কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন? কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন

আসলে কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন? হয়ত নাম শুনেছেন, কিন্তু কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন। এ ছাড়াও বিশ্বের কয়েকটি পর্বতশৃঙ্গের নাম ও উচ্চতা সহ ‍বিভিন্ন বিষয়ে জানতে নিচের লেখাটি পড়ুন।
কাঞ্চনজঙ্ঘা-সম্পর্কে-আপনি-কতটুকু-জানেন-কাঞ্চনজঙ্ঘা-সম্পর্কে-বিস্ময়কর-কিছু-তথ্য-জেনে-নিন
তবে এই পর্বতমালার বিভিন্ন তথ্যগুলি সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। তাই আজকে এই কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর তথ্যাবলী জানতে নিজের লেখাটি পড়ুন।

পেজ সূচিপত্রঃ কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন? কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন (How much do you know about Kanchenjunga? Learn some amazing facts about Kanchenjunga)
কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন?
কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন
বিশ্বের কয়েকটি পর্বতশৃঙ্গের নাম ও উচ্চতা
কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন? কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন-পরিশেষে

কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন?

কাঞ্চনজঙ্ঘা ১৯৫৫ সালের ২৫ মে দুইজন ব্রিটিশ পর্বতারোহী জোয়ে ব্রাউন এবং জর্জ ব্যান্ড কাঞ্চনজঙ্ঘার শিখরে আরোহণ করেন। আরোহণকালে এই দলের সদস্য ছিলেন জন এঞ্জেলো জেকসন এবং টম মেকিনন। যদিও অনেকেই মনে করেন যে, এটি একটি একক শৃঙ্গ। কিন্তু কাঞ্চনজঙ্ঘা মূলত গঠিত হয়েছে ৫টি শৃঙ্গের সমন্বয়ে। যার কারনে এর নামকরণ হয়েছে ‘তুষারের পাঁচটি রত্ন’। তবে বর্তমানে এটি বর্তমানে বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। এই পর্বতমালাটি নেপালের কোশি প্রদেশ ও ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তে অর্থাৎ পূর্ব হিমালয়ে অবস্থিত।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বের ১৯৩টি দেশের জাতীয় ফুলের নাম ও তালিকা - বিশ্বে কতগুলো দেশ আছে

এর পশ্চিমে রয়েছে তামুর নদী, উত্তরে লোনাক নদী এবং জংসাল লা আর পূর্বদিকে রয়েছে তিস্তা নদী দ্বারা আবদ্ধ। বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া থেকে এই কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করা যায়। তবে একটি বিষয় জেনে রাখা ভালো, সারা বছরই কিন্তু কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা পাওয়া যায়না। সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বিশেষ করে আকাশ মেঘমুক্ত থাকলেই এর দেখা পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, কাঞ্চনজঙ্ঘা প্রায় ৪৪৫ মিলিয়ন থেকে ১ বিলিয়ন বছরের পুরনো। এর পর্বত ও হিমাবাহগুলি গ্রীষ্মকালীন বর্ষাকালে ভারী তুষারপাত ঘটে থাকে এবং শীতকালে হালকা তুষারপাতা হয়। মূলত কাঞ্চনজঙ্ঘার সম্মিলিত চূড়াগুলি ৪টি প্রধান শৈলশিরা দ্বারা তার পার্শ্বের শৃঙ্গগুলির সাথে সংযুক্ত। অর্থাৎ চারটি হিমবাহ প্রবাহিত হয়, যেমন-জেমু তা উত্তর-পূর্ব দিকে, তালুং তা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে, ইয়ালুং তা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা তা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে।

তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখাঃ

মূলত তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরে অবস্থিত ডাকবাংলো থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। এই ডাকবাংলার বারান্দা থেকেই কাঞ্চনঙ্ঘা দেখা যায়। এ ছাড়াও তেঁতুলিয়া উপজেলা বাংলাবান্ধা, বাইপাস, ভজনপুর করতোয়া সেতু এবং তিতরগড় থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখাঃ

পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ ফাঁকা স্থানে দাড়ালে বা খুব ভোরে মেঘ ও কুয়াশামুক্ত নীল আকাশ জুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ মনোরম দৃশ্যা, যা খালি চোখেই দেখা যায়। তবে পঞ্চগড় জেলার করতোয়া সেতুতে যদি আপনি দাঁড়ান অথবা পঞ্চগড় শহরের যে কোন উঁচু দালানে দাঁড়িয়েও উত্তরের মেঘমুক্ত আকাশে দেখতে পাওয়া যায় কাঞ্চনঙ্ঘাকে।

কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিনঃ

কাঞ্চনজঙ্ঘার নামের অর্থ: অর্থাৎ কাঞ্চনজঙ্ঘা শব্দটি মূলত তিব্বতি শব্দ কাং-চেন-ডজো-নগা শব্দগুলির সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে, যার মূল অর্থ দাঁড়ায় ‘তুষারের পাঁচটি ধন’। সনাতন ধর্মানুযায়ী এই ৫টি শৃঙ্গকে ঈশ্বরের ৫টি ভান্ডার হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়-সোনা, রূপা, রত্ন, শস্য এবং পবিত্র গ্রন্থ।

পবিত্রতার ধারণাঃ

সিকিমের লেপচা সম্প্রদায়ের নিকট কাঞ্চনজঙ্ঘা খুবই পবিত্র। তারা মনে করেন যে, এই পর্বতশৃঙ্গের একেবারেই চূড়ায় যাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে সিকিম এবং দার্জিলিংয়ের স্থানীয় অধিবাসীরা কাঞ্চনজঙ্ঘাকে অত্যন্ত পবিত্র মনে করে পূজা করে থাকেন। অর্থাৎ এই পর্বতশৃঙ্গ তাদের নিকট অত্যন্ত পবিত্র এবং আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য বহন করে। একটি পুরনো কাহিনী অনুযায়ী, সিকিমের রাজপরিবার একসময় এই পর্বতের আত্মার সঙ্গে প্রতিশ্রুতি করেছিল যে, কেউ কখনোই এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গে বা চূড়ায় পা দেবে না। আবার লিম্বু ভাষায় কাঞ্চনজঙ্ঘাকে ‘সেওলুংমা’ বলে। যার অর্থ দাঁড়ায় পর্বতকে আমরা শ্রদ্ধা করি।

পৃথিবীর সর্বোচ চূড়া হিসেবে ভুল ধারণাঃ

কাঞ্চনজঙ্ঘাকে ১৮৪২ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর সর্বোচ্চ চুড়া হিসেবে মনে করা হতো, কিন্তু ১৮৪৯ খ্রিব্দাদে একটি জরিপ করে দেখা যায় যে, মাউন্ট এভারেস্টই পৃথিবীর সর্বোত্তম উচ্চতর পর্বতশৃঙ্গ। অর্থাৎ বিগত সময়গুলিতে মানুষের মনে যে ভ্রান্ত থারণা ছিল, আস্তে আস্তে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় তা  পরিস্কার হচ্ছে। 

কাঞ্চনজঙ্ঘাকে অবলোকনের দৃশ্যাবলীঃ

সাধারণত মেঘাচ্চন্ন এবং কুয়াশা থাকলে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখা যায় না। তাই এই পর্বতশৃঙ্গকে দেখতে হলে আকাশ মেঘমুক্ত এবং কুয়াশামুক্ত থাকতে হবে। তবে ভোরের আলোয় এই পর্বতশৃঙ্গকে দেখতে পোড়া মাটির মতো মনে হয় এবং বেলা বাড়ার সাথে সাথে আবার এটি সাদা রঙ ধারণ করে।

