চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে

রুক্ষ চুল আমাদের অনেকেরই নিকট একটা সমস্যা দাঁড়ায়। তাই আজকে এই চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে, তা নিম্নে বর্ণিত হলো।
আসলে চুল রুক্ষ হয়ে গেলে তা ভেঙে যায় আর এটা যদি বাড়তে থাকে তাহলে কি হবে সেটা আপনার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আর এর অন্যতম কারণ হলো চুলের সঠিক যত্ন না নেয়া। তাই আজকের আর্টিকেলে চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে বিষয়টি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

পোস্ট সূচিপত্র: চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে (How to remove roughness from Hair)
ভূমিকা
চুল রুক্ষ কেন হয়?
চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে
চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে-শেষ কথা

ভূমিকা:

একজন পরিপূর্ণ মানুষের সৌন্দর্যের মূল উৎসই হচ্ছে তার চুল। তবে অধিকাংশ জনই চুলের যত্ন নেয়া বাদে ত্বকের যত্নই বেশী করে থাকেন। আমরা জানি যে, একজন নারী বা পুরুষের ব্যক্তিত্ব বা সৌন্দর্য কিন্তু তার চুলের উপরই অনেকাংশে নির্ভরশীল। তবে সভ্যতার উৎকর্ষতা বলুন বা আধুনিকতার ছোঁয়া, যা-ই হোক না কেন, আসলে না জেনে বা বুঝে অথবা উদাসীনতার কারণেই হোক আমরা প্রকৃত চুলের যত্ন নিতে পারিনা। আবার যাদের অর্থ আছে, তারা ঘন ঘন পার্লারে গিয়ে থাকে চুলের যত্ন করে থাকে। আসলে কাজের প্রয়োজনে বাইরে গেলে আবহাওয়াজনিত কারণে মাথায় ময়লা ধুলোবালি-ময়লা, মাথা ঘামা ইত্যাদি হতেই পারে। আবার তাড়াতাড়ি চুল শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রাই ব্যবহার, শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যাওয়া এমন অনেক কারণে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। সেই কারণে চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে তা নিম্নের বর্ণনা থেকে জানতে পারবেন।

চুল রুক্ষ কেন হয়?

প্রকৃতপক্ষে চুল রুক্ষ হয় কেন বা কি কি কারণে চুল রুক্ষ হতে পারে সে বিষয়টি আগে জানা দরকার। যেমন-
পর্যাপ্ত আর্দ্রতার অভাবের কারণেই চুল রুক্ষ হতে পারে।
চুলের বাইরের যে স্তর থাকে তাকে কিউটিকল বলে। মূলত এই কিউটিকলই চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে। অর্থাৎ চুলে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে আর্দ্রতা না পায়, তাহলে এই কিউটিকল উন্মুক্ত হয়ে পড়ে, তখন চুল বাতাস থেকে আর্দ্রতা গ্রহণ করার সাথে সাথে অতিরিক্ত ময়েশ্চারও চুলে জমা হয়ে যায় এবং তার ফলে চুল বেশি ফুলে ওঠে এবং চুল রুক্ষ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: বর্ষায় যেভাবে ত্বক ভালো রাখবেন

আবার চুল রিবন্ডিং করা এবং চুলে রঙ বা কলপ করার কারণেও চুল ধীরে ধীরে মৃসণতা হারায় এবং রুক্ষ হয়ে যায়। আবার তাড়াতাড়ি চুল শুকানোর জন্য আমরা রো ড্রাই করে থাকি।

চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে:

চুল ঢেকে রাখতে হবে:
চুলকে রুক্ষতা থেকে বাঁচাতে বিশেষ করে রোদ বা ধুলোবালি থেকে বাঁচাতে ঢেকে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বাইরে গেলে স্কার্প বা মাথা ঢেকে রাখলে তা চুলের রুক্ষতা থেকে রক্ষা হবে।

হেয়ার প্যাক ব্যবহার:
সপ্তাহে অন্তত একবার চুলে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা ভাল। অর্থাৎ পেঁয়াজের রস, নারিকেল তেল, কাস্টর অয়েল, অ্যালোভেরা জেল, ভিটামিন-ই ক্যাপসুল এবং ডিমের কুসুম সবগুলো একত্রে মিশিয়ে একটি প্যাক করে মাথায় লাগাতে পারেন।

তেল মালিশ:
কথায় আছে তেলে-জ্বলে বাঙালি, আর তেল যেন চুলের প্রাণ। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১-২ বার এবং কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা আগে চুলে তেল লাগাতে হবে। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে, তাতে করে চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত হবে।

