচেষ্টায় ১৯৭২ সালে ৩৩ একর জমির নির্মিত এই চিড়িয়াখানা। বর্তমানে শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে নানারকম রাইডার, লেক, বিভিন্ন স্থানে রয়েছে নান্দনিক ষ্ট্যাচু, বাঘ, হরিণ, বানরসহ নানারকম পশুপাখী এবং নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটানো এবং ঘোরাঘুরির জন্য অত্যন্ত সুন্দর একটি স্থান। এখানে পিকনিক করার জন্য রয়েছে আলাদা পিকনিক স্পট।
জিয়া শিশু পার্ক:
রাজশাহী শহরে নওদাপাড়ার বড় বনগ্রামে অবস্থিত জিয়া শিশু পার্কটি মূলত শিশুদের জন্য একটি অত্যাধুনিক বিনোদন কেন্দ্র। পার্কে রয়েছে নাগরদোলা, দোলনা, ট্রেনসহ নানারকম রাইডের ব্যবস্থা। এছাড়াও পার্কের ভেতরে পিকনিক স্পট, ফুলের বাগানসহ গান-বাজনা করার ব্যবস্থাসমূহ।
টি-বাঁধ, পঞ্চবটি বাঁধ, পদ্মা গার্ডেন:
টি-বাঁধ : রাজশাহী শহরের শ্রীরামপুর এলাকায় এই ‘টি’ আকৃতির বাঁধটি নির্মিত। বিনোদনপ্রেমী মানুষজন এখানে পদ্মা নদীতে নৌকাযোগে ভ্রমণ করেন, কেউবা আবার পদ্মার পাড়ে বসে আড্ডায় মশগুল হয়ে যান।
পঞ্চবটি বাঁধ : রাজশাহী শহরের পঞ্চবটি এলাকায় অবস্থিত এই বাঁধে বিনোদন প্রেমীরা ঘুরতে আসেন, নদীতে চর থাকলে মানুষজন নদীর চরে রাশি রাশি বালুর মধ্যে মানুষজন হেঁটে বেড়ান, সময় কাটান নদীর ধারে আড্ডা-গল্প-গুজব করে।

আরও পড়ুন: কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর যাবতীয় তথ্য

পদ্মা গার্ডেন : রাজশাহী শহরের বড়কুঠি সংলগ্ন পদ্মা গার্ডেনটি বিনোদনের ছোট্ট একটি পরিসর। পদ্মা পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় এখানে প্রতিদিনই ঘুরতে আসেন অনেকেই বিশেষ করে নদীর মুক্ত বাতাস, নদীতে নৌকা করে ঘুরে বেড়ানো এবং পদ্মা গার্ডেনে ও এর আশেপাশে অবস্থিত বিভিন্ন খাবার দোকান থেকে ফুচকা, চটপটি, বাদাম, পেয়ারা, আমড়া, চালতার আচার সহ নানারকমের খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ করতে। 

বাঘা উপজেলায় অবস্থিত দর্শনীয় স্থানসমূহ:

বাঘা মসজিদ
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো বলতে বাঘা মসজিদটি অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী ও পুরাতন। ১৫২৩ খ্রিস্টাব্দে সুলতান নুসরত শাহ মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটিতে কালো পাথরের চারটি থামের উপর চারটি গম্বুজ দ্বারা নির্মিত। এর পশ্চিম দিকে অর্থাৎ পশ্চিম দেয়ালে ২টি বড় ও ১টি ছোট মেহরাব রয়েছে। মসজিদটির পূর্ব দিকে ৫টি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ২টি করে খিলান পথ রয়েছে এবং বাহির দেওয়ালে আরবি কারুকার্যখচিত ইট পাথর দ্বারা সুসজ্জিতভাবে নির্মিত এই মসজিদটি। মোগল আমলের একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হচ্ছে বাঘার এই মসজিদটি, যা ইট ও পোড়ামাটির টেরাকোটায় নির্মিত বিভিন্ন লতাপাতা, ফুল-ফল, বিভিন্ন অলংকৃত নকশা দ্বারা নির্মিত। উল্লেখ্য যে, বাঘা মসজিদ সংলগ্ন দিঘীতে শীত মৌসুমে প্রচুর অতিথি পাখির সমাগম ঘটে যা এখানে আগত পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
উৎসব পার্ক
রাজশাহী জেলার বাঘা দিঘীর পাড়ে ২০১৪ সালে ৮০ বিঘা জায়গার উপরে সম্পর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই পার্কটি স্থাপন করা হয়। এখানে শিশুদের জন্য রয়েছে ট্রেন, নাগরদোলা, ঘূর্ণি এবং দোলনাসহ ৮টি ভিন্নধর্মী রাইড। এ ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ভাস্কর্য, বসার বেঞ্চ, লেক এবং পিকনিক স্পট। পার্কের লেকে ভেসে বেড়ানোর জন্য রয়েছে প্যাডেল বোট। অত্যন্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে শহুরে কলকোলাহল মুক্ত পার্কটি ভ্রমণকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান।
বাগধানী শাহী মসজিদ
উনবিংশ শতাব্দীতে মুন্সি এনায়েতুল্লাহ এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। প্রায় ২০০ বছরের পুরনো এই শাহী মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট ও প্রস্থে ৪০ ফুট বিস্তৃত। মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি মেহরাব, তিনটি দরজা, দুইটি জানালা ও একটি মিনার আছে। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদের চার কোনায় নকশা খচিত ছাড়াও চারপাশের দেওয়ালের ভিতরে ও বাহিরে চিনামাটির মনোরম নকশাও রয়েছে। বর্তমানে এই মসজিদটিতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসে মানত-সদকা করে থাকেন এবং নামাজ আদায় করেন।