আরও পড়ুন: বিশ্বের এই ১০ স্থান ভ্রমণ পিপাসুদের নিকট আকর্ষণীয়

রহস্যময় এবং অজানা কিছু তথ্যঃ

মূলত কাঞ্চনজঙ্ঘা এমন একটি পর্বতশৃঙ্ঘ, যেখানে আরোহলের হার এবং মৃত্যুর হার একই। অর্থাৎ রহস্যময় এই পর্বতশঙ্গে আরোহণ করতে গিয়ে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে, যাদের দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়নি। যার কারণে এই পর্বতমালার রহস্যময়তা বাড়িয়ে দিয়েছে। উল্লেখ্য যে, কাঞ্চজঙ্ঘা পর্বতমালাটি আট-হাজারী পর্বতমালার মধ্যে অন্যতম।

কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতাঃ

আসলে কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতা ৮,৫৮৬ মিটার বা ২৮,১৬৯ ফুট। তবে মাউন্ট এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গের উচ্চতা ৮,৮৪৬.৮৬ মিটার এবং কেটু পর্বতশৃঙ্গের উচ্চতা হলো ৮৬১১ মিটার। আর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্ক হলো তাজিংডং তবে উইকিপিডিয়া অনুসারে সাকাফং পর্বতমালা হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে উচ্চতর পর্বতমালা, যার উচ্চতা ৩,৪৬৫ ফুট বা ১,০৫৬ মিটার। ভৌগলিক দিক থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারত ও নেপালের মধ্যে অবস্থিত। বলাবাহুল্য যে, কাঞ্চনজঙ্ঘার আশেপাশে প্রায় সাত হাজার মিটারের উচ্চতা সম্পন্ন ১৬টি চূড়া রয়েছে। যার উত্তরে রয়েছে লহোনাক চু, গোমা চু ও জং সাল লা এবং পূর্বে রয়েছে তিস্তা নদী দ্বারা সীমাবদ্ধ।

কাঞ্চনজঙ্ঘায় রাক্ষস বিষয়ক ধারণাঃ

স্থানীয় অধিবাসীদের লোককথা অনুসারে, মূলত কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং এর আশেপাশের এলাকাটি কাঞ্চনজঙ্ঘা রাক্ষস নামে এক ধরণের ইয়েতি বা রাক্ষসের আবাসস্থল আছে বলে, মনে করা হয়, যারা দ্বিপদ বিশিষ্ট প্রাণী।

বিশ্বের কয়েকটি পর্বতশৃঙ্গের নাম ও উচ্চতাঃ

তবে জেনে নিন, বিশ্বের কয়েকটি উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গের নাম ও উচ্চতা, যেমন-মাউন্ট এভারেস্ট (উচ্চতা-৮,৮৪৮.৮৬মিটার), কেটু (৮,৬১১ মিটার), কাঞ্চনজঙ্ঘা (৮,৫৮৬ মিটার), লোটসে (৮,৫১৬ মিটার), মাকালু (৮,৪৮৫ মিটার), ধৌলাগিরি (৮,১৬৭ মিটার) এবং মানাসলু (৬,১৬৩ মিটার)।

কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন? কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন-পরিশেষেঃ

মূলত কাঞ্চনজঙ্ঘার উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বিস্তৃত ৪টি শৈলশিরা রয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৪টিই হিমবাহ। সুতরাং আজকের কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন? এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন বিষয়ক আলোচনাটি নিশ্চয়ই আপনার অজানা জ্ঞানকে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে। সর্বোপরি উপরোক্ত আলোচনাগুলি যদি আপনার মনপুতঃ হয় তাহরে অবশ্যই তা অন্যদের শেয়ার করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ কানে যে সমস্যাগুলো অল্প বয়সে হতে পারে - সমাধান লুকিয়ে আছে এইসব খাবারে

আসলে কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন? অথবা কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন বিষয়ক আলোচনাতে আপনার যদি কোন মন্তব্য/পরামর্শ থাকলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আর আজকের কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন? এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন- বিষয়টিতে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান ও সম্পৃক্ততার কারণে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Mithu Sarker
Mithu Sarker
আমি মিঠু সরকার, দুই বছর ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। ব্লগ পোস্ট, ওয়েব কনটেন্ট ও মার্কেটিং রাইটিংয়ে আমার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে অনলাইন সফলতা গড়াই আমার লক্ষ্য।