ডিম ও অলিভ ওয়েল মিশ্রিত প্যাক:
সাধারণত রুক্ষ চুলকে স্বাভাবিক করতে ডিম এবং অলিভ ওয়েল ভীষন উপকারী। অর্থাৎ ১-৪ কাপ অলিভ ওয়েলের মধ্যে একটি কাঁচা ডিম দিয়ে ভালোভাবে মিশ্রণ করে নিতে হবে। এরপর সেই মিশ্রণটি স্ক্যাল্পসহ সমস্ত চুলে লাগিয়ে অন্তত ৪০ মিনিট অপেক্ষা করার পর তা কন্ডিশনার শ্যাম্পু দ্বারা ধুয়ে ফেলতে হবে।

আরও পড়ুন: মুখে ব্রণ হয় কেন, ব্রণের সমস্যা সমাধানে কী করণীয়?

নারিকেল তেল ব্যবহার:
আমরা সকলেই জানি চুলের জন্য ভিটামিন ই খুবই কার্যকরী। তাই এক্ষেত্রে ১ ভাগ ভিটামিন ই তেলের সাথে চার ভাগ নারিকেল তেল মিশিয়ে বাতাস বিহীন বোতলে রেখে দিতে পারেন। এই তেলটি সপ্তাহে ১ বা ২ বার মাথার স্ক্যাল্পসহ সমস্ত চুলে ভালো করে ম্যাসাজ করে অন্ততপক্ষে ৪০ মিনিট পর তা কন্ডিশনার শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন।

দৈনন্দিন চুল আঁচড়ান:
নিয়মিত চুল আঁচড়ালে মস্তিক্সে রক্তের সঞ্চালন বাড়ে এটা আমরা অনেকেই জানি। চুলকে ভালো এবং রুক্ষতার হাত হতে রক্ষা করতে অবশ্যই মাথা আঁচড়াতে হবে। তবে গোসল করার পরপরই মাথা আঁচড়ানো একেবারেই ঠিক নয়। মাথা সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলেই তারপর চুল আঁচড়াতে হবে।

পর্যাপ্ত পানি পান:
চুল ভালো রাখতে হলে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। আসলে একজন সুস্থ্য মানুষের প্রতিদিন ২-৩ লিটার পানি পান করা উচিত। তাই চুলের যত্নে পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস:
সাধারণত অস্বাস্থ্যকর এবং অপুষ্টিজনিত খাদ্যের কারণে চুলের স্বাস্থ্যকে দুর্বল করে ফেলতে পারে। অর্থাৎ চুলের যত্নের ক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক পুষ্টি, ভিটামিন ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য সঠিক সময়ে গ্রহণ করতে হবে।

মধু ও দই মিশ্রণ:
একই পরিমাণ মধু ও দই একসাথে মিশ্রণ তৈরি করে তা চুলে ভালোভাবে লাগাতে হবে এবং ২০ হতে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার তা ধুয়ে ফেলতে হবে।

অ্যালোভেরার জেল ব্যবহার:
অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল বের করে তা চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে মাখতে হবে। অন্ততপক্ষে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর তা ধুয়ে ফেলতে হবে।

চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে-শেষ কথা:

চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে বলতে প্রকৃতপক্ষে চুলের রুক্ষতা দূর করতে দরকার প্রয়োজনীয় যত্ন। আবার ঘরোয়া উপায়ে বিভিন্ন প্যাক তৈরি করে ব্যবহার যেতে পারে। যেমন-কলা ও ডিম ১টি করে, ২ থেকে ৩ চামচ টক দই ও মধু এবং ১টি লেবুর রস সম্পূর্ণ একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে তা মাথায় গোটা মাথায় ভালোভাবে লাগিয়ে ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করার পর তা ধুয়ে ফেলতে হবে। তবে এই মিশ্রণটি ব্যবহারের আগে অবশ্যই চুলে তেল মেখে তারপর তৈরিকৃত প্যাকটি মাথার চুলে ব্যবহার করতে হবে।

আরও পড়ুন: যে তিনটা জিনিস আটায় মেশালে বাড়বে হজমশক্তি

আজকে চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে আলোচনার বিষয়গুলি আশাকরি বুঝতে পেরেছেন। চেষ্টা করুন, চুল যাতে প্রাকৃতিক ভাবে অর্থাৎ বাতাসে শুকানোর। শ্যাম্পু ক্রয় করার ক্ষেত্রে তা সালফেটমুক্ত কিনা দেখে নিন। যাইহোক, চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে বিষয়ে আপনার যদি কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকে, তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। পরিশেষে চুলের রুক্ষতা দূর করবেন যেভাবে বিষয়ক আলোচনায় উপনার দীর্ঘ উপস্থিতির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url