বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো

বিশ্বে এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দামি। তাই চলুন জেনে নিই বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো।
এইসব দামি খাবারগুলো এতটাই দামি যে, দাম শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। অবশ্য সবচেয়ে দামি খাবারে পরিণত হওয়ার বিশেষ কিছু কারণও রয়েছে যা আজকের বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো থেকে জানতে পারবো।

পোস্ট সূচিপত্র: বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো  (What are the most expensive and luxurious foods in the world?)
কোপি লুয়াক
সাদা ট্রাফলস
চিনের পাখির বাসার স্যুপ
ওয়াগু গরুর মাংস
আলবিনো ক্যাভিয়ার
মুজ পনির
মিয়াজাকি আম
কালো তরমুজ
মাতসুতাক মাশরুম
কালো মুরগি
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো-শেষ কথা

কোপি লুয়াক:

বিশ্বের সবচেয়ে দামি কফিগুলোর মধ্যে একটি হলো ইন্দোনেশিয়ার কোপি লুয়াক। যার প্রতি পাউন্ডের জন্য প্রদান করতে হয় ৬০০ ডলার। তবে আরব সাগরীয় এবং ইউরোপের দেশগুলোতে এই কফির দাম ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আরও পড়ুন: হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণ

মূলত এটি গোল্ডেন কফি বিন থেকে তৈরি করা হয়ে থাকে। মজার বিষয় হলো, এশিয়ান পাম সিভেট বিড়াল (এক ধরণের ছোট বিড়াল, যা এশিয়ার কিছু অঞ্চলে বাস করে) এর মল থেকেই সংগ্রহ করা হয়। আসলে এই বিনগুলো এশিয়ান পাম সিভেট বিড়ালকে খাওয়ানোর ফলে তা পাকস্থলীর এসিডে জারিত হয়ে মলের সঙ্গে বেরিয়ে আসে এই কফি বিন। আর তা থেকেই তৈরি হয় কোফি লুয়াক বা লুয়াক কফি।

সাদা ট্রাফলস:

বিশ্বের আরেকটি বহুমূল্য খাবার হলো ইতালির সাদা ট্রাফল। অর্থাৎ সাদা ট্রাফল হলো এক ধরণের ভূগর্ভস্থ ছত্রাক এবং এর ধরণের বিরল প্রজাতির তীব্র সুগন্ধযুক্ত মাশরুম। মূলত এটি অমসৃণ ও অ-সমতল এবং অনেকটা আলুর মতো দেখতে। এর চওড়া পাতা এবং ক্যালক্যারিয়াস সমৃদ্ধ বন্য পরিবেশে বিশেষ করে বসন্তকাল ও বর্ষাকালে এই ধরণের মাশরুম জন্মায়। তবে এটি মাটির নীচে হয় বলে তা অনুসন্ধানে পোষা কুকুর বা শুকর ব্যবহার করা হয়। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রতি গ্রামের দাম পড়ে ২ হাজার টাকা।

চিনের পাখির বাসার স্যুপ:

সুইফটলেট এক ধরণের পাখি, যারা লালা বা থুথু দিয়ে বাসা তৈরি করে। এই পাখির বাসা থেকেই বিশেষ এক ব্যতিক্রমী একটি স্যুপ তৈরি হয়। যা বার্ডস নেস্ট স্যুপ নামে পরিচিত। এই স্যুপে অতি উচ্চমাত্রার প্রোটিন ঔষধি গুণ থাকায় এর এক বাটির স্যুপের দাম ১০ হাজার ডলার। জনপ্রিয় এই স্যুপটি তিনটি ভিন্ন রঙে পরিবেশন করা হয়, লাল, হলুদ ও সাদা। এই স্যুপটি সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম এবং মিয়ানমারে খুবই জনপ্রিয়।

ওয়াগু গরুর মাংস:

জাপানে এই ওয়াগু গরুর মাংস `ওয়াগু বিফ’ নামে সারাবিশ্বে পরিচিত। অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো-র মধ্যে এটি একটি ব্যয়বহুল খাদ্য। এই কোবে বিফ-এর প্রতি কেজির মূল্য ৬৪০ ডলার। এই গরুর মাংসের প্রতি পরতে পরতে রয়েছে চর্বি, যার কারণে এটি খেতেও অত্যন্ত সুস্বাদু। আসলে এই ধরণের গরু প্রতিপালনে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। এই গরু লালন পালন করতে মানতে হয় অনেক নিয়মকানুন। বিশেষ করে বাছুর অবস্থা থেকেই এদেরকে বিশেষ ধরনের খাবার খাওয়ানো হয়ে থাকে।

আলবিনো ক্যাভিয়ার:

বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো-এর মধ্যে একটি হলো আলবিনো ক্যাভিয়ার। বিশ্বের অত্যন্ত সুস্বাদু খাবারের মধ্যে এটি অন্যতম।

