চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল

ভোজন রসিক মানুষদের জন্য যে কোন নতুন খাবারই বাড়তি চমক। সেই কারণে আজকে চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল এর সম্পর্কে জানতে হবে।
বর্তমানে বাঁশ কোড়ল পাহাড়িদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের নিকট অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাদ্য হয়ে উঠছে। অর্থাৎ চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল বিষয়ক আলোচনায় জানতে পারবেন, বাঁশ কোড়ল এর নামকরণ বা কেন বলা হয়, বাঁশ কোড়ল কখন ও কোথায় পাওয়া যায়, কিভাবে তা খাওয়া হয়, কোন মৌসুমে তা পাওয়া যায় ইত্যাদি বিষয়ে।

পোস্ট সূচিপত্র: চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল (Bamboo shoots, Chittagong's favorite hill food)
বাঁশ কোড়ল কি?
খাওয়ারযোগ্য বাঁশ কোড়লের নামসমূহ
বাঁশ কোড়ল কিভাবে খাওয়া যায়
বাঁশ কোড়লের সময়কাল
বাঁশ কোড়লের উপকারিতাসমূহ
চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল-শেষ কথা

বাঁশ কোড়ল কি?

মূলত বাঁশ কোড়ল হলো বাঁশের গোড়ায় কচি যে নরম অংশটি থাকে, তাকেই বাঁশ কোড়ল বলা হয়। সাধারণত, মাটি থেকে ৪-৫ ইঞ্চি গজিয়ে ওঠা কচি বাঁশই হলো বাঁশ কোড়ল। অর্থাৎ বাঁশে পরিণত হওয়ার আগে স্থানীয় জনগোষ্ঠীরা এই বাঁশ গাছের গোড়া থেকে কচি অংশ সংগ্রহ করে তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে থাকেন।

আরও পড়ুন: মাথার স্ক্যাল্পে সমস্যা, সমাধানে কি পদক্ষেপ নেয়া যায়

তবে এই বাঁশ কোড়লকে চাকমা ভাষায় বলে বাচ্ছুরি, মারমা ভাষায় তা মেহ্যাং আবার ত্রিপুরাদের নিকট তা মেওয়া এবং তঞ্চঙ্গা ভাষায় বলে বাচ্ছুই।

খাওয়ারযোগ্য বাঁশ কোড়লের নামসমূহ:

মূলত যে কোন বাঁশ কোড়লই খাওয়ার যোগ্য হয়না। আবার একেক বাঁশ কোড়লের স্বাদ একেক রকমের হয়ে থাকে। তবে যে সকল বাঁশ কোড়লগুলো খাওয়া যায়, তার মধ্যে অন্যতম হলো-মুলি বাঁশ, ডলু বাঁশ, ফারুয়া বাঁশ, মিতিঙ্গ্যা বাঁশ, বাজ্জে বাঁশ, কালিছুরি বাঁশসহ বেশ কয়েক প্রজাতির বাঁশ কোড়ল বান্দরবানে পাওয়া যায়।

কিভাবে বাঁশ কোড়ল খাওয়া যায়:

সাধারণত পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাঁশ কোড়ল খাওয়ার ক্ষেত্রে তারা অনেক প্রকারের রেসিপি ব্যবহার করে থাকেন। 

আরও পড়ুন: শুটকি মাছ শরীরের জন্য উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

যেমন-সবজি হিসেবে তরকারি বা ভাজি, শুটকি মাছ দিয়েও চমৎকার বাঁশ কোড়ল রান্না করা যায়। এ ছাড়াও স্যুপ, মুন্ডি, মাংস দিয়ে রান্না অথবা ভাজি করে খাওয়া যায় এই বাঁশ কোড়ল।

বাঁশ কোড়লের সময়কাল:

সাধারণত বাঁশ কোড়ল উৎপাদনের সময়কাল হলো মে মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। অর্থাৎ এ সময়ে বান্দরবানের বিভিন্ন বাজারে বাঁশ কোড়ল বিক্রি করে স্থানীয় অধিবাসীরা।

বাঁশ কোড়লের উপকারিতাসমূহ:

বাঁশ কোড়লের অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন-এটি হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে প্রচুর, পেট পরিস্কার রাখতে সহায়তা করে, রক্তে কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা সর্বোপরি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই বাঁশ কোড়ল।

চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল-শেষ কথা:

মূলত বাঁশ কোড়ল পাহাড়ি রন্ধন প্রণালীর অন্যতম উপাদান হলেও যা সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয় খাদ্য হিসেবে পরিচিত লাভ করছে, কারণ এটি যথাযথভাবে সিদ্ধ এবং সঠিক মশলা মিশিয়ে রান্না করলে এর স্বাদে আসে এক অনন্য পাহাড়ি ঘ্রাণ। আসলে চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল সংরক্ষণও করা যায়।

আরও পড়ুন: সকালের নাস্তা না করলে শরীরের যে ক্ষতি হতে পারে

অর্থাৎ ফ্রিজে ৫-৭ দিন পর্যন্ত খোসাসহ রাখা যায় আবার খোসা ছাড়িযে হালকা সিদ্ধ করেও তা ডিপ ফ্রিজে অন্তত ১৫-২০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায় তবে সংরক্ষণ করার সময় অবশ্যই এটি ভালোভাবে মুছে বা শুকিয়ে নিয়ে রাখতে হবে, যাতে কোন প্রকার পানি না থাকে। সুতরাং আজকের চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল বিষয়ক আলোচনাটি আশাকরি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক মুক্ত, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই বাঁশ কোড়ল। যাইহোক, চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল বিষয়ক আলোচনায় যদি কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। পরিশেষে চট্টগ্রামের প্রিয় পাহাড়ী খাবার বাঁশ কোড়ল সম্পর্কিত আলোচনায় আপনার দীর্ঘক্ষণ সম্পৃক্ততার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এবং সেইসঙ্গে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Mithu Sarker
Mithu Sarker
আমি মিঠু সরকার, দুই বছর ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। ব্লগ পোস্ট, ওয়েব কনটেন্ট ও মার্কেটিং রাইটিংয়ে আমার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে অনলাইন সফলতা গড়াই আমার লক্ষ্য।