গোদাগাড়ী উপজেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ:

সাফিনা পার্ক
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো এর মধ্যে গোদাগাড়ী উপজেলার দিগরামে অবস্থিত সাফিনা পার্কটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৪০ বিঘা জমির অত্যন্ত পরিকল্পিত ও সুসজ্জিত ভাবে নির্মিত একটি অত্যাধুনিক বিনোদন কেন্দ্র। সাফিনা পার্কে রয়েছে শিশুদের বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, দোলনা, ট্রেনসহ নানারকম রাইডের ব্যবস্থা। এ ছাড়াও পর্যটকদের রাত্রীযাপনের জন্য পার্কের ভেতরেই রয়েছে ১৩টি অত্যাধুনিক কক্ষ যার মধ্যে ৩টি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এছাড়াও পার্কের ভেতরে ২টি পিকনিক স্পট, ফুলের বাগান, ভূতের ঘর, গাছ মানুষ এবং গান-বাজনার জন্য রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের মঞ্চ।
সরমংলা ইকোপার্ক
সরমংলা ইকোপার্কটি রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় অবস্থিত। ২০০৩ সালে গোদাগাড়ী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর উদ্যোগে ২৭ কিলোমিটার খাড়ি খনন করে তার দুই পার্শ্বে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা রোপণ করেন। এখানে বিভিন্ন দূর-দূরান্তে বেড়াতে আসা লোকজন বেঞ্চে বসে সবুজের সমাহার ও পদ্মা নদী থেকে পাইপের মধ্যে পানি আনার দৃশ্য উপভোগসহ প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন করতে পারেন।

পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান:

পুঠিয়া রাজবাড়ী
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো এর মধ্যে ইতিহাস ও ঐতিহ্যে খ্যাত স্থান পুঠিয়া উপজেলাটি। মহারানী হেমন্ত কুমারী দেবী তার শাশুড়ি মহারানি শরৎ কুমারী দেবীর সম্মানে ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে এই রাজবাড়িটি নির্মাণ করেন। সুন্দর কারুকার্য মন্ডিত প্রাসাদটি দোতলা এবং ভবনের সম্মুখে অর্থাৎ উত্তরদিকে খোলা প্রাঙ্গণের অপর পার্শ্বে রয়েছে দুইশত ফুট বিস্তৃত বিশাল পিরামিড আকৃতির নান্দনিক দোলমঞ্চ। উল্লেখ্য যে, পুঠিয়া রাজবাড়ীর আশে পাশে ৬ একর সম্বলিত ৬টি রাজদীঘি রয়েছে। এছাড়াও ৬টি মন্দিরসহ মঠ, বড় আহ্নিক মন্ডি, ছোট গোবিন্দ মন্দি, ছোট আহ্নিক মন্দির, পঞ্চরত্ন শিব মন্দির, রথবাগিচা বা হাওয়াখানা। প্রতিটি স্থাপনাই অপূর্ব সুন্দর সব পোড়ামাটির কারুকাজ দ্বারা নির্মিত। যা পরিদর্শনে সেই আমলের দৃশ্য বা ইতিহাস ও ঐতিহ্য খুব কাছে থেকে স্মরণ করা যায়।
অতিথি পাখির গ্রাম
রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নে অবস্থিত একটি বৃহৎ গ্রাম পচামাড়িয়া। এখানে সারা বছর বিভিন্ন প্রজাতির দেশি ও অতিথি পাখির সমাগম ঘটে থাকে। মূলত বারনই নদীর অববাহিকায় অবস্থিত খাল-বিলে বৎসরের অনেকটা সময় জলাবদ্ধতা থাকে। ফুল, ফল, ফসল ও প্রাকৃতিক গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ অত্যন্ত সুন্দর ও মনোরম শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের এই গ্রামটি পর্যটকদের অত্যন্ত আকর্ষণ করে থাকে।
বিড়ালদহ মাজার
রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার মেইন রাস্তা সংলগ্ন বিড়ালদহ মাজার। এখানে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে আসেন, মানত করেন এবং নামাজ আদায় করে থাকেন।

রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো-শেষ কথা:

আলোকসজ্জিত রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো এর মধ্যে আরও রয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পর্যটন মোটেল, রাজশাহী সুগার মিলস,  সুপ্রসিদ্ধ রেশম কারখানা, সিএন্ডবি মোড় হতে পদ্মা পাড়ের প্রশস্ত রাস্তা, আমচত্ত্বরের তিনটি আম, রুয়েট, ফল গবেষণা ও ধান গবেষণা অফিসসমূহ ইত্যাদি। মূলত রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো-এর মধ্যে উপরে বর্ণিত স্থানগুলি আশাকরি আপনাদের জানার/ভ্রমণের পরিসরকে সহায়তা করবে।

আরও পড়ুন: সিলেটে ঘোরার আকর্ষণীয় স্থান কোনগুলি?

আমাদের আয়োজনে রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো বিষয়ক আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি কোন মন্তব্য/জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টস বক্সে তা জানাতে পারেন। সেইসঙ্গে এতোক্ষণ রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো বিষয়ক আলোচনায় সম্পৃক্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url