আরও পড়ুন: ইনডোর প্ল্যান্ট দিয়ে ঘর সাজানো

বেলুগা স্টার্জেন মাছটি শুধুমাত্র কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণ সাগরে পাওয়া যায়। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ক্যাভিয়ার হলো আলমাস, যা বিপন্ন প্রায় ইরানি আলবিনো বেলুগা স্টার্জেন মাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। গ্রিনেজ বুকসের রেকর্ড অনুায়ী এক কেজি আলবিনো ক্যাভিয়ারের মূল্য ৩৪ হাজার ডলার পর্যন্ত উঠেছি।

মুজ পনির:

দুগ্ধজাত সামগ্রীর মধ্যে পনিরের চাহিদা বরাবরই বেশি। অর্থাৎ সুইডেনে এক ধরণের হরিণের দুধ থেকে তৈরি মুজ পনিরটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পনির। অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো-এর মধ্যে শুধুমাত্র এক কেজি মুজ পনিরের মূল্য প্রায় ১০০০ হাজার মার্কিন ডলার।

মিয়াজাকি আম:

বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো-এর মধ্যে জাপানের মিয়াজাকি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। মূলত বেগুনি রঙের এই আমটি সূর্যের ডিম হিসেবে সমধিক পরিচিত। সাধারণত জাপানে সম্মানিত কোন ব্যক্তিকে উপহার হিসেবে এই আম প্রদান করা হয়ে থাকে।

কালো তরমুজ:

বিশ্বে প্রায় ১২০০ প্রজাতির তরমুজ রয়েছে। তবে এদের মধ্যে বিশ্বে সবচেয়ে দামি তরমুজ হলো জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে জন্মে এই কালো তরমুজ। জাপানে এই তরমুজ বিক্রি হয় নিলামে। তবে ঐতিহ্যগতভাবে জাপানিদের কারো বিয়ে হলে তাতে মূল্যবান উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়ে থাকে এই কালো তরমুজ।

মাতসুতাক মাশরুম:

জাপানের তাম্বা অঞ্চলে জন্মানো এক ধরনের মাশরুম হচ্ছে মাতসুতাক। অর্থাৎ এই মাতসুতাক মাশরুম হলো বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মাশরুমগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি সাধারণত শরৎকালে অর্থাৎ বছরে মাত্র একবার কাটা হয়। বিশেষ মিষ্টি এবং মশলাদার স্বাদের জন্য এই মাশরুমগুলো বিখ্যাত।

কালো মুরগি:

ইন্দোনেশিয়ায় এক ধরণের মুরগি পাওয়া যায়, যার নাম আয়াম সিমানি কালো মুরগি। যদিও ইন্দোনেশিয়ায় এই মুরগিটি মোটামুটি সস্তা এবং সচরাচর হলেও অন্যান্য দেশে কিন্তু এই মুগরি বিক্রিয় হয় হাজার হাজার ডলারে। এই মুরগির বৈশিষ্ট্য হলো এর পালক, মাংস ও জিহ্বা সবকিছুই কালো।

বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো-শেষ কথা:

আজকের আলোচনায় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো তা বর্ণিত হয়েছে, আশাকরি এগুলা জানা থাকলে আপনাদের অনেক উপকারে লাগবে। উপরে বর্ণিত আরও অন্যান্য ব্যয়বহুল খাদ্য সামগ্রী আছে, যা সময়াভাবে এখানে বর্ণনা করা সম্ভব হয়নি। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, যেমন-জাপানের নীল টুনা মাছ, ইউবারি কিং মেলন ফল, মাতসুবা নামক কাঁকড়া ইত্যাদি। সাধ ও সাধ্যের বাইরে এই খাবারগুলো দেখলে বা শুনলে অবাকই হতে হয়, কিন্তু ধনী মানুষদের নিকট এই মুল্য নিতান্তই একটি সংখ্যা মাত্র।

আরও পড়ুন: স্মার্টফোন স্লো হয়ে গেছে, কিভাবে ফাস্ট করা যায়

যাইহোক বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো বিষয়ক আলোচনাটি যদি আপনাদের উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই তা অন্যদের শেয়ার করতে পারেন। এ ছাড়াও আজকের আলোচ্য বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো-র বিষয়ে যদি আপনার কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকে, তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। পরিশেষে দীর্ঘক্ষণ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দামি খাবার কোনগুলো বিষয়ের আলোচনায় আপনার উপস্থিতির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Mithu Sarker
Mithu Sarker
আমি মিঠু সরকার, দুই বছর ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। ব্লগ পোস্ট, ওয়েব কনটেন্ট ও মার্কেটিং রাইটিংয়ে আমার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে অনলাইন সফলতা গড়াই আমার লক্ষ